বসন্তের শুরুতে অসংখ্য ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন কিংবদন্তি অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি। ২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি মৃত্যু হয় শক্তিমান এই অভিনেতার। হুমায়ুন ফরীদির জীবদ্দশায় অসংখ্য সিনেমায় অভিনয় করেছেন। পাশাপাশি নাটকেও অভিনয় করেছেন। নিজের জীবনে অসংখ্যবার বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গায় দিয়েছেন ইন্টারভিউ। তিনি যেমন অভিনেতা ছিলেন ঠিক তেমন ছিলো তার জীবন নিয়ে বলে যাওয়া বিভিন্ন উক্তি।

হুমায়ুন ফরীদির কিছু উক্তি তুলে ধরা হলো-

১.

এক সমুদ্র ভালোবাসার পরেও যার অন্যের প্রতি থাকে ঝোঁক, সে আমার না হোক

২. কেন প্রেমে পড়লাম, কেন ভালোবাসলাম এর কারণ যদি তুমি খুঁজতে যাও, দেখবে তুমি কিছুই খুঁজে পাচ্ছো না। অন্ধকার ঘরে তুমি কালো বিড়ালকে খুঁজছো– কিন্তু বিড়ালটি সেই ঘরে নেই, ভালোবাসাটি এমন।

৩.প্রেমের আর একটা দিক হচ্ছে না বুঝা, আপনি কেন প্রেমে পড়েছেন? সেইটার মানে যদি খুঁজতে যান তাহলে অন্ধকার ঘরে কালো বিড়াল খোঁজার মতোই সমান।

৪. ভালোবাসা এমন এক বদ অভ্যাস, যেটার কারণে মানুষ এক মুহূর্ত আনন্দ পাবার জন্যে– সারা জীবন কষ্ট সইতে দ্বিধা বোধ করে না।

৫.তুমি বলেছিলে মানুষ বদলায় তাই তুমি বদলে গেলে কিন্তু আমি বদলায় নি তবে আমি কি মানুষ নই?

৬. কাউকে ভালবাসলে এক বুক সমুদ্র নিয়ে ভালবাসতে হবে

৭.কাউকে ভালোবাসার অনেক পথ আছে, কিন্তু তাকে ভোলার কোন পথ নেই!

৮.কাউকে এতটাও ভালোবাসো না, যতটা ভালোবাসলে মানুষটা তোমাকে ছেড়ে চলে গেলে, তুমি নিঃস্ব ও অসহায় হয়ে যাবে! বরং ভালোবাসা হোক গিভ এন্ড টেক পলিসি। তুমি যতটুকু দেবে ততটুকুই পাবে। এর বেশি ভালোবাসা দিলে তুমি পাবে অবহেলা আর অপমান

৯.প্রথম প্রেম সত্যি হয়, তবে সেটা ভুল মানুষের সাথে, ভুল সময়ে হয়।

১০. আমি যাকে আঁকড়ে ধরতে চেয়েছি, সে আমাকে ফেলে গেছে। আমাদের জীবনেও প্রায়ই এমনটা হয়। যাদেরকে আমরা একান্তই খুব কাছের মানুষের মত প্রাধান্য দেই। নিয়তির দোষে তাদের সাথেই আমাদের বেশি ছাড়াছাড়ি হয়।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সুন্দরবন রক্ষায় রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিলসহ সাত দফা দাবি

সুন্দরবন রক্ষায় বাগেরহাটের রামপালে অবস্থিত ‘বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী বিদ্যুৎকেন্দ্র’ (রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র) বাতিলসহ সাত দফা দাবি জানানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ওই দাবিতে খুলনা নগরে ‘নাগরিক পদযাত্রা’ কর্মসূচির আয়োজন করেছিল কৃষি-শিল্প-পাট ও পরিবেশ রক্ষায় গঠিত নাগরিক কমিটি। পরে একই দাবিতে খুলনা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

নাগরিক কমিটির দাবিগুলো হচ্ছে সুন্দরবন ধ্বংসকারী ‘রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র’ অবিলম্বে বন্ধ করা; বাংলাদেশের ফুসফুস সুন্দরবন রক্ষায় জাতীয় বাজেটে আলাদা বরাদ্দ রাখা; সুন্দরবন বাঁচাতে এখনই বনের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে ভারী শিল্প স্থাপনা নিষিদ্ধসহ পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকার (ইসিএ) নীতিমালার বাস্তবায়ন; সুন্দরবনে যারা বিষ দিয়ে মাছ ধরছে, দ্রুত তদন্ত করে সেই সব অপরাধীকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা ও খুলনায় একটি পরিবেশ আদালত স্থাপন করা; সুন্দরবন ও সুন্দরবনের প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষা করতে পরিবেশবান্ধব পর্যটন নিশ্চিত করা; সুন্দরবন রক্ষায় যুগোপযোগী ও বাস্তবভিত্তিক ‘সুন্দরবন রক্ষায় বিশেষ আইন’ তৈরি করা এবং বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন রক্ষায় জাতীয়ভাবে ‘সুন্দরবন দিবস’ ঘোষণা করা।

১৪ ফেব্রুয়ারি ‘সুন্দরবন দিবস’ উপলক্ষে ওই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। কর্মসূচির অংশ হিসেবে নাগরিক পদযাত্রা শুরু হয় নগরের শহীদ হাদিস পার্ক থেকে। ওই পদযাত্রা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। ওই কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে ওই কমিটি।

সমাবেশে বক্তব্য দেন নাগরিক কমিটির সভাপতি কুদরত-ই-খুদা ও সাধারণ সম্পাদক সুতপা বেদজ্ঞ। সমাবেশ শেষে খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা এবং খুলনার বন সংরক্ষক মিহির কুমার দোর মাধ্যমে বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, সুন্দরবনের পাশেই গড়ে তোলা হয়েছে প্রকৃতিবিধ্বংসী রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। সরকারি নীতিমালা লঙ্ঘন করে আশপাশে গড়ে উঠেছে ভারী শিল্পকারখানা। নদীতে বিষ ঢেলে শিকার করা হচ্ছে মাছ। পর্যটকেরা প্লাস্টিকসহ নানা বর্জ্য বন ও বনসংলগ্ন নদীতে ফেলছে। বন বিভাগের কর্মকর্তাদের নজরদারি যথেষ্ট নয়। এভাবে চলতে থাকলে নিকট ভবিষ্যতেই সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাবে, সেই সঙ্গে তলিয়ে যাবে এ অঞ্চলের মানুষের বেঁচে থাকার অবলম্বন কৃষিজমি ও বসতভিটা।

ইতিমধ্যে এ ধরনের আলামত শুরু হয়েছে উল্লেখ করে স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, বনের উপকূলবর্তী বেশ কিছু এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। প্রতিটি জলোচ্ছাস ও ঘূর্ণিঝড়ের পর কিছু মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে শহরমুখী হতে বাধ্য হচ্ছে।

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ২০২২ ও ২০২৩ সালে বহুল আলোচিত পরিবেশবিধ্বংসী রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিট চালু হওয়ার পর যান্ত্রিক ত্রুটি ও কয়লাসংকটে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৫ বার বন্ধ হয়েছে।

স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, কয়েক বছর আগে মাছ থাকলেও বিদ্যুৎকেন্দ্রের বর্জ্য পানিতে ছড়িয়ে পড়ায় নদীতে মাছ কমতে শুরু করেছে। এ ছাড়া বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের কারণে চারণভূমির পরিমাণ কমে গেছে, এতে গবাদিপশু পালন কঠিন হয়ে পড়েছে। জীবিকার একটি বড় ক্ষেত্র নষ্ট হয়ে গেছে, বাধ্য হয়ে দূরদূরান্তে কাজে যেতে হচ্ছে গ্রামবাসীকে।

স্মারকলিপি পেশ করার সময় কৃষি-শিল্প-পাট ও পরিবেশ রক্ষায় নাগরিক কমিটির উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ফ ম মহসীন, মনোজ দাশ, গাজী নওশের আলী, তসলিমা খাতুন, সহসভাপতি এস এ রশীদ, মুনীর চৌধুরী সোহেল, মো. মোজাম্মেল হক খান, মাহফুজুর রহমান মুকুল, যুগ্ম সম্পাদক এস এম চন্দন, কোষাধ্যক্ষ এস এম সোহরাব হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ