পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে শূন্য পদে চিকিৎসক নিয়োগ, সদর হাসপাতালের নবনির্মিত ভবন চালুসহ পাঁচ দফা দাবিতে পঞ্চগড়ে মানববন্ধন করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা-কর্মীরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কে এক পাশে দাঁড়িয়ে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পঞ্চগড়ের অন্যতম সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী, জাতীয় নাগরিক কমিটির পঞ্চগড় সদর উপজেলার প্রতিনিধি সদস্য তানবিরুল বারী, বায়েজিদ বোস্তামী, বোদা উপজেলা শাখার প্রতিনিধি সদস্য শিশির আসাদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দেশের সর্বোত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের মানুষ চিকিৎসকের অভাবে পর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত। পঞ্চগড়ের ১২ লাখ মানুষকে স্বাস্থ্যসেবায় পিছিয়ে রেখে দেশের উন্নয়ন ও সংস্কার সম্ভব নয়। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ৩৭ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র ১১ জন। এ ছাড়া জেলার অন্য চারটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৮৪ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র ২৬ জন। এতে পঞ্চগড়ের মানুষ চিকিৎসাসেবায় বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।

বক্তারা আরও বলেন, পঞ্চগড়ের মানুষ হৃদ্‌রোগ, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণসহ ছোটখাটো দুর্ঘটনায় পড়লে হাসপাতালে যাওয়ামাত্রই রংপুর বা দিনাজপুরে পাঠানো হয়। এতে অনেক রোগীই পথে মারা যাচ্ছেন। টাকাপয়সার অভাবে অনেক রোগী বাইরে যেতে না পারায় ধুঁকে ধুঁকে মরছে। জেলা শহরের ১০০ শয্যার হাসপাতালটি ২৫০ শয্যায় উন্নীত করতে একটি নতুন ভবন নির্মাণ করা হলেও অজ্ঞাত কারণে সেটি চালু হচ্ছে না। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তাঁদের দাবি পূরণ না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।

মানববন্ধনে জেলার বিভিন্ন উপজেলার জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি সদস্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মী ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ ক ৎসক উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

মিছিল নিয়ে এসে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান মঞ্চ ভাঙচুর

চট্টগ্রামের ডিসি হিলে পয়লা বৈশাখের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের মঞ্চ ভাঙচুর করা হয়েছে। আজ রোববার সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে ৪০ থেকে ৫০ জনের একটি দল মিছিল নিয়ে গিয়ে মঞ্চ এবং আশপাশের চেয়ার–টেবিল ভাঙচুর করে। এ সময় তারা শেখ হাসিনার ফাঁসি না হওয়া পর্যন্ত ডিসি হিলে পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান করতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেয়।

সম্মিলিত পয়লা বৈশাখ উদ্‌যাপন পরিষদের ব্যানারে এখানে বাংলা বর্ষবরণের অনুষ্ঠান হয়ে আসছে। এবার অনুষ্ঠানটি ৪৭ বছরে পা রাখতে চলেছে। ভাঙচুরের পর ডিসি হিলে এবার বর্ষবরণ অনুষ্ঠান আর না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিষদ। প্রশাসনের অসহযোগিতার কারণে এই ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে পরিষদের অভিযোগ।

ভাঙচুরের আগে বিকেল সাড়ে ৪টায় জেলা প্রশাসন কার্যালয় থেকে ২০টি সংগঠনের একটি তালিকা দেওয়া হয় আয়োজকদের। ফ্যাসিস্টের দোসর অভিযোগ এনে ওই সংগঠনগুলোকে মঞ্চে তুলতে নিষেধ করে দেয় প্রশাসন। এর আগে সকালে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে সম্মিলিত বাংলা নববর্ষ উদ্‌যাপন মঞ্চ নামে একটি সংগঠন মানববন্ধন করে।

‘ফ্যাসিস্ট হাসিনার চিহ্নিত দোসরদের নেতৃত্বে বাংলা নববর্ষ অনুষ্ঠান উদ্‌যাপন আয়োজনের প্রতিবাদে’ এই মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মূলত জাতীয়বাদী সাংস্কৃতিক সংগঠন (জাসাস), বিএনপির সহযোগী সংগঠন মিলে এই কর্মসূচির আয়োজন করে। জেলা প্রশাসক বরাবর দেওয়া স্মারকলিপিতে এই সংগঠনগুলোকে নববর্ষের অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার দাবি জানানো হয়।

যাঁরা এসব অভিযোগ তুলেছেন, তাঁরাই সন্ধ্যায় ভাঙচুর চালিয়েছেন বলে আয়োজকদের অভিযোগ। প্রত্যক্ষদর্শী সম্মিলিত পয়লা বৈশাখ উদ্‌যাপন পরিষদের সদস্যসচিব মোহাম্মদ আলী বলেন, সন্ধ্যার দিকে ৪০ জনের মতো একটি দল মিছিল নিয়ে আসে। তারা হাসিনার বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। এ সময় ‘হাসিনার দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান, হাসিনার ফাঁসি চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়। একপর্যায়ে মঞ্চে উঠে ভাঙচুর শুরু করে। এই দলের মধ্যে গত বৃহস্পতিবার পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে থাকা কয়েকজনও ছিলেন। চেয়ার–টেবিল সব ভাঙচুর করে ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে। শিল্পীদের জন্য তৈরি কক্ষসহ সবকিছু ভাঙচুর করে। ১৫ মিনিট পর তারা চলে যায়।

পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়। ঘটনাস্থলে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল করিম বলেন, একটি মিছিল এসে কিছু বুঝে ওঠার আগেই ভাঙচুর করে চলে গেছে। বিষয়টা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

জানতে চাইলে পরিষদের সমন্বয়ক সুচরিত দাশ বলেন, ‘আমরা সোমবার আর পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান করব না। যারা বিভিন্ন সংগঠনের নামে অভিযোগ দিয়েছে, তারাই এই ভাঙচুর করেছে। এভাবে আর অনুষ্ঠান করা যায় না। প্রশাসন শুরু থেকে আমাদের অনুমতি দিতে গড়িমসি করেছে। অসহযোগিতা করেছে। এ কারণে আজকের ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।’

অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জাসাসের সদস্যসচিব ও নববর্ষ উদ্‌যাপন মঞ্চের সংগঠক মামুনুর রশিদ (শিপন) বলেন, ‘তারা হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে চায়। যারা ডিসি হিলে অনুষ্ঠান করছে, তারা দোসর। আমরা মানববন্ধন করে ডিসিকে স্মারকলিপি দিয়েছি। ভাঙচুরের বিষয়ে অবগত নই।’

জানতে চাইলে আজ রাত পৌনে ৯টার দিকে নগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) মো. আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের থানায় নেওয়া হয়েছে। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মিছিল নিয়ে এসে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান মঞ্চ ভাঙচুর
  • ‘গাজা যুদ্ধ টিকিয়ে রেখে পুঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলো সুবিধা নিচ্ছে’ 
  • কার্যালয়ের ভেতর আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা, বাইরে খুনের বিচার চেয়ে মানববন্ধন
  • শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি শুরু ১৫ এপ্রিল, মানতে হবে নানা নির্দেশনা, ভর্তি ফি নিয়ে ক্ষোভ
  • ‘ফিলিস্তিন জাগে ফিলিস্তিন জাগে’
  • রাষ্ট্রীয় খরচে কোনো অতিথিকে হজে পাঠানো হবে না: ধর্ম উপদেষ্টা
  • আনন্দ শোভাযাত্রার মোটিফে আগুনের প্রতিবাদে চারুকলার সামনে মানববন্ধন
  • গোগনগরে খাল ভরাট করে সড়ক নির্মাণের প্রতিবাদে মানববন্ধন
  • বাবা হত্যার বিচার দাবিতে রাস্তায় দুই শিশু
  • দুই ছাত্রীকে ধর্ষণে জড়িতদের গ্রেপ্তারে আলটিমেটাম