যে মেলায় পুরুষের প্রবেশ নিষেধ, নারীরাই ক্রেতা
Published: 13th, February 2025 GMT
রেশমি চুড়ি, আলতা, চিরুনি, হাঁড়ি-পাতিল, খুন্তি-কড়াই, পানের বাটা, খেলনা, মিষ্টান্ন—কী নেই এখানে। হরেক রকম পণ্যের পসরা মেলা চত্বরে। ক্রেতা-দর্শনার্থীদের সবাই নারী। শিশুরা থাকলেও নারীদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। দোকানদার ছাড়া সেখানে কোনো পুরুষ সদস্যের ঢোকার অনুমতি নেই। এভাবে নারীদের বেশি অংশগ্রহণের কারণে এর নামকরণ হয়েছে ‘বউ মেলা’।
বগুড়ার গাবতলী উপজেলার ইছামতী নদীর তীরের পশ্চিম মহিষাবান ত্রিমোহিনী এলাকায় তিন দশকের বেশি সময় ধরে বসছে এই ‘বউ মেলা’। দিনব্যাপী এ মেলায় ঘুরে নারীরা স্বাচ্ছন্দ্যে বিভিন্ন ধরনের পণ্য কিনে থাকেন। অন্যবারের ধারাবাহিকতায় আজ মাঘ মাসের শেষ বৃহস্পতিবার এ মেলা বসেছে। এর আগের দিন একই জায়গায় বসেছিল পোড়াদহ মেলা। আজ সকাল থেকেই ‘বউ মেলায়’ নারীদের ঢল নামে।
আরও পড়ুনএকটি মিষ্টির দাম ১০ হাজার টাকা, ৩৫ হাজারে বিক্রি হলো একটি মাছ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫এ অবস্থা দেখে মেলার আয়োজক ও ত্রিমোহিনী যুব সংঘের সাধারণ সম্পাদক আরাফাত রহমান বলেন, ‘অন্যবারের তুলনায় এবারের বউ মেলায় উৎসবের আমেজ বেশি। মেলায় বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছে শতাধিক দোকানি। সকাল থেকেই দোকানে দোকানে নারী ক্রেতার ভিড় আছে।’
মেলার আয়োজকেরা জানান, বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে প্রতিবছর মাঘ মাসের শেষ বুধবার ইছামতী নদীর তীরে বসে ঐতিহ্যবাহী ‘পোড়াদহ মেলা’। ঠিক এর পরদিন বৃহস্পতিবার বসে ‘বউ মেলা’। পোড়াদহ মেলা নিয়ে নানা জনশ্রুতি আছে। ৪০০ শতাধিক বছর আগে পোড়াদহ-সংলগ্ন ইছামতী নদীতে মাঘ মাসের শেষ বুধবার অলৌকিকভাবে একটি বড় কাতলা মাছ সোনার চালুনি পিঠে নিয়ে ভেসে উঠত। ঘটনাক্রমে ওই সময় থেকে জায়গাটিকে ঘিরে মেলা বসতে শুরু করে। কালক্রমে এটি পোড়াদহের মেলা হিসেবে পরিচিতি পায়। ইছামতী, করতোয়া, যমুনা ও বাঙ্গালী নদীর বাহারি মাছ বিক্রির জন্য মেলায় নিয়ে যান জেলেরা। এসব মাছ কিনতে দূরদূরান্ত থেকে সেখানে ভিড় করেন ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা। মেলা এক দিনের হলেও এর আবহ থাকে কয়েক দিন।
মেলায় বিভিন্ন বয়সী নারী ও শিশুদের ভিড় দেখা গেছে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিশিষ্ট নাগরিকের নামে যারা আ.লীগের বৈধতা দিতে চায় তাদের জন্য ছাত্র-জনগণই যথেষ্ট: আখতার হোসেন
‘বিশিষ্ট নাগরিকের নামে যারা খুনি হাসিনার প্রেতাত্মাদের পক্ষে দাঁড়াবার রাজনীতি করছেন’ তাঁদের হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেছেন, ‘বিশিষ্ট নাগরিকের নামে যারা বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের ঘুরে দাঁড়ানোর বৈধতা দিতে চায় তাদের ধ্বংস করার জন্য বাংলাদেশের ছাত্র-জনগণই যথেষ্ট। আর কোনোভাবে যদি বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করার, ফিরিয়ে নিয়ে আসার চক্রান্ত করা হয়; রাজপথে বাংলাদেশের জনতা জবাব দেওয়ার জন্য তৈরি হয়ে আছে।’
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেটে জাতীয় নাগরিক কমিটির বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় আখতার হোসেন এ মন্তব্য করেন। নগরের রিকাবীবাজারস্থ কাজী নজরুল অডিটরিয়ামে এ সভার আয়োজন করে জাতীয় নাগরিক কমিটি সিলেট বিভাগ।
দল হিসেবে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল ও নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি জানিয়ে আখতার হোসেন বলেন, ‘কোনো সম্প্রদায়ের মানুষকেই আওয়ামী লীগ শান্তিতে থাকতে দেয়নি। তারা বিভাজনের রাজনীতিকে জিইয়ে রেখেছিল। আমরা বাংলাদেশে একটি মধ্যমপন্থী রাজনীতি চালু করতে চাই।’
নতুন রাজনৈতিক দলের প্রসঙ্গে আখতার হোসেন বলেন, ‘আমরা এমন এক রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা বলছি, যেখানে কোনো বৈষম্য থাকবে না। ন্যায় ও ইনসাফের পলিসিই হবে নতুন বন্দোবস্ত। এখানে আর কোনো বাকশাল ও ফ্যাসিবাদকে জায়গা দেওয়া হবে না। কোনো রাজনৈতিক দল ভারতের তাঁবেদারি করবে, বাংলাদেশের মানুষ তা আর হতে দেবে না। পতিত আওয়ামী লীগারদের মতো বেহায়াদের, মানবতাবিরোধী অপরাধীদের মানুষ আর রাজনীতি করতে দেবে না। দল হিসেবে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।’
জাতীয় নাগরিক কমিটির বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় অংশগ্রহণকারীরা। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেট নগরের কাজী নজরুল অডিটরিয়ামে