হুমকির মুখে কলকাতায় ঋত্বিক ঘটকের সিনেমার প্রদর্শনী বাতিল
Published: 13th, February 2025 GMT
কলকাতা শহরে বাতিল হল প্রখ্যাত পরিচালক ঋত্বিক ঘটকের দুই সিনেমার প্রদর্শনী! অবাক করা বিষয় হলেও এটাই সত্য। ঘটনাটি কলকাতার শিল্প-সংস্কৃতির অঙ্গনে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন অনেকেই।
আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়ছে, কলকাতায় রাজনীতি এবং শিল্পের সম্পর্ক দিনদিন জটিল হয়ে উঠছে। তারই প্রভাব পড়লো ঋত্বিক ঘটকের মতন মহান পরিচালকের সিনেমার প্রদর্শনীতে। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ঋত্বিক ঘটকের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ঋত্বিক মেমোরিয়াল ট্রাস্টের পক্ষ থেকে নাকতলা হাই স্কুলে ‘কোমল গান্ধার’ এবং ‘আমার লেনিন’ ছবিগুলো প্রদর্শনীর কথা ছিল। কিন্তু ছবিগুলো প্রদর্শন করার অনুমতি হঠাৎ করেই বাতিল করা হয়।
প্রথমে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনুমতি দিলেও, কিছু ব্যক্তির হুমকির কারণে তিনি তা বাতিল করেন বলে জানিয়েছেন।
আনন্দবাজার বলছে, ‘আমার লেনিন’ ছবিটির বিষয়ে বিশেষ আপত্তি ছিল। হুমকি আসছিল এই ছবি প্রদর্শিত হলে বিদ্যালয়ে ভাঙচুর হবে। এরপর ‘কোমল গান্ধার’ দেখানোর অনুমতিও আর দেয়া হয়নি।
ক্ষোভ প্রকাশ করে পরিচালক অনীক দত্ত বলেন, ‘এভাবে প্রতিবাদ করাটা যেন নিজের অযোগ্যতাই স্বীকার করা। তাই প্রতিবাদ করতেও ইচ্ছে করে না। এটা সেই শহরের অবস্থা, যাকে শিল্প এবং সংস্কৃতির কেন্দ্র বলে দাবি করা হয়- ভাবতেই পারছি না।’
তিনি আরও জানান, একদিকে ঋত্বিক ঘটকের ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ ছবির প্রিন্ট পুনরুদ্ধার হচ্ছে। অন্যদিকে ‘কোমল গান্ধার’-এর প্রদর্শন আটকে দেওয়া হচ্ছে।
অভিনেতা-রাজনীতিবিদ রুদ্রনীল ঘোষ অভিযোগ করে বলেন, ‘রাজনৈতিক কারণে শিল্পের স্বাধীনতা সংকুচিত হচ্ছে। বাঙালি চলচ্চিত্রের দুনিয়ায় রাজনীতির অবাধ প্রভাব পড়েছে। অভিনেতা, পরিচালক বা প্রযোজককে রাজনৈতিক গণ্ডিতে বাঁধা যায় না এটা ভুলে যাচ্ছেন রাজনীতিবিদরা। কেবলমাত্র বিরোধী মতের হলে যাকে তাকে শিকার বানানো হচ্ছে। ঋত্বিক ঘটকও বাঁচলেন না। ‘আমার লেনিন’ ছবির সঙ্গে বর্তমান রাজ্য সরকারের মতের বিরোধ আছে বলে ছবিটি দেখাতে দেয়া হলো না।’
তিনি সত্যজিৎ রায়ের জীবনের উপর তৈরি ছবি ‘অপরাজিত’-এর নন্দনে প্রদর্শিত না হওয়ার উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘রাজনৈতিক কারণে সত্যজিত রায়ের শিল্পকর্মও আজকাল জটিল পরিস্থিতির মুখে পড়ছে।’
এ ব্যাপারে পরিচালক সংগঠন ইস্ট ইন্ডিয়া মোশন পিকচার্স ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন (ইআইএমপিডিএ) এবং ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া (ডিএইআই), কোনো অবস্থান নেয়নি। কিছু সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তারা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সাবেক এমপি ইয়াহইয়াসহ ৫ জনকে আটক করে পুলিশে দিল ছাত্র-জনতা
সিলেট-২ (বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর) আসনে জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহইয়া চৌধুরীসহ তাঁর চার সহযোগীকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে ছাত্র–জনতা। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের ২ নম্বর রোডের ১৯ নম্বর বাসা থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটক হওয়া অন্য চারজন হলেন- আনোয়ার হোসেন, মিলন, জনি মিয়া। বাকি একজনের নাম জানা যায়নি।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির উত্তরা জোনের সহকারী কমিশনার সাদ্দাম হোসাইন। তিনি বলেন, সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহিয়াসহ পাঁচজনকে আটক করে গণপিটুনি দিয়েছে ছাত্র–জনতা।
এর আগে ১২ নভেম্বর ছাত্র–জনতার ওপর গুলি ছুড়ে হত্যার অভিযোগে দুটি মামলায় ইয়াহইয়া চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। ওই সময় মাসখানেক কারাগার ছিলেন তিনি। আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট কুমারপাড়া এলাকায় ছাত্র-জনতার ওপরে হামলার অভিযোগে গত ২ অক্টোবর কোতোয়ালি থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়।
ইয়াহইয়া চৌধুরী ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে সিলেট-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আসনটিতে কোনো প্রার্থী দেয়নি। এমপি নির্বাচিত হয়ে তিনি পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব করেন। পরে ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ওই আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিলেও নির্বাচিত হতে পারেননি ইয়াহইয়া। ওই আসনে এমপি হন গণফোরামের প্রার্থী মোকাব্বির খান।