সংস্কার ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে নয় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। নির্বাচনসংক্রান্ত জরুরি সংস্কারগুলো শেষ করেই তারা জাতীয় সংসদ নির্বাচন চায় বলে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) জানিয়েছে দলটি। 

বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইসির সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা জানিয়েছেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ার। এ সময় তিনি ‘জনগণের আকাঙ্ক্ষা, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে হোক’ এমন মন্তব্যও করেন।

এদিন সকালে জামায়াতের একটি প্রতিনিধিদল প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় সিইসির সঙ্গে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসির সিনিয়র সচিব উপস্থিত ছিলেন। 

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ার বলেন, ‘নো ইলেকশন উইদাউট রিফর্মস’ (সংস্কার ছাড়া নির্বাচন নয়)। 

তিনি বলেন, রাষ্ট্রের সংস্কার নয়, শুধু নির্বাচনসংক্রান্ত যেসব সুপারিশ অতি জরুরি, অন্তত নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যেসব প্রতিষ্ঠান জড়িত, সেগুলোর সংস্কার করে নির্বাচন দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে জামায়াত ইসিকে নির্বাচনের কোনো দিন, মাস, ক্ষণ বেঁধে দেয়নি। 

এক প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, জনগণের আকাঙ্ক্ষা, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে হোক। 

ইসির সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে জামায়াত নেতা বলেন, আগামী নির্বাচন নিয়ে মতবিনিময় হয়েছে। ইসির পক্ষ থেকেও কিছু বিষয় আমাদের জানানো হয়েছে। জামায়াতের পক্ষ থেকে লিখিত প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। 

২৩ দফা সুপারিশ ইসির কাছে তুলে ধরার কথা জানিয়ে গোলাম পরোয়ার বলেন, গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশের মধ্যে রয়েছে সংস্কার। পরিপূর্ণভাবে, অন্তত নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও বিভাগগুলোতে সংস্কার করেই সংসদের নির্বাচন করতে হবে। অন্যথায় নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে না। আগের তিন নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি, আবারও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে। দুই হাজার ছাত্র–জনতার জীবন এবং ৩০ হাজার আহত ছাত্রের রক্ত বৃথা যাবে।

তিনি বলেন, অনেকে ভুল বোঝেন। জামায়াত পুরো রাষ্ট্রের সংস্কারের কথা বলেনি। নির্বাচন প্রক্রিয়া সুষ্ঠু করতে যেটুকু সংস্কার লাগে, তার কথা বলা হয়েছে। 

তিনি জানান, এটা (সংস্কার) করতে গেলে সময় লাগে, এটা সরকারের দায়িত্ব। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নির্বাচনকে নিরপেক্ষ করা। সেজন্য যে সংস্কারটুকু ন্যূনতম প্রয়োজন, তার জন্য যতটুকু সময় যৌক্তিক প্রয়োজন, জমায়াতে ইসলামী সে সময় দিতে প্রস্তুত। কোনো দিন, মাস, ক্ষণ বেঁধে দেয়নি জামায়াত। 

সংস্কার ও নির্বাচনের জন্য ‘যৌক্তিক সময়’ নিয়ে জামায়াতে ইসলামী বরাবরই আগের অবস্থানে রয়েছে বলে জানান সেক্রেটারি জেনারেল। তিনি বলেন, আমিরে জামায়াত প্রথম থেকেই যে বক্তব্য দিয়েছেন, আজও একই অবস্থান ব্যক্ত করেছেন তারা। 

বৈঠকে জামায়াতের প্রতিনিধি দলে সেক্রেটারি মিয়া গোলাম পারওয়ার ছাড়াও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ, নির্বাহী পরিষদের সদস্য মতিউর রহমান আকন্দ, প্রকাশনা ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট জসিমউদ্দিন সরকার, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মজলিশে সুরার সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসূফ আলী, মহানগরী জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট কামাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম সদস য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ধর্ষণের বিচার, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ, মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে কাফনমিছিল

মাগুরায় শিশুকে ধর্ষণ–হত্যাসহ সব ধর্ষণের বিচার, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ ও ছাত্রনেতাদের নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন কাফনমিছিল করেছে। আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে এই মিছিল শুরু হয়।

কাফনমিছিল শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য দেন মামলায় অভিযুক্ত বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণের দীর্ঘ ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ধারাবাহিকতায় জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন হয়েছে। হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশের জনগণ সমস্ত গণতান্ত্রিক অধিকার হারিয়ে প্রজায় পরিণত হয়েছিল, জনগণের কোনো নায্য দাবি তারা মেনে নেয়নি। সে সময় দেখা যেত শত ব্যর্থতার পরও জনদাবিকে অগ্রাহ্য করত।

সৈকত আরিফ বলেন, ‘বর্তমান সরকারের মাঝেও আমরা সে ধরনের চরিত্র দেখতে পাচ্ছি। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সাত মাস পরও যখন ধর্ষণ-খুন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পারছে না, তখন এই ব্যর্থতার দায় নিয়ে জনগণ যখন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করছে, তখন সরকার সেই জনদাবিকে অগ্রাহ্য করছে। এমনকি বিভিন্ন রাজনৈতিক পক্ষকে নিজেদের গোষ্ঠীস্বার্থে ব্যবহার করে ঘটনা অন্যদিকে প্রবাহিত করার ষড়যন্ত্র করতে দেখছি।’

ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা দেখেছি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ব্যর্থতা নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্রসংগঠন এমনকি উপদেষ্টাদের কেউ কেউ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা নিয়ে কথা বলেছেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ প্রসঙ্গে সকল রাজনৈতিক দল, ছাত্রসংগঠন ও উপদেষ্টাদের স্পষ্ট অবস্থান জনগণের সামনে প্রকাশ করতে হবে। তাঁরা পদত্যাগ চান কি না; না চাইলে কেন চান না, তা জনগণের জানার অধিকার আছে। আমরা আশা করব, তাঁরা সেই অবস্থান পরিষ্কার করবেন।’

পরে কাফনমিছিলটি রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে শুরু হয়ে ভিসি চত্বর ঘুরে আবার রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে শেষ হয়।

কাফনমিছিলে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্র ফেডারেশনের আহ্বায়ক আরমানুল হক, অর্থ সম্পাদক ফারহানা মানিক মুনা, কেন্দ্রীয় সদস্য সাইদুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠক সীমা আক্তারসহ অন্য নেতারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নির্বাচন বিলম্বিত করার টালবাহানা জনগণ মেনে নেবে না: নজরুল ইসলাম খান
  • নির্বাচন বিলম্বিত করার টালবাহানা জনগণ মেনে নেবে না: নজরুল ইসলাম 
  • শেখ হাসিনার মতন ফ্যাসিবাদের উত্থান আর বাংলাদেশে হবে না : সজল 
  • বিএনপির সামনে সুযোগ অনেক, কিন্তু...
  • বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি কারা, তাদের জন্ম কীভাবে?
  • রাখাইনে সহায়তা পাঠাতে ঢাকার অনুমোদন লাগবে
  • আলো না ফুটলেও অন্ধকার তো কাটছে না
  • বাংলাদেশকে করিডোর দিতে জাতিসংঘের আহ্বান
  • ঈদের আগেই প্রস্তুত হচ্ছে মিরপুরের ৬০ ফিট রাস্তা: ডিএনসিসি প্রশাসক
  • ধর্ষণের বিচার, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ, মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে কাফনমিছিল