আদালত পরিচালনার সময় দাউদকান্দিতে এসি ল্যান্ডের ওপর হামলা, পাঁচ পুলিশসহ ১০ জন আহত
Published: 13th, February 2025 GMT
ছবি: প্রথম আলো
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
উদার সম্প্রীতির সহিষ্ণু সমাজ গড়ার আহ্বান ছায়ানটের বাংলা বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে
সবাই ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষণ, মুক্তচিন্তার নির্ভয় প্রকাশ, আবহমান সংস্কৃতির নির্বিঘ্ন যাত্রা হৃদয়ে ধারণ করলে মুক্তির আলোকোজ্জ্বল ভবিষ্যৎ সুগম হবেই বলে মন্তব্য করেছেন ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী। তিনি বলেন, আমরা এক আলোকিত দেশ ও সমাজের স্বপ্ন দেখি, যে দেশের মানুষ সর্বজনের শান্তি-স্বস্তি-নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ধর্ম-জাতি-বিত্তের বিভাজন ভাঙবে, গড়বে উদার সম্প্রীতির সহিষ্ণু সমাজ।
আজ সোমবার সকালে রাজধানীর রমনা বটমূলে ছায়ানটের বাংলা বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে লিখিত বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেছেন।
তিনি বলেছেন, মুক্তির অন্বেষায়, দীর্ঘ বন্ধুর পথপরিক্রমায় অর্ধশতকবর্ষ পূর্বে, বিপুল আত্মদানের বিনিময়ে অর্জিত হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা। ওই যাত্রাপথের নিদর্শন ছড়িয়ে রয়েছে, ইতিহাস লিপিবদ্ধ হয়েছে বাঙালির শিল্প, সাহিত্য, সঙ্গীতসহ সব মাধ্যম এবং বিভিন্ন স্থাপনায়। বাঙালির স্বাধিকার অর্জনের সংগ্রামে অনন্য মাত্রা যুক্ত করেছে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এই অসাম্প্রদায়িক উৎসব, নতুন বাংলা বছরকে বরণ করার আয়োজন।
ছায়ানটের সভাপতি বলেন, বাঙালির মানবতার মুক্তিসাধনা স্বাধীন দেশেও প্রত্যাশা এবং আশাভঙ্গের নানান চড়াই উতরাইয়ের দোলাচল প্রত্যক্ষ করেছে। নববর্ষের ঊষালগ্নে, আজ চোখ ফেলি হিসাব-নিকাশের হালখাতায়। একদিকে মুক্তির জন-আকাঙ্ক্ষা অর্জনের প্রত্যাশা, অন্যদিকে পীড়াদায়ক বিদ্বেষ-বিভক্তি, নারী-শিশুর অমানবিক মর্যাদাহানি ও অপরিণামদর্শী অসহিষ্ণুতা। সব অতৃপ্তি প্রতিবিধানের দায় রাষ্ট্রের। তবে সমাজকেও সে দায় নিতে হয় বৈকি। সবাই ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষণ, মুক্তচিন্তার নির্ভয় প্রকাশ, আবহমান সংস্কৃতির নির্বিঘ্ন যাত্রা হৃদয়ে ধারণ করলে, মুক্তির আলোকোজ্জ্বল ভবিষ্যৎ সুগম হবেই।
আজ সোমবার সূর্যোদয়ের পর পর শুরু হয় বর্ষবরণের ছায়ানটের অনুষ্ঠান। এবারে অনুষ্ঠানের মূলভাব ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’। ছায়ানটের ৫৮তম এই অনুষ্ঠান সাজানো হয় নতুন আলো, প্রকৃতি ও মানুষকে ভালোবাসার গান ও আত্মবোধনের জাগরণের সুরবাণী দিয়ে।
সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান শেষের আগমুহূর্তে শিল্পী ও দর্শনার্থীরা দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। পরে ছায়ানটের শিল্পীদের সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে ছায়ানটের এবারের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শেষ হয়।
নীরবতা পালনের আগে ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী বলেন, ‘ফিলিস্তিনে, গাজায় ভয়াবহ মানবতার বিপর্যয় এবং গণহত্যায়, বিশেষ করে শিশু হত্যার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। ফিলিস্তিনবাসী আপন ভূমি রক্ষায় যে সংগ্রাম করছেন, তার প্রতি আমরা সংহতি জানাই। ইসরায়েলের নির্বিচার হত্যাযজ্ঞে নিহত মানুষদের স্মরণে সবাইকে এক মিনিট নীরবতা পালনের অনুরোধ করছি।’
এবার ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের মূল বার্তা ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’। আলো, প্রকৃতি, মানুষ ও দেশপ্রেমের গান দিয়ে সাজানো হয় আজকের অনুষ্ঠান।
বাংলা বর্ষবরণের এ আয়োজন সরাসরি সম্প্রচার করে ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজ। বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলেও এই অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়।
দেশের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংস্থা ছায়ানট ১৯৬৭ সাল থেকে রমনা বটমূলে পয়লা বৈশাখে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছে। এবার ১৪৩২ বঙ্গাব্দকে বরণ করে নিতে গত তিন মাস ধানমন্ডির ছায়ানট সংস্কৃতি-ভবনে চলে গানের মহড়া। আর ৮ এপ্রিল রমনার বটমূলে মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু হয়।