‘বইগুলো ব্যাগের ভেতরেই আছে, আমি আবার আসব’
Published: 13th, February 2025 GMT
‘ম্যাডাম আমার বইগুলো ব্যাগের ভেতরেই আছে। একটু যত্ন করে রাখবেন। আমি তো আবার ক্লাসে আসব।’
কথাগুলো চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী মরিয়ম আক্তারের (১০)। কিছুদিন আগে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌস মরিয়মকে দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে যান। তখন সে তার শিক্ষককে এসব কথা বলে। ২২ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে গত বুধবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মরিয়মের মৃত্যু হয়।
গত ২২ জানুয়ারি লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের সোনাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাদে খেলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হয় মরিয়ম আক্তার ও রাফসি আহসান (১০)। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মরিয়মের শরীরের প্রায় ৯০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল বলে জানান চিকিৎসকেরা। অপর আহত তৃতীয় শ্রেণির রাফসির এক হাত কেটে ফেলতে হয়েছে। সে বর্তমানে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার পর প্রধান শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌস দাবি করেন, ‘ছাদে সব সময় তালা দেওয়া থাকে। কে বা কারা তালা খুলে দিয়েছে, তা দেখেননি তিনি। অসাবধানতাবশত পল্লি বিদ্যুতের খোলা লাইনে লেগে দুই শিক্ষার্থী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়।
মরিয়ম আক্তার তার মামাবাড়িতে থাকত। তার মামা আবদুর রহমান জানান, ‘বিদ্যালয় ঘেঁষে ৪৪ হাজার ভোল্টের বৈদ্যুতিক তার রয়েছে। এ কারণে পুরো বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঝুঁকিতে রয়েছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে আমার ভাগনিকে জীবন দিতে হয়েছে।’
অপর শিক্ষার্থী রাফসি আহসানের অবস্থাও সংকটাপন্ন বলে তার বাবা মো.
লক্ষ্মীপুর পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মো. শফিউল আলম বলেন, ‘দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ ঘটনায় ঢাকা থেকে উচ্চপর্যায়ের একটি তদন্ত টিম এসেছে। বিষয়টি এখনো তদন্ত চলছে। অনেক বছর আগে বিদ্যালয়ের ভবনের পেছন দিয়ে বিদ্যুতের লাইনটি নির্মিত হয়েছে। এ কারণে এটি আমাদের নজর এড়িয়ে যায়।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনায় উৎসবমুখর পরিবেশে বাংলা বর্ষবরণ
উৎসব মুখর পরিবেশে খুলনায় সোমবার বাংলা নববর্ষ বরণ করা হয়েছে। এ উপলক্ষে উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী সকাল ৭টায় সার্কিট হাউজ সংলগ্ন টেনিস কমপ্লেক্সে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ছিল গান, নাচ, আবৃত্তি ও শোভাযাত্রা। অনুষ্ঠানে যোগ দেন সাংস্কৃতিক কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
খুলনা জেলা প্রশাসন সকাল ৮টায় রেলওয়ে স্টেশন থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করে। শোভাযাত্রাটি শহীদ হাদিস পার্কে গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও লোকজ মেলার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার, জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম, পুলিশ সুপার টিএম মোশাররফ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে সকাল সোয়া ৭টায় বর্ষ আবাহন, সকাল ৯টায় কেন্দ্রীয় মাঠে মেলার উদ্বোধন, সকাল ১০টায় শোভাযাত্রা, পরে লাঠিখেলা ও ম্যাজিক শো এবং বিকালে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। মেলার উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম। মেলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাড়াও আশপাশের এলাকার লোকজন জড়ো হন।
বিএনপি সকাল ৭টায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পান্তা উৎসব ও ১০টায় র্যালির আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে মহানগর বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম মনা ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন সহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা রূপান্তর, খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন দিনভর নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। নগরীর পার্ক, নদীর ঘাটসহ বিনোদন স্পটগুলোতে দিনভর ছিল তরুণ-তরুণীদের উপচেপড়া ভিড়।