সুরা ফাতিহায় আমরা যখন বলি, ‘আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন (সকল প্রশংসা বিশ্বজগতের মালিক আল্লাহর জন্যই)।’ তখন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হামিদা নি, আবদি (আমার বান্দা আমার প্রশংসা করল)।’ অতঃপর আমরা যখন বলি—‘আর রাহমানির রাহিম (তিনি পরম করুণাময় অতি দয়ালু)’ তখন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আছনা আলাইয়া আবদি (আমার বান্দা আমার বিশেষ প্রশংসা করল)।’
এরপর যখন আমরা বলি, ‘মালিকি ইয়াওমিদ্দিন (তিনি বিচারদিনের মালিক)।’ তখন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘মাজ্জাদানি আবদি (আমার বান্দা আমাকে সম্মানিত করল)।’ এরপর আমরা যখন বলি, ‘ইয়্যাকা নাবুদু ওয়া ইয়্যাকা নাস্তায়িন (শুধু আপনারই ইবাদত করি আর শুধু আপনার কাছেই সাহায্য চাই)।’ তখন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হাজা বাইনি ওয়া বাইনা আবদি (এই ফয়সালাই হলো আমার ও আমার বান্দার মধ্যে—বান্দা আমার ইবাদত ও আনুগত্য করবে, আমি তাকে সাহায্য-সহযোগিতা করব)।’
আমরা যখন বলি, ‘ইহদিনাছ ছিরাতল মুস্তাকিম, ছিরাতল্লাজিনা আনআমতা আলাইহিম, গয়রিল মাগদুবি আলাইহিম ওয়ালাদ্দল্লিন! (আমাদের সঠিক পথ দেখান, তাদের পথ যাদের আপনি নিয়ামত দিয়েছেন; তাদের পথ নয় যারা পথভ্রষ্ট; আর না যারা অভিশপ্ত)।’ তখন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘লিআবদি মা ছাআল (আমার বান্দা যা চায়, তার জন্য তা-ই)।’ (সহিহ মুসলিম, ৩৯৫)
সুরা ফাতিহা ছাড়া নামাজ হয় না সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম অর্থএরপর আমরা অন্য একটি সুরা মেলাই। আমরা রুকুতে আল্লাহর প্রশংসা করি এবং ক্ষমা চাই। বলি: সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম। অর্থ: ‘আমার মহান রবের পবিত্রতা ও প্রশংসা বর্ণনা করছি।’
সামি আল্লাহ হুলিমান হামিদা অর্থরুকু থেকে উঠে বলি, ‘সামি আল্লাহ হুলিমান হামিদা।’
অর্থ: আল্লাহ সেই ব্যক্তির কথা শোনেন, যে তঁার প্রশংসা করে।
আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ অর্থতারপরই আমরা আবার আল্লাহর প্রশংসা করে বলি, ‘আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ’,
অর্থ: হে আল্লাহ! যাবতীয় প্রশংসা কেবল তোমারই।
সুবহানা রাব্বিয়াল আলা অর্থতারপর আমরা সিজদায় গিয়ে বলি: সুবহানা রাব্বিয়াল আলা,
অর্থ: ‘আমার মহান রবের পবিত্রতা বর্ণনা করছি। এভাবে নামাজ শেষে, মধ্য (দুই রাকাত, চার রাকাত ভিত্তিতে) বৈঠক আর শেষ বৈঠকে তাশাহুদে, আল্লাহর প্রশংসা করি।’
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যেভাবে এল তাশাহুদে যা পড়ি তার অর্থ‘সকল তাজিম ও সম্মান আল্লাহর জন্য, সকল সালাত আল্লাহর জন্য এবং সকল ভালো কথা ও কর্মও আল্লাহর জন্য। হে নবী! আপনার প্রতি শান্তি, আল্লাহর রহমত ও তাঁর বরকত বর্ষিত হোক। আমাদের ওপরে এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের ওপরে শান্তি বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই এবং আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি মুহাম্মদ আল্লাহর বান্দা এবং তাঁর রাসুল।’
দরুদে যা পড়ি তার অর্থ:‘হে আল্লাহ! আপনি নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর বংশধরদের ওপর রহমত বর্ষণ করুন, যেরূপভাবে আপনি ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম ও তার বংশধরদের ওপর রহমত বর্ষণ করেছিলেন। নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত সম্মানিত।’
দোয়া মাসুরায় যা পড়ি তার অর্থ‘হে আল্লাহ! আমি আমার ওপর অত্যধিক জুলুম করেছি, গুনাহ করেছি এবং তুমি ব্যতীত পাপ ক্ষমা করার কেউ নেই। সুতরাং তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। ক্ষমা একমাত্র তোমার পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। আমার প্রতি রহম কর। নিশ্চয়ই তুমি ক্ষমাশীল দয়ালু।’
দুই কাঁধে সালাম দিয়ে আমরা নামাজ শেষ করি।
নামাজে আল্লাহর দিদার.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম র ব ন দ দ র ওপর র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিমা ভাঙার ঘটনায় ছেলেকে ধরিয়ে দিলেন বাবা
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর নাম জাকির হোসেন (২৫)। গতকাল শুক্রবার রাতে ওই যুবককে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন তাঁর বাবা। আজ শনিবার দুপুরে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
গ্রেপ্তার জাকির হোসেন রায়পুর উপজেলার চরমোহনা ইউনিয়নের মনির আহাম্মদের ছেলে। মনির আহাম্মদ জানান, ৮ থেকে ১০ বছর ধরে তাঁর ছেলে মানসিক ভারসাম্যহীন। প্রায় সময় ছেলে বাড়ি থেকে বের হয়ে চলে যান। মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুরে ছেলের জড়িত থাকার বিষয়টি পুলিশের কাছ থেকে শুনেছেন। এরপর ছেলেকে ধরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন।
পুলিশ জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে মুখে রুমাল বেঁধে রায়পুর পৌর শহরের শ্রীশ্রী মহামায়া মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর করেন এক যুবক। মন্দিরের বাইরের একটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে হামলাকারী জাকির হোসেনকে শনাক্ত করা হয়। এ ঘটনায় মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সাহা বাদী হয়ে জাকির হোসেনকে আসামি করে মামলা করেন।
জাকির হোসেনকে শনাক্ত করার পর পুলিশ তাঁর বাবা মনির আহাম্মদকে বিষয়টি জানায়। ছেলেকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করতে বলা হয়। এরপর ছেলের খোঁজ করতে থাকেন মনির আহাম্মদ। একপর্যায়ে তিনি জানতে পারেন, বাড়ির পাশের একটি সুপারিবাগানে অবস্থান করছেন জাকির। সেখান থেকে জাকিরকে ধরে এনে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন তিনি।
জানতে চাইলে রায়পুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার জামিলুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার পর পুলিশের কয়েকটি দল চরমোহনা গ্রামে অবস্থান করে। পরে বাবার সহযোগিতায় জাকির হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জাকির প্রতিমা ভাঙচুরের বিষয়টি স্বীকার করেছেন।