শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে ভারতকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠিয়েছে ঢাকা
Published: 13th, February 2025 GMT
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচার শুরু হয়েছে। প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে কূটনৈতিকপত্রের সাথে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক ব্রিফিংয়ে জনকূটনীতি বিভাগের মহাপরিচালক এবং মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মো.
সাপ্তাহিক এই ব্রিফিংয়ে প্রশ্ন ছিল বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার প্রত্যাবর্তন চুক্তির বিষয়ে আগ্রগতি আছে কিনা- এর জবাবে তিনি বলেন, “শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য, উপাত্ত ভারত সরকারকে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।”
আরো পড়ুন:
শেখ হাসিনাসহ আ.লীগ নেতাদের বিচারের রায় অক্টোবরের মধ্যে: আসিফ নজরুল
৩২ নম্বরের বেজমেন্টে পানি ছাড়া ‘কিছু পাওয়া যায়নি’
বাংলাদেশ সরকার উত্তরের জন্য কয়দিন অপেক্ষা করবে-এমন প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র বলেন, “আমরা এখনো কোনো উত্তর পাইনি। তবে আমরা উত্তরের প্রত্যাশা করে যাব।”
এই যে অপেক্ষা, তা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নাকি কূটনৈতিক সিদ্ধান্ত-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “উভয়ই”।
এর আগে, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছিলেন, “প্রত্যর্পণ চুক্তি থাকার পরও ভারত শেখ হাসিনাকে ফেরত না দিলে ওই চুক্তি লঙ্ঘন হবে।”
আসিফ নজরুল বলেন, “আমরা প্রত্যর্পণের জন্য চিঠি লিখেছি। এরপর ভারত যদি শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ না করে, তবে এটা বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের যে প্রত্যর্পণ চুক্তি রয়েছে সেটার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হবে। সেই ব্যাপারে আমরা বিশ্ব সমাজে পদক্ষেপ নেব, সেটা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ঠিক করা হবে।”
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এর মধ্যে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের যা যা করণীয় আছে আমরা করে যাচ্ছি। আরো কিছু করণীয় থাকলে ক্ষেত্র বিশেষে চিন্তা করে আমরা করব।”
ঢাকা/হাসান/সাইফ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ময়মনসিংহে জমির জাল কাগজপত্র তৈরি চক্রের হোতা গ্রেপ্তার
জমির দলিল, খতিয়ান, দাগ ও নাম পরিবর্তন করে নিমেষেই জাল কাগজপত্র তৈরি করতেন আলমগীর হোসেন (৩১)। নিজেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নামের সিল স্বাক্ষর তৈরি করে দিতেন। সেই জাল কাগজপত্র নিয়ে আদালতে মামলা ঠুকে দিয়ে গ্রামে চলত বিবাদ। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে জাল কাগজপত্র তৈরি চক্রের মূল হোতা আলমগীরকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
গ্রেপ্তার আলমগীর হোসেনের বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চর ঈশ্বরদিয়া ইউনিয়নে। অভিযানের সময় ৮টি জাল দলিল, বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নের ভূমিসংশ্লিষ্ট ২০ কর্মকর্তাদের ৬২টি সিল, ৩৬টি খোলা রাবার সিল, ১৪টি রাবার সিলের প্লাস্টিক হোল্ডার ও খসড়া কাগজ জব্দ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় আজ সোমবার বেলা তিনটার দিকে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম এম মোহাইমেনুর রশীদ চক্রটির তৎপরতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানান। তিনি বলেন, দেড় বছরে বিপুলসংখ্যক জমিজমার কাগজপত্র চক্রটি জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করেছে। জেলায় হত্যাসহ সহিংসতার ঘটনাগুলোর অধিকাংশ জমির মালিকানাসংক্রান্ত ঘটনাকে ঘিরে। চক্রটি পুরোপুরি শনাক্ত করতে পারলে জমিজমাসংক্রান্ত সমস্যা প্রশমিত করা যাবে। জব্দ করা কাগজপত্রগুলো বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠানো হবে।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, আলমগীর তাঁর বাড়িতে দেড় বছর ধরে ভূমিসংশ্লিষ্ট জাল দলিল ও নাম খারিজের দলিলাদি তৈরি করে আসছিলেন। যিনি জমির মালিক নন, তাঁকে মালিক বানিয়ে দিতেন। এ জন্য মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা নিতেন। নামজারির ক্ষেত্রে নতুন নাম সংযুক্ত করা কিংবা যিনি জমির প্রাপ্য নন, তাঁর নাম সংযুক্ত করে জমির অংশীদার বানিয়ে জালিয়াতির কাজ করতেন। চক্রটিতে আরও অন্তত চারজন সদস্য কাজ করেন বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা হয়েছে। সেই মামলায় আলমগীর হোসেনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আজ বিকেলে তাঁকে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ।