গণহত্যার বিচার চেয়ে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে বিএনপির অভিযোগ
Published: 13th, February 2025 GMT
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন ও ধ্বংস করার জন্য গণহত্যা চালানো হয়েছিল উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে অভিযোগ জমা দিয়েছে দলটি।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সই করা এই অভিযোগ জমা দেওয়া হয়। বিএনপির মামলা, গুম, খুন ও তথ্য সংরক্ষণবিষয়ক সমন্বয়ক মো.
অভিযোগে বিএনপি বলেছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে দলটির ৮৪৮ জন নেতা-কর্মী শহীদ হয়েছে। এই শহীদদের তালিকা অভিযোগের সঙ্গে যুক্ত করেছে বিএনপি।
অভিযোগে বলা হয়েছে, বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন ও ধ্বংস করার জন্য ষড়যন্ত্র করে গত ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত দমন-নিপীড়ন চালানো হয়। ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে দলটির নেতা-কর্মীদের ওপরে গণহত্যা চালানো হয়। এই ঘটনায় বিএনপি সারা দেশে ৮৪টি মামলা করেছে।
সালাহউদ্দিন খান প্রথম আলোকে বলেন, ৮৪৮ জন শহীদের মধ্যে বিএনপির পদধারী নেতা-কর্মী ৫৩৬ জন। বাকিরা বিএনপি সমর্থক, তাঁরা কোনো পদে নেই।
জেলায় জেলায় মামলা করে কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না দাবি করে সালাহউদ্দিন খান বলেন, ‘পুলিশ আসামি ধরছে না। তাই ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।’
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, শুরু থেকেই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা সারা দেশে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের পক্ষে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নামার নির্দেশ দেন। নির্দেশ পাওয়ার পর সারা দেশে বিএনপি ও দলটির অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা রাস্তায় নেমে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শুরু করেন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের পক্ষে বিএনপিসহ সর্বস্তরের মানুষ এই আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সারা দেশে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর গণহত্যা চালানো হয়। শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যই ছিল বিএনপির মতো একটি বড় দলকে নিশ্চিহ্ন ও ধ্বংস করা।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র গণহত য দলট র
এছাড়াও পড়ুন:
গুম-খুনে জড়িত সদস্যদের বিচার চেয়ে র্যাব কার্যালয়ের সামনে ‘শহীদি মার্চ’ সদর দপ্তরের সাম
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) যেসব সদস্য গত ১৬ বছরে গুম, খুন ও ক্রসফায়ারের সঙ্গে জড়িত, তাঁদের বিচারের দাবিতে ‘শহীদি মার্চ’ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। রাজধানীর উত্তরায় র্যাব সদর দপ্তরের সামনে জুলাই মঞ্চ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম আজ শুক্রবার বিকেলে এই কর্মসূচি পালন করে।
এই কর্মসূচি থেকে জুলাই গণহত্যার বিচার, এই গণহত্যায় জড়িত আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ অঙ্গসংগঠনগুলো নিষিদ্ধ ঘোষণা, গণহত্যায় অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলের সদস্য, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও বিচারের মুখোমুখি করার দাবিও জানানো হয়েছে।
‘শহীদি মার্চ’ শীর্ষক এই কর্মসূচিতে জুলাই মঞ্চের প্রতিনিধি সাকিব হোসাইন বলেন, র্যাব বাংলাদেশে এমন সব কাজ করেছে, যার ফলাফল হিসেবে জাতিসংঘ ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো র্যাবকে নিষিদ্ধের পরামর্শ দিয়েছে। র্যাবের বর্তমান মহাপরিচালক নিজে স্বীকার করেছেন, বিগত সময়ে র্যাব গুম, খুন ও ক্রসফায়ারের সঙ্গে জড়িত ছিল। অথচ সাত মাস পার হলেও এখনো র্যাবের যে সদস্যরা গুম, খুন ও ক্রসফায়ারের সঙ্গে জড়িত, তাঁদের তালিকা প্রকাশ করেনি র্যাব। পাশাপাশি চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে র্যাবের যাঁরা গণহত্যায় জড়িত, তাঁদের শাস্তির আওতায় আনা হয়নি।
জুলাই মঞ্চের আরেক প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বর্তমানে প্রশাসন কোনো সহযোগিতা করছে না। যারা স্বৈরাচারের আমলে নিয়োগ পেয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করা পর্যন্ত জুলাই মঞ্চের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
শহীদি মার্চে সংহতি জানিয়ে গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, বিগত সরকার র্যাবকে দলীয় বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সব সদস্য খারাপ নন। যাঁরা আওয়ামী লীগের দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ কিংবা পদোন্নতি পেয়েছিলেন, তাঁরাই হাসিনাকে রক্ষা করতে ছাত্র–জনতার ওপর গুলি চালিয়েছেন। তাঁদের চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। পুরো বাহিনীকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে না।
জুলাই মঞ্চের প্রতিনিধি অর্নব হুসেইনের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে মুতাছিরুল ইসলাম, মুন্তাজুল ইসলাম, সুরাইয়া আন্তা, আব্দুল নুর তালুকদার, ফুহাদ হাসান প্রমুখ বক্তব্য দেন।