ইউএনও-এর প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ বিএনপি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র ও নাগরিক কমিটির
Published: 13th, February 2025 GMT
বাগেরহাটের মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফিয়া শারমিনকে প্রত্যাহারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র ও নাগরিক কমিটি। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা পরিষদের সামনে তারা এ কর্মসূচি পালন করেন। এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় বিএনপি বিক্ষোভ মিছিল করে।
বুধবার নিজ কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ চার নেতা ইউপি চেয়ারম্যানকে নিয়ে মিটিং করেন ইউএনও। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র ও নাগরিক কমিটি এ কর্মসূচি পালন করছে। এসময় ইউএনও আফিয়া শারমিনকে ফ্যাসিবাদের দোসর আখ্যা দিয়ে বিভিন্ন শ্লোগান দেন ছাত্ররা। ইউএনওকে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রত্যাহার করা না হলে উপজেলা ঘেরাওসহ কঠোর কর্মসূচি পালনের হুশিয়ারি দেয় আন্দোলনকারী ছাত্র ও নাগরিক কমিটি। ঘটনাস্থলে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কর্মসূচি ঘিরে কঠোর অবস্থানে ছিল নৌ বাহিনী ও পুলিশ।
এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের চার ইউপি চেয়ারম্যানকে নিয়ে নিজ কার্যালয়ে গোপন মিটিংয়ের অভিযোগে ইউএনও আফিয়া শারমিনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করে পৌর বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন। পরে তারা ইউএনওর অপসারণের দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়। পৌরসভার সামনে বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এই ঘোষণা দেন তারা। সমাবেশে বক্তব্য রাখের বিএনপি নেতা এমরান হোসেন, আলাউদ্দিন, খোরশেদ আলম প্রমুখ।
উল্লেখ্য বুধবার সকালে নিজ কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের নেতা ও চাঁদপাই, মিঠাখালী, বুড়িরডাঙ্গা ও চিলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের নিয়ে ইউএনও আফিয়া শারমিন মিটিং করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ হন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
জানতে চাইলে এ বিষয়ে মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফিয়া শারমিন দাবি করেন, বুধবার সকালে তার কার্যালয়ে সামাজিক বনায়ন বিষয়ক একটি সভা হয়েছে। সেখানে উপজেলার চাঁদপাই ইউপি চেয়ারম্যান মোল্লা তরিকুল ইসলাম, চিলা ইউপি চেয়ারম্যান গাজী আকবর হোসেন, বুড়িডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান উদয় শংকর বিশ্বাস ও মিঠাখালী ইউপি চেয়ারম্যান উৎপল মণ্ডল ছাড়াও উপজেলা বিএনপি নেতা আব্দুল মান্নানও উপস্থিত ছিলেন। এখন তার (ইউএনও) বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল হচ্ছে। কেন বিএনপি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র এবং নাগরিক কমিটি এ মিছিল করছেন সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি ইউএনও।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইউএনও ব এনপ উপজ ল ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
বৈষম্যবিরোধীদের তোপের মুখে কার্যালয় ছেড়েছেন পার্বতীপুরের ইউএনও, বাসায় চলছে দাপ্তরিক কাজ
দিনাজপুরের পার্বতীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা-কর্মীদের তোপের মুখে কার্যালয় ছেড়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতেমা খাতুন। গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে প্রশাসনের সহায়তায় তিনি কার্যালয় ত্যাগ করেন।
বুধবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচির পর আজ বৃহস্পতিবার কার্যালয়ে যাননি ইউএনও ফাতেমা খাতুন। তিনি তাঁর বাসভবন থেকেই দাপ্তরিক কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন।
এর আগে স্বেচ্ছাচারিতা ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে ইউএনও ফাতেমা খাতুনের অপসারণের দাবিতে গতকাল বেলা তিনটায় উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার-সংলগ্ন সড়কে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মানববন্ধন শেষে বিকেল সাড়ে চারটায় বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ইউএনও কার্যালয়ে যান আন্দোলনকারীরা। এ সময় তাঁরা ইউএনওকে আওয়ামী লীগের দোসর, দুর্নীতিবাজ আখ্যা দিয়ে স্লোগান দেন। তাঁকে কার্যালয় ত্যাগ করতে দুই ঘণ্টার সময় বেঁধে দেওয়া হয়। এরপর বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় কার্যালয় ছাড়েন ইউএনও ফাতেমা খাতুন। ঘটনার পরপরই ইউএনও কার্যালয় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।
আন্দোলনকারী নেতা-কর্মীদের দাবি, ইউএনও ফাতেমা খাতুন দীর্ঘদিন ধরেই পার্বতীপুরে একক স্বেচ্ছাচারিতার রাজত্ব কায়েম করেছেন। নানা অনিয়মের অভিযোগে পরপর দুবার বদলির আদেশ হলেও অজ্ঞাত কারণে তা স্থগিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের লোকজনের সঙ্গে তাঁর সংশ্লিষ্টতা আছে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির পার্বতীপুর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘ইউএনও একজন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা। তিনি ফ্যাসিবাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন। আমরা কোনোভাবেই তাঁকে ছাড় দেব না। আমরা এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর অপসারণের দাবি করেছি।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বুধবার ইউএনও ফাতেমা খাতুন বলেছিলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এর কোনো প্রমাণ দিতে পারবে না কেউ।’
আজ দুপুরে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারাই বিষয়টি দেখছেন। এ ছাড়া ইউএনও কার্যালয়ে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী টহল দিচ্ছে। তিনি বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও হঠাৎ করে অস্বাভাবিক হওয়ার আশঙ্কা আছে।