দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত গ্লোবাল গভর্মেন্ট সামিটে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ দায়িত্বশীলতার সঙ্গে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার প্রসঙ্গে প্রয়োজনীয় রেগুলেটরি ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট প্রণয়নে বৈশ্বিক সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।

বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত সামিটে প্রধান বিচারপতি ড. বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ কি-নোট স্পিকার হিসেবে বক্তব্য রাখেন। তিনি তার বক্তব্যে আধুনিক প্রযুক্তি, বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনার বিষয়ে এবং বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় আইনি কাঠামো তৈরিতে রেগুলেটরি ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট এবং বৈশ্বিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বিশদ আলোকপাত করেন। 

অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন সংযুক্ত আরব আমিরাত মন্ত্রিসভার সদস্য মরিয়াম আল হাম্মাদি। অধিবেশনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা, আইনজ্ঞ ও বুদ্ধিজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান বিচারপতি তার বক্তব্যে দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং অভিযোজনসক্ষম আধুনিক আইনি কাঠামো তৈরির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি উল্লেখ করেন আধুনিক বিশ্বে এআই স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, অর্থনীতি এবং প্রশাসনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও এআই এর ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন নৈতিক ও আইনি চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যা মোকাবিলায় আমাদের নতুন করে প্রস্তুত হতে হবে।  

তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিচালনার ক্ষেত্রে নাগরিকের ব্যক্তিগত অধিকার রক্ষার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, যে এআই এর প্রয়োগ বৈশ্বিকভাবে প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম বিধায় এর ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে একটি সম্মিলিত নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি প্রয়োজন। তাই তিনি এ বিষয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নীতিনির্ধারক ও নেতাদের সমন্বিত প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। 

তিনি রেগুলেটরি ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট প্রণয়নের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে সময়ের আবর্তে প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে যেন তা সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় সে বিষয়ে বিশ্বনেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। বিশেষভাবে তিনি উল্লেখ করেন যে এআই কিংবা এরূপ অন্য কোনো আধুনিক প্রযুক্তির জটিলতা মোকাবিলায় এককভাবে কোনো নির্দিষ্ট দেশীয় আইনি কাঠামো যথেষ্ট নয়। এ প্রসঙ্গে তিনি সিভিল এবং কমন ল’ ফ্রেমওয়ার্কের সমন্বয়ে অভিযোজনযোগ্য আধুনিক আইনি কাঠামো গঠনের জন্য বিশ্বের আইনজ্ঞ ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এআইয়ের জন্য আধুনিক নিয়ন্ত্রণ কাঠামো শুধুমাত্র বর্তমান প্রজন্মের জন্য প্রয়োজনীয় নয়। বরং এরূপ নিয়ন্ত্রণ কাঠামো ভবিষ্যত প্রজন্মের কল্যাণও নিশ্চিত করবে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ডিজিটাল যুগের জটিলতা মোকাবিলা করে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের সুবিধা গ্রহণ করতে পারলে ভবিষ্যতের বিচার ব্যবস্থাও আরও সুদৃঢ় হবে। এ লক্ষ্যে প্রধান বিচারপতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার, আইন বিশেষজ্ঞ এবং প্রযুক্তিবিদদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক সহয গ ত ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

ন্যায়বিচার ও মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি নিশ্চিত করতে হবে

চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের উদ্যোগে আদালতের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্স সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়। চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ার, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট (যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ) মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট (যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ) মো. সোয়েব উদ্দীন খান, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল,  মো. আবু বকর সিদ্দিক, মো. আলমগীর হোসেন,  মোহাম্মদ মোস্তফা, এস. এম. আলাউদ্দিন মাহমুদ ও নুসরাত জাহান জিনিয়া। 
এছাড়া কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন উপ-পুলিশ কমিশনার (প্রসিকিউশন) হুমায়ুন কবির, উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) আমীরুল ইসলাম, জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের প্রতিনিধি সাকিব শাহরিয়ার, চমেক পরিচালকের প্রতিনিধি ডা. জুনায়েদ আহমেদ, ফরেনসিক মেডিসিনের ডা. খালেদ হাসান, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটির আহবায়ক এ. কে. এম মকবুল কাদের চৌধুরী, অ্যাডহক কমিটির সদস্য মুহাম্মদ শামসুল আলম এবং মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর মফিজুল হক ভূইয়া।
কনফারেন্সে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সিআইডি) সাইকুল আহমেদ, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (প্রসিকিউশন) মো. মফিজ উদ্দিন, টুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার নিত্যানন্দ দাশ, পুলিশের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা, সিনিয়র জেল সুপার, পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক, চট্টগ্রাম মহানগরীর ১৬টি থানার অফিসার ইনচার্জ, মহানগর গোয়েন্দা শাখার পুলিশ কর্মকর্তা ও প্রবেশন কর্মকর্তারা। 
কনফারেন্সের শুরুতে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মিজানুর রহমান বিগত সভার সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের অগ্রগতি তুলে ধরে বিচারাধীন মামলার বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালনের জন্য  মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ও সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইনচার্জদের দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। আদালতে আসা-যাওয়ার পথে পর্যাপ্ত ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েনের বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেন চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট।
 চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটনের সকল থানার অফিসার ইনচার্জদের দক্ষতার সঙ্গে তদন্তকাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন। তিনি মামলার সাক্ষী উপস্থাপন নিশ্চিত করতে এবং সাক্ষীদের নিরাপত্তা বিধানে সংশ্লিষ্ট সকলকে কার্যকর ভূমিকা পালনের বিষয়ে নির্দেশনা দেন। চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে আগের চেয়ে দ্রুত মেডিকেল সনদ দেওয়ার বিষয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রতিনিধি ডা. জুনায়েদ আহমেদের মাধ্যমে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেন। 
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটির আহবায়ক আইনজীবী এ.কে. এম মকবুল কাদের চৌধুরী আদালত এলাকার নিরাপত্তা 


নিশ্চিতের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন এবং আদালতে আসা-যাওয়ার পথে অস্থায়ী ভাসমান দোকান যাতে বসতে না পারে সে বিষয়ে প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা জন্য অনুরোধ করেন। 
বিজ্ঞ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মোঃ আলমগীর হোসেন তদন্তকার্যে আরো সচেতন হওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেন। বিজ্ঞ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মোঃ আবু বকর সিদ্দিক চট্টগ্রাম মহানগরীতে চুরি-ছিনতাই প্রতিরোধের ক্ষেত্রে আইন-শৃংখলা বিঘ্নকারী অপরাধ আইনের যথাযথ প্রয়োগের উপর গুরুত্বারোপ করেন। 
উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) জনাব আমীরুল ইসলাম এবং পুলিশ প্রসিকিউশনের উপ-পুলিশ কমিশনার জনাব হুমায়ুন কবির নিয়মিত পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসী কনফারেন্স আয়োজনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।  
মাননীয় চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সমাপনী বক্তব্যে বলেন, ফৌজদারী বিচার ব্যবস্থায় বিচার প্রশাসন, নির্বাহী বিভাগ, পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগ একে অপরের পরিপূরক। মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা বৃদ্ধি ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিজ নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে হবে। সামনের দিনগুলোতে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর পারষ্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে ফৌজদারী বিচার ব্যবস্থায় আরো গতিশীলতা আসবে মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে কনফারেন্সের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাজা স্থগিত, আপিল করার অনুমতি পেলেন মীর নাসির ও মীর হেলাল
  • ফজলে করিমের দুই ছেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
  • মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পেটানোর ঘটনায় মামলা
  • বাজেটে সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার সুপারিশ সিপিডির
  • ‘উৎকোচের’ টাকা নির্ধারণ, শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি-সম্পাদককে শোকজ
  • ঝালকাঠি জেলা জজ আদালতের সাবেক পিপির জামিন নামঞ্জুর, তিন মামলায় কারাগারে
  • রায়ে সন্তুষ্ট আবরার ফাহাদের বাবা, দ্রুত কার্যকরের প্রত্যাশা
  • আর্থিকখাতের শৃংখলা ফেরাতে নতুন দুটি আইন হচ্ছে, সংশোধন হচ্ছে ছয় আই
  • আবরার হত্যা: হাইকোর্টের রায় আজ
  • ন্যায়বিচার ও মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি নিশ্চিত করতে হবে