শাহবাগে নিয়োগ বাতিল হওয়া শিক্ষকদের অবরোধ, ছত্রভঙ্গ করল পুলিশ
Published: 13th, February 2025 GMT
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে বাতিল হওয়া নিয়োগ ফিরে পাওয়ার দাবিতে আবারও ঢাকার শাহবাগে সড়ক অবরোধ করেছিলেন চাকরিপ্রত্যাশীরা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশ তাঁদের জলকামান ব্যবহার করে সরিয়ে দিয়েছে। এ সময় কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, বেলা একটার দিকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে বাতিল হওয়া কয়েক শ চাকরিপ্রত্যাশী শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। এ সময় চারদিকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পুলিশ তাঁদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু তাঁরা পুলিশের কথা শোনেননি। একপর্যায়ে বেলা দুইটার দিকে পুলিশ জলকামান থেকে গরম পানি ছিটিয়ে ও ধাওয়া দিয়ে তাঁদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেন। এরপর রাস্তায় যান চলাচল শুরু হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
আজ দুপুরে যোগাযোগ করা হলে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.
আন্দোলনরত শিক্ষকেরা বলেন, ‘আমরা মেধা দিয়ে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছি। পুলিশ ভ্যারিফাই করেই আমাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমাদের কেন আন্দোলন করতে হবে। আমাদের দাবি মানতে হবে। আমরা সাত দিন ধরে একটি যৌক্তিক দাবির জন্য আন্দোলন করছি। কোনো উপদেষ্টা কথা বলছেন না। আমরা কী এই দেশের নাগরিক নই? আমরা তো ছাত্রদের পাশে ছিলাম। এখন আমাদের পাশে ছাত্র প্রতিনিধি নেই কেন?’
নিয়োগ পুনর্বহালের দাবিতে কয়েক দিন ধরেই আন্দোলন করছেন শিক্ষকেরা। আন্দোলনের অংশ হিসেবে এর আগেও তাঁরা সড়ক অবরোধ করেন। সে সময় পুলিশ তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
গতকাল বুধবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে আন্দোলন চলাকালে সন্ধ্যার আগে নিয়োগপ্রত্যাশীরা ঘোষণা দেন আজ সকাল ৯টা থেকে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি ‘জাস্টিস ফর টিচার’, ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ শুরু হবে। ৬ হাজার ৫৩১ জনের যোগদান নিশ্চিত করতে এই কর্মসূচি দেওয়া হয়।
এর আগে গত সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিবের সঙ্গে চাকরিপ্রার্থীরা বৈঠক করেন। উচ্চ আদালতের আদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
তিন ধাপে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু তৃতীয় ধাপ নিয়ে প্রহসন চলছে।
২০২৩ সালের ১৪ জুন তৃতীয় ধাপের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। লিখিত-মৌখিক পরীক্ষা শেষে গত বছরের ৩১ অক্টোবর ফলাফল প্রকাশিত হয়। এতে ৬ হাজার ৫৩১ জন উত্তীর্ণ হন। নিয়োগবঞ্চিত কয়েকজন রিট করলে ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। পরে ৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট তাদের নিয়োগ কার্যক্রম বাতিল করে রায় দেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ধ কর আম দ র র জন য অবর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
সরিষাবাড়ীতে ধর্ষণের অভিযোগে মাদ্রাসা ঘেরাও, অভিযুক্ত শিক্ষক আটক
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে মাদ্রাসায় ১২ ও ১৩ বছর বয়সী দুই ছাত্রকে ধর্ষণের অভিযোগে এক শিক্ষককে আটক করা হয়েছে। এর আগে গতকাল শনিবার রাতে বিক্ষুব্ধ লোকজন প্রায় আড়াই ঘণ্টা মাদ্রাসাটি ঘেরাও করে রাখে।
পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গতকাল রাত ১০টার দিকে অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে থানায় নিয়ে যান।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুই ছাত্র ওই মাদ্রাসার আবাসিকে থাকে। কয়েক দিন আগে পর্যায়ক্রমে তাদের দুজনকে ওই শিক্ষক ধর্ষণ করেন—এমন অভিযোগ তোলেন স্বজনেরা। ছাত্রদের স্বজনেরা বিষয়টি স্থানীয় লোকজনকে জানান। স্থানীয় লোকজন গতকাল রাতে ওই মাদ্রাসার সামনে অবস্থান নেন। ধীরে ধীরে লোকজন বাড়তে থাকে। তাঁরা বিক্ষোভ করতে থাকেন। এতে মাদ্রাসায় ওই শিক্ষক অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেন। প্রথমে পুলিশ ও পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং ওই শিক্ষককে থানায় নিয়ে যান।
স্থানীয় লোকজন জানান, ওই শিক্ষক প্রায় দুই থেকে তিন মাস ধরে ওই ছাত্রদের ধর্ষণ করে আসছিলেন। আজ (গতকাল) বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে। এরপর স্থানীয় লোকজন মাদ্রাসা ঘেরাও করেন। লোকজন ব্যাপক উত্তেজিত ছিল। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চাঁদ মিয়া গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, দুই ছাত্রকে ধর্ষণের অভিযোগে বিক্ষুব্ধ জনতা ওই মাদ্রাসা ঘেরাও করেন। লোকজন শিক্ষকের বিচারের দাবিতে স্লোগানও দিচ্ছিলেন। কোনোভাবেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছিল না। অনেক কষ্টে বিক্ষুব্ধ লোকজনকে বুঝিয়ে ওই শিক্ষককে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। শিক্ষক ও ছাত্রদের পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।