মার্কিন কূটনৈতিক পরিসরে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়ার সহকারী সচিবের দায়িত্ব পেলেন এস পল কাপুর। এই ভারতীয় ডোনাল্ড লু’র স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন। ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

পল কাপুর ক্যালিফোর্নিয়ার বাসিন্দা এবং ভারত ও পাকিস্তান বিষয়ক বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচিত। তিনি পাকিস্তানের কঠোর সমালোচক বলেও বিভিন্ন মহলে পরিচিত।

প্রসঙ্গত, ডোনাল্ড লু’র বিরুদ্ধে পাকিস্তানে ইমরান খান সরকারের পতনের পেছনে কলকাঠি নাড়ার অভিযোগ ছিল। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বক্তব্য দিয়েছিলেন। ট্রাম্প দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর বাইডেন প্রশাসনে নিয়োগ পাওয়া লু দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বিতীয় মেয়াদে ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন পল কাপুর।

কূটনৈতিক মহলের মতে, পল কাপুরের নিয়োগের ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় জঙ্গি তৎপরতা দমনে পাকিস্তান ও তাদের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের বিরুদ্ধে ভারতের লড়াই সহজ হতে পারে।

নতুন দায়িত্ব নেওয়ার আগে পল কাপুর মার্কিন নৌবাহিনীর পোস্ট গ্র্যাজুয়েট স্কুলে অধ্যাপনা করতেন। এছাড়া, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে তিনি হোয়াইট হাউসের পররাষ্ট্রবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পলিসি প্ল্যানিং বিভাগে দায়িত্ব পালন করেছেন।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদে বেশ কয়েকজন ভারতীয় বংশোদ্ভূতকে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দিয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি ভারত-মার্কিন সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করতে ভূমিকা রাখবে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীম মোল্লা হত্যাকাণ্ডে জড়িত পাঁচজনকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে পাঁচ শিক্ষার্থীকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। একই হত্যাকাণ্ডে জড়িত সাবেক তিন শিক্ষার্থীর সনদ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।

সোমবার দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ৩০৪ ধারার (মৃত্যু ঘটানোর অভিপ্রায় নিয়ে করেনি) মামলা ৩০২ ধারায় (ইচ্ছাকৃত হত্যাকাণ্ড) রূপান্তরিত হওয়ার ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে সিন্ডিকেট সভায়। 

সভায় উপস্থিত সিন্ডিকেট সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, ‘শামীম মোল্লার ঘটনায় যাদের শাস্তি প্রদান করা হয়েছিল তাদের মধ্যে যারা বর্তমান শিক্ষার্থী রয়েছেন, তাদের ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। জড়িতদের যাদের ছাত্রত্ব আগেই শেষ হয়েছিল, তাদের একাডেমিক সনদ ছয় মাসের জন্য স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্তগুলো অভিযুক্তদের যে দিন থেকে সাময়িক বহিষ্কার (১৯ সেপ্টেম্বর) করা হয়েছিল, সেদিন থেকে গণনা করা হবে।’ সে হিসেবে ১৯ মার্চ তথা আগামীকাল বুধবার অভিযুক্তদের বহিষ্কারাদেশ ও সনদের স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষ হবে৷

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শামীম মোল্লাকে একদল শিক্ষার্থী পিটুনি দেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে আশুলিয়া থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। হস্তান্তরের প্রায় দুই ঘণ্টা পর শামীম মোল্লা মৃত্যুবরণ করেন বলে জানা যায়।

ওই দিন রাতেই বামপন্থী ও কিছু সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে তড়িঘড়ি করে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আটজন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার এবং মামলা দায়ের করে প্রশাসন। ঘটনা খতিয়ে দেখতে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনের পর গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে অভিযুক্তদের মধ্যে বর্তমান শিক্ষার্থীদের ছয় মাসের বহিষ্কার এবং সাবেক শিক্ষার্থীদের ছয় মাসের জন্য একাডেমিক সনদ স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভায় উপস্থিত ছিলেন এমন এক সিন্ডিকেট সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ‘তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, শামীম মোল্লাকে শিক্ষার্থীদের দলবদ্ধ পিটুনির পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। এ সময় শামীম মোল্লা হেঁটে হেঁটে গাড়িতে ওঠে। এর প্রায় দুই ঘণ্টা পর শামীম মোল্লার মৃত্যুর খবর জানাজানি হয়। ওই সময়টাতে পুলিশ হেফাজতে ছিল শামীম মোল্লা।’

যাদের শাস্তি দেওয়া হয়েছিল

শামীম মোল্লার হত্যাকাণ্ডের দিন, তথা ১৮ সেপ্টেম্বর রাতেই আটজনকে সাময়িক বহিষ্কার করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তারা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী এবং ছাত্রদলের নেতা মোহাম্মদ রাজন মিয়া ও রাজু আহমেদ, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী সোহাগ মিয়া। ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা হামিদুল্লাহ সালমান, বায়োটেকনোলজি ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার সমন্বয়ক আহসান লাবিব, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুজ্জামান আতিক, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মাহমুদুল হাসান রায়হান এবং ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া।

আরও পড়ুনজাহাঙ্গীরনগরে শামীম মোল্লাকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, একজনকে আটক২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ