স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর আমৃত্যু কারাদণ্ড
Published: 13th, February 2025 GMT
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক বেগম সালমা খাতুন এ রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত শ্রী রুপ কুমার চন্দ্র সরদার (৩১) উপজেলার বিনোদবাড়ি গ্রামের শ্রী গোপাল চন্দ্র সরদারের ছেলে।
নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-২ এর পিপি মাসুদুর রহমান বলেন, ‘‘মামলার তিন আসামির মধ্যে দুজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বিচারক একজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও অপর আসামি শ্রীমতী ভাজেল রানী সরদারকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন। মামলা চলাকালে আরেক আসামি শ্রী শ্যামল চন্দ্র সরকারের মৃত্যু হওয়ায় তাকে অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’’
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে শ্রী রুপ কুমার চন্দ্র সরদারের সঙ্গে বগুড়া জেলার শেরপুর থানার দলিল গ্রামের শ্রী অনিল চন্দ্র সরদারের মেয়ে ববিতা রানী সরদারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে রুপ কুমার এক লাখ টাকা যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন করে আসছিলেন। এর জেরে, ২০১৬ সালের ৯ নভেম্বর স্ত্রীকে হত্যা করেন তিনি। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
ঢাকা/রাসেল/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্র নির্যাতনের ঘটনায় সাবেক বুয়েট ভিসিসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ক্যাম্পাসে ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি ছাত্র নির্যাতনের ঘটনায় সাবেক উপাচার্য ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার, বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলা করা হয়েছে। গত রোববার বুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থী ভুক্তভোগী আল আরাফাত হোসেন এ মামলা করেন।
ঘটনার সময় বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, হাসান সরোয়ার সৈকত, মিনহাজুল ইসলাম, নীলাদ্রি নিলয়, আকাশ দেবনাথ, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, রাউফুন রাজন ঝলক, রাফাত ইমতিয়াজ চৌধুরী, মেহেদি হাসান রবিন, ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না, জিয়া উদ্দিন রুবেল, অর্নব চক্রবর্তী সৌমিক, মেহেদি হাসান, সত্য প্রসাদ মজুমদারসহ ১০-১৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। ছাত্র কল্যাণ পরিচালক সত্য প্রসাদ মজুমদার পরবর্তীতে দুই মেয়াদে উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেন আর বুয়েট ছাত্রলীগের সেমসয়কার সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল বর্তমানে আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত।
এজাহারে বলা হয়েছে, বুয়েট ক্যাম্পাসের জিমনেসিয়ামের পেছনে ২০১৮ সালের ২৪ জানুয়ারি বিকেলে ছাত্রশিবিরের রাজনীতিতে যুক্ত থাকার কথা বলে বেধড়ক মারধর করেন মেহেদী হাসান রাসেলসহ ২০ থেকে ২৫ জন। এ সময় আল আরাফাত হোসেন অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে মুখে পানি ছিটিয়ে জ্ঞান ফিরলে আবার পেটাতে শুরু করে আসামিরা। এসময় মারধরকারীরা আল আরাফাত হোসেনকে এও বলেন, 'আর সময় পাবি না, কালিমা পড়ে নে।' পরেরবার জ্ঞান ফিরে আল আরাফাত নিজেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্ট্রেচারে শোয়া অবস্থায় দেখতে পান।
এজাহারে বলা হয়, রাজশাহী নিউ ডিগ্রি কলেজে একসঙ্গে উচ্চমাধ্যমিক পড়া সহপাঠী হাসান সরোয়ার সৈকত সেদিন আল আরাফাত হোসেনকে স্ট্যাম্প দিয়ে পেটান আর বলতে থাকেন, ‘তুই শিবির করতি, তুই শিবিরের মেসে থাকতি।’
মারধরের আগে ছাত্র কল্যাণ পরিচালক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার উপস্থিত হয়ে কী হয়েছে জানতে চাইলে মেহেদী হাসান রাসেল বলেন, স্যার এগুলো ছোট সমস্যা আমরা মিটিয়ে নেব। সেসময় অপর শিক্ষক হুমায়ুন কবীর ছাত্র কল্যাণ পরিচালককে অনুরোধ করেন যেন আল আরাফাত হোসেনকে তার সঙ্গে নিয়ে যান। কিন্তু তিনি তা না শুনে তড়িঘড়ি করে চলে যান। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আল আরাফাতকে জিজ্ঞাসাবাদ ও নির্যাতন শুরু করেন।
ঘটনার সময় আল আরাফাত হোসেনের জুনিয়র আলি আম্মার মুয়াজ (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ২০১৬ ব্যাচ) এবং মুহাম্মাদ শামসুজ্জামান (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ২০১৬) প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন বলেও জানা গেছে।
শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. স্বপন মিয়া মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মুনসুরের কাছে মামলা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি সমকালকে বলেন, বুয়েটে ছাত্র নির্যাতনের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত চলছে। এর সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।