সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলায় তাঁদের ভাড়াবাড়ির নিরাপত্তাকর্মী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবিরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন মামলাটির তদন্তে গঠিত টাস্কফোর্সের সদস্যরা।

হুমায়ুন কবিরকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার-২ এর ফটকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

এর আগে গত ২৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, এটিএন বাংলার সাবেক সাংবাদিক জ ই মামুন ও টেলিভিশন চ্যানেলটির চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমানের ছোট ভাই মাকসুদুর রহমানকে ওই হত্যাকাণ্ড নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

টাস্কফোর্স সূত্র জানায়, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের পর রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে এ দম্পতির ভাড়াবাড়ির নিরাপত্তাকর্মী হুমায়ুন কবিরকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে মামলাটি তদন্তে গঠিত টাস্কফোর্স সদস্যরা এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে হুমায়ুনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আবেদন করেন। আদালত তাঁকে কাশিমপুর কারাগার-২–এর ফটকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ জিজ্ঞাসাবাদ করা হলো তাঁকে।

এর আগে গত ২৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, এটিএন বাংলার সাবেক সাংবাদিক জ ই (জহিরুল ইসলাম) মামুন ও টেলিভিশন চ্যানেলটির চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমানের ছোট ভাই মাকসুদুর রহমানকে ওই হত্যাকাণ্ড নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি পশ্চিম রাজাবাজারের বাসায় এ সাংবাদিক দম্পতি খুন হন। সাগর মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক ছিলেন। আর রুনি ছিলেন এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক।

আরও পড়ুনসাগর-রুনি হত্যার ১৩ বছর: ৬ বছর মামলার কার্যত কোনো তদন্ত হয়নি ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ওই হত্যাকাণ্ডে রুনির ভাই নওশের আলম বাদী হয়ে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেছিলেন। প্রথমে এ মামলা তদন্ত করেছিল শেরেবাংলা নগর থানা–পুলিশ। চার দিন পর মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়।

তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার ৬২ দিনের মাথায় ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্টে ব্যর্থতা স্বীকার করে ডিবি। পরে আদালত র‍্যাবকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। গত বছরের ৪ নভেম্বর র‍্যাবের হাত থেকে পিবিআই মামলার তদন্তের দায়িত্ব বুঝে নেয়।

গত বছরের ২৩ অক্টোবর সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্তে চার সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। টাস্কফোর্সকে এ মামলার তদন্ত ছয় মাসের মধ্যে শেষ করে হাইকোর্টে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুনসাগর-রুনি হত্যার বিচার হতেই হবে, না হলে আন্দোলন১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ জ ঞ স ব দ কর র রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

শচীনের গৌরবের নতুন মানদণ্ড সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি

অলৌকিক ঘটনা খুবই বিরল। তবে ক্রিকেটে ‘ঈশ্বর’ নিজে (শচীন টেন্ডুলকর) এগুলোকে যেন সাধারণ ব্যাপার বানিয়ে ফেলেছিলেন। তার গৌরবময় ক্রিকেট ক্যারিয়ারে অসংখ্য মাইলফলক ছোঁয়ার কৃতিত্ব রয়েছে। তবে সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি অর্থাৎ ১০০টি আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি এখনো তার সেরা অর্জনগুলোর মধ্যে অন্যতম।

২০১২ সালের এই দিনে (১৬ মার্চ), ‘মাস্টার ব্লাস্টার’ এক অভূতপূর্ব কীর্তি গড়েছিলেন এবং ক্রিকেট ইতিহাসের স্মরণীয় এক মুহূর্ত উপহার দিয়েছিলেন।

আরো পড়ুন:

সৌদি ক্রিকেট লিগ কি আইপিএলকে টেক্কা দিতে পারবে?

নতুন শুরুতে পুরোনো পাকিস্তান

সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তটি ঘটেছিল ২০১২ সালের এশিয়া কাপে। ১৬ মার্চ, বাংলাদেশের বিপক্ষে ব্যাটিং করার সময় টেন্ডুলকর সেই স্বপ্নের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেন। তার ঐতিহাসিক অর্জনের সাথে সাথে পুরো ক্রিকেট বিশ্ব উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে, আর এই মহাকাব্যিক কীর্তি চিরদিনের জন্য ইতিহাসের পাতায় স্থান পায়।  

শততম সেঞ্চুরিতে মাস্টার ব্লাস্টারের ইতিহাস:
ক্রিকেট দুনিয়ায় শচীন টেন্ডুলকরের উত্তরাধিকার অমলিন। তার অসংখ্য রেকর্ডের মাঝে, ১০০টি আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি এখনো গর্বের এক স্মরণীয় অধ্যায়। ২০১২ সালের এশিয়া কাপে তিনি এই অবিস্মরণীয় কীর্তি গড়েন। টুর্নামেন্টের চতুর্থ ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে ব্যাট করতে নেমে তিনি এক স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করেন এবং চিরকালীন মহিমার অংশ হয়ে যান।  

ভারতের হয়ে ইনিংসের সূচনা করেছিলেন টেন্ডুলকর ও গম্ভীর। গম্ভীর দ্রুত ফিরে গেলে, মাস্টার ব্লাস্টার সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন এবং বিরাট কোহলি ও সুরেশ রায়নার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন।  

ক্যারিয়ারের শেষ পর্যায়ে এসেও তিনি ইতিহাস লিখতে থামেননি। এক বছর অপেক্ষার পর, অবশেষে তিনি ১৪৭ বলে ১১৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে নিজের ৪৯তম ওয়ানডে শতক পূর্ণ করেন। আর এর সাথেই তিনি স্পর্শ করেন সেই স্বপ্নের ১০০তম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি। এটি শুধুই ব্যক্তিগত সাফল্য ছিল না, বরং খেলায় শ্রেষ্ঠত্বের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন।

শচীনের ১১৪, কোহলির ৬৬ ও সুরেশ রায়নার ৫১ রানের ইনিংসে ভর করে ভারত ৫ উইকেটে ২৮৯ রান সংগ্রহ করে।

শচীনের অনন্য রেকর্ড ছোঁয়ার দিনে ভারতের হার:  
টেন্ডুলকরের অসাধারণ সেঞ্চুরি এবং বিরাট কোহলি ও সুরেশ রায়নার কার্যকরী ইনিংস সত্ত্বেও বোলিং ব্যর্থতায় জয় হাতছাড়া হয়ে যায় ভারতের। ২৯০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতে নাজিমউদ্দিন আউট হওয়ার পর দ্বিতীয় উইকেটের জন্য ভারতকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়।

তামিম ইকবাল (৭০), জহিরুল ইসলাম (৫৩), নাসির হোসেন (৫৪), সাকিব আল হাসান (৪৯) ও মুশফিকুর রহিমের (৪৬*) দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের সামনে ভারতীয় বোলাররা চাপে পড়ে যায়।

কঠিন সময়েও প্রভীন কুমার ৩টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নেন, আর অশ্বিন ও জাদেজা ১টি করে উইকেট নেন। তবে দুর্দান্ত সূচনা সত্ত্বেও, শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেটে ম্যাচ হারতে হয় ভারতকে, যা ছিল এক হৃদয়বিদারক পরাজয়।

৩১ বলে ৪৯ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন সাকিব আল হাসান।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শচীনের গৌরবের নতুন মানদণ্ড সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি