রাস্তায় দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে সমন্বিত সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে রোড সেফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশ।

সড়কের প্রতিদিনের দুর্ঘটনার চিত্র উপস্থাপনের জন্য সরকারকে কেন্দ্রীয় ডেটাবেজ তৈরিরও তাগিদ দিয়েছে ৯টি সংগঠনের প্ল্যাটফর্ম রোড সেফটি কোয়ালিশন।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরেন জোটের সদস্য নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)-এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন। গত বছর জারি করা মোটরযান গতিসীমা বাস্তবায়নের দাবি জানান তিনি।

১৮ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি মরক্কোর মারাকাসে গ্লোবাল মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্স অন রোড সেফটি আয়োজন করা হয়েছে। এই সম্মেলনের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘এক বিশ্ব এক সড়ক জীবনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’। ওই সম্মেলনকে সামনে রেখে আজ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ব্র্যাকের রোড সেফটি ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ ও স্টেপসের নির্বাহী পরিচালক রঞ্জন কর্মকার।

ইলিয়াস কাঞ্চন তাঁর বক্তব্যে বলেন, দেশে সড়ক নিরাপত্তার বিষয়ে এখন সুনির্দিষ্ট কোনো আইন বা বিধি নেই। তাই সরকারের উচিত হবে একটি সমন্বিত সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা, যা হতে হবে প্রমাণভিত্তিক সাফল্য সেইফ সিস্টেম অ্যাপ্রোচের আলোকে। তিনি বলেন, সড়কে হতাহতের পরিসংখ্যানের জন্য কাঠামোগত ব্যবস্থা যেমন নেই, তেমনি নেই দুর্ঘটনার সুনির্দিষ্ট তথ্য। সড়কে দুর্ঘটনার প্রকৃত চিত্র উপস্থাপনের জন্য সরকারকে একটি কেন্দ্রীয় ডেটাবেজ তৈরির উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, গত বছর মোটরযান গতিসীমা নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল। তবে এর বাস্তবায়ন ও প্রয়োগের নির্দেশনা না থাকায় সুফল মিলছে না। এ জন্য সরকারের উচিত দ্রুততম সময়ের মধ্যে গতিসীমা যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য একটি নির্দেশিকা তৈরি করা।

মোটরসাইকেলের চালকদের জন্য একটি স্ট্যান্ডার্ড হেলমেট নির্দেশিকা তৈরি করার দাবি জানান ইলিয়াস কাঞ্চন।

গত বছর জারি করা মোটরযান নির্দেশিকায় সিটি করপোরেশন এলাকায় মোটরসাইকেলের সর্বোচ্চ গতিসীমা ৩০ বেঁধে দেওয়ার বিষয়ে বিভিন্ন মহলের আপত্তি রয়েছে। এ বিষয়ে রোড সেফটি কোয়ালিশনের বক্তব্য কী এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে খালিদ মাহমুদ বলেন, পৃথিবীর বড় বড় শহরে মোটরসাইকেলের সর্বোচ্চ গতিসীমা ৩০ থেকে ৪০। বাংলাদেশেও এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন সড়ক পরিবহন আইন রয়েছে। কিন্তু এই আইন দিয়ে সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। সে জন্য তাঁরা আলাদা সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের দাবি জানাচ্ছেন।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, মরক্কোর মারাকাসে শুরু হতে যাওয়া সম্মেলনে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি বা কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দিকে বেশি মনোযোগ দিতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। রাস্তা নিরাপদ করতে হবে। পথচারী ও সাইক্লিস্টদের নিরাপত্তার জন্য অগ্রাধিকার দিতে হবে। সড়ক নিরাপত্তা শুধু স্লোগানের মধ্যেই না রেখে এ খাতে অগ্রাধিকারের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র জন য দ র ঘটন গত স ম সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে বাজেট বরাদ্দে অগ্রাধিকার দিতে হবে

বাজেটে বরাদ্দের ক্ষেত্রে দারিদ্র নিরসন, কর্মসংস্থান তৈরি, নারী ও শিশু উন্নয়ন, জলবায়ু অভিঘাত মোকাবেলায় সহায়ক কার্যক্রমে অগ্রাধিকার দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থবিভাগ। আগামী ২০২৫–২৬ অর্থবছর বাজেট প্রণয়ন নিয়ে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের উদ্দেশে বুধবার এক পরিপত্র জারি করে এসব পরামর্শ দেওয়া হয়। 

পরিপত্রে বলা হয়, বাজেটে অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে সরকারের কৌশলগত উদ্দেশ্য অর্জনে সহায়ক হয়, এমন সুনির্দিষ্ট কার্যক্রমের বিপরীতে অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের পরিচালন ও উন্নয়ন ব্যয়ের প্রাক্কলন এমনভাবে তৈরি করতে হবে, যেন তা মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানগুলোর বাজেট ব্যবস্থাপনা কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত ব্যয়সীমার মধ্যেই হয়। এছাড়া সাধারণভাবে বাজেটে কোনো প্রকার থোক বরাদ্দ প্রস্তাব করা যাবে না।

এতে মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামো পদ্ধতির আওতাভুক্ত সকল মন্ত্রণালয় বা বিভাগকে বাজেট প্রণয়নের দ্বিতীয় পর্যায়ে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বিস্তারিত বাজেট প্রাক্কলন এবং একইসঙ্গে পরবর্তী ২০২৬-২৭ ও ২০২৭-২৮ অর্থবছরের প্রক্ষেপণ প্রণয়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বাজেট প্রস্তাব আগামী ২৪ এপ্রিলের মধ্যে অর্থ বিভাগের বাজেট অনুবিভাগ, পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগ, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠাতে বলা হয়।

পরিপত্রে বাজেট প্রাক্কলন ও প্রক্ষেপণের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে চারটি নীতি অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। এর অন্যতম হচ্ছে– মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামোতে বর্ণিত কৌশলগত উদ্দেশ্য, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা, ‘রি-স্ট্রাটেজিসিং দ্য ইকোনমি অ্যান্ড মবিলাইজিং রিসোর্সেস ফর ইক্যুয়িটেবল অ্যান্ড সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট’ বিষয়ক টাস্কফোর্স রিপোর্ট এবং মন্ত্রণালয় বা বিভাগের নিজস্ব নীতিমালায় অন্তর্ভূক্ত সরকারের নীতি ও অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কার্যক্রম পরিচালনা।

এছাড়া সরকারের মৌলিক নীতি নির্ধারণী দলিলগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দারিদ্র নিরসন, কর্মসংস্থান তৈরি, নারী ও শিশু উন্নয়ন, জলবায়ু অভিঘাত মোকাবেলায় সহায়ক কার্যক্রমে অগ্রাধিকার ভিত্তিক বরাদ্দ দিতে হবে। জিডিপি প্রবৃদ্ধির সঙ্গে পরিচালন ও উন্নয়ন ব্যয় বাড়ার সামঞ্জস্য রাখা, যাতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর বর্তমান কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা।

এতে আরও বলা হয়, উন্নয়ন ব্যয়ের বৈদেশিক ঋণের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ কর্তৃক বৈদেশিক ঋণ বা অনুদানের যে প্রাক্কলন ও প্রক্ষেপণ তৈরি করেছে প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে এর প্রতিফলন নিশ্চিত করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দখলদারদের ছাড় দেওয়া হবে না: ডিএনসিসি প্রশাসক 
  • ছয় মাসে কী অর্থনৈতিক সংস্কার করা হয়েছে, প্রশ্ন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের
  • ১ মে থেকে দেশজুড়ে ডিম-মুরগির খামার বন্ধের ঘোষণা
  • অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ বিলুপ্তি নিয়ে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব
  • কর্মসংস্থান বাড়ানোর জন্য অগ্রাধিকার দিতে হবে বাজেট বরাদ্দে
  • কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে বাজেট বরাদ্দে অগ্রাধিকার দিতে হবে
  • পোশাক খাতে করপোরেট করহার অপরিবর্তিত রাখার সুপারিশ
  • শহরে তাপমাত্রা কমাতে সবুজায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
  • নতুন শিল্পে গ্যাসের মূল্য ৩৩% বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের