পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আবাহনী ফুটবলের দল গঠন করতে গিয়ে পড়ে বেকায়দায়। জোড়াতালি দিয়ে দেশি ফুটবলারদের নিয়ে ঘর গোছানো আকাশি-নীল জার্সিধারীরা এখন প্রিমিয়ার লিগে আছে শিরোপা রেসে। প্রথম পর্ব শেষে ৯ ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দুইয়ে থাকা একেএম মারুফুল হকের দল শীর্ষে থাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের চেয়ে পিছিয়ে ৪ পয়েন্টে।

যে ফর্মে আছে সাবেক চ্যাম্পিয়নরা, লিগের দ্বিতীয় পর্বে সেটা ধরে রাখতে পারলে হারানো মুকুট পুনরুদ্ধারের সুযোগ। সেই সুযোগটি কাজে লাগাতে মরিয়া আবাহনী দলের শক্তি বাড়াতে নেমেছে বিদেশির সন্ধানে। দলটিতে খেলে গেছেন এমন কয়েকজন ফুটবলারকে নতুন করে আনার চেষ্টায় তারা। ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার রাফায়েল অগাস্তো ছাড়াও একাধিক খেলোয়াড়ের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ। ক্লাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে তিন বিদেশি নেওয়ার একটা বাজেটও দেওয়া হয়েছে। সেটা অনুমোদন হলে টাকার অঙ্কের ওপর নির্ভর করছে কী মানের বিদেশি আনতে পারবে আবাহনী।

এবারের মৌসুমে ১৩ ম্যাচে মাত্র ১ গোল হজম করেছে ঢাকা আবাহনী। তাই রক্ষণভাগে যারা আছেন, তাদের ওপরে আস্থা রাখতে চাইছে ক্লাব। বিদেশি নেওয়ার ক্ষেত্রে আবাহনী জোর দিচ্ছে মধ্যমাঠ এবং আক্রমণ ভাগে। যে কারণে রাফায়েল অগাস্তোর প্রতি আগ্রহ আছে তাদের।

সমকালের কাছে নিজেদের পরিকল্পনা তুলে ধরে আবাহনীর ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রুপু বলেন, ‘আবাহনীর সঙ্গে রাফায়েলের একটা আত্মিক সম্পর্ক আছে। আমরা চাইলেই সে চলে আসবে। কিন্তু আগে তো বাজেট কেমন দেয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, সেটা দেখতে হবে। আপনি লোকাল প্লেয়ারদের পেমেন্ট পাঁচ দিন পর দিলেও সমস্যা নেই। কিন্তু বিদেশির পাওনা বিলম্ব করলে সমস্যায় পড়তে হবে।’

আবাহনীর রাজ্যে হানা দেওয়া বসুন্ধরা কিংস লিগে টানা পাঁচবার শিরোপা জিতেছে। কিন্তু এই মৌসুমে লিগে বাজে সময় পার করছে তারা। ১৭ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানে তারা, মোহামেডানের সঙ্গে পয়েন্টের ব্যবধান ৭।

এই পয়েন্ট ঘুচিয়ে শিরোপা জেতাটা কঠিনই বলা চলে কিংসের জন্য। তবে হাল ছাড়তে নারাজ তারা। সে জন্য মধ্যবর্তী দলবদলে ভালোমানের বিদেশি নেওয়ার সঙ্গে বাজে পারফরম্যান্সের কারণে একের অধিককে ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা করছে তারা। ইতোমধ্যে ফ্রান্সের উইঙ্গার জারেদ খাসাকে বিদায় বলে দিয়েছে ক্লাবটি।

মধ্যমাঠের শক্তি বাড়াতে উজবেকিস্তানের আশরোর গফুরভের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে কিংস। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হলেও পুরোনো তারকাকে নতুন করে নিজেদের ডেরায় বসুন্ধরা যে আনছে, তা অনেকটা নিশ্চিত। একই সঙ্গে নাইজেরিয়ার ডিফেন্ডার ঈসাকে ছেড়ে দেওয়ার গুঞ্জনও উঠেছে। যদিও এখনই এই বিষয়ে কিছু বলতে চাচ্ছেন না ক্লাব কর্তৃপক্ষ। ‘যেহেতু উইন্ডোর মধ্যে খেলা, সেহেতু এই সময় একজন ফুটবলারকে পরখ করা যাবে। ইনজুরিতে পড়া কিংবা পারফরম্যান্স ডাউন হওয়ার ওপর নির্ভর করছে ওই প্লেয়ারকে রাখব নাকি ছেড়ে দেব’– বলেন কিংসের এক কর্মকর্তা।

লিগের শেষ ম্যাচে ফকিরাপুল ইয়ংমেন্স ক্লাবের কাছে অপ্রত্যাশিত পরাজয়ে মোহামেডানও দ্বিতীয় পর্বে আরও শক্তিশালী হয়ে মাঠে নামতে চাইছে। রক্ষণের শক্তি বাড়াতে মোহামেডান দলে নিচ্ছে পুলিশ এফসির প্যারাগুয়েন ডিফেন্ডার আলেকজান্ডার মরেনোকে।

অন্যান্য ক্লাবের মধ্যে ফর্টিস ফুটবলও মধ্যবর্তী দলবদলে প্লেয়ার যোগ-বিয়োগ করতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে গাম্বিয়ান ওমার সারেকে ছেড়ে দিয়েছে ফর্টিস। তাঁর বিকল্প হিসেবে নাইজেরিয়ান এক ফুটবলারের সঙ্গে কথা চালাচালি হচ্ছে বলে বুধবার সমকালকে জানান ক্লাবের ম্যানেজার রাশেদুল ইসলাম।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব প এল ব ল দ শ ফ টবল ফ টবল র

এছাড়াও পড়ুন:

যে মেলায় পুরুষের প্রবেশ নিষেধ, নারীরাই ক্রেতা

রেশমি চুড়ি, আলতা, চিরুনি, হাঁড়ি-পাতিল, খুন্তি-কড়াই, পানের বাটা, খেলনা, মিষ্টান্ন—কী নেই এখানে। হরেক রকম পণ্যের পসরা মেলা চত্বরে। ক্রেতা-দর্শনার্থীদের সবাই নারী। শিশুরা থাকলেও নারীদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। দোকানদার ছাড়া সেখানে কোনো পুরুষ সদস্যের ঢোকার অনুমতি নেই। এভাবে নারীদের বেশি অংশগ্রহণের কারণে এর নামকরণ হয়েছে ‘বউ মেলা’।

বগুড়ার গাবতলী উপজেলার  ইছামতী নদীর তীরের পশ্চিম মহিষাবান ত্রিমোহিনী এলাকায় তিন দশকের বেশি সময় ধরে বসছে এই ‘বউ মেলা’। দিনব্যাপী এ মেলায় ঘুরে নারীরা স্বাচ্ছন্দ্যে বিভিন্ন ধরনের পণ্য কিনে থাকেন। অন্যবারের ধারাবাহিকতায় আজ মাঘ মাসের শেষ বৃহস্পতিবার এ মেলা বসেছে। এর আগের দিন একই জায়গায় বসেছিল পোড়াদহ মেলা। আজ সকাল থেকেই ‘বউ মেলায়’ নারীদের ঢল নামে।

আরও পড়ুনএকটি মিষ্টির দাম ১০ হাজার টাকা, ৩৫ হাজারে বিক্রি হলো একটি মাছ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

এ অবস্থা দেখে মেলার আয়োজক ও ত্রিমোহিনী যুব সংঘের সাধারণ সম্পাদক আরাফাত রহমান বলেন, ‘অন্যবারের তুলনায় এবারের বউ মেলায় উৎসবের আমেজ বেশি। মেলায় বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছে শতাধিক দোকানি। সকাল থেকেই দোকানে দোকানে নারী ক্রেতার ভিড় আছে।’

মেলার আয়োজকেরা জানান, বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে প্রতিবছর মাঘ মাসের শেষ বুধবার ইছামতী নদীর তীরে বসে ঐতিহ্যবাহী ‘পোড়াদহ মেলা’। ঠিক এর পরদিন বৃহস্পতিবার বসে ‘বউ মেলা’। পোড়াদহ মেলা নিয়ে নানা জনশ্রুতি আছে। ৪০০ শতাধিক বছর আগে পোড়াদহ-সংলগ্ন ইছামতী নদীতে মাঘ মাসের শেষ বুধবার অলৌকিকভাবে একটি বড় কাতলা মাছ সোনার চালুনি পিঠে নিয়ে ভেসে উঠত। ঘটনাক্রমে ওই সময় থেকে জায়গাটিকে ঘিরে মেলা বসতে শুরু করে। কালক্রমে এটি পোড়াদহের মেলা হিসেবে পরিচিতি পায়। ইছামতী, করতোয়া, যমুনা ও বাঙ্গালী নদীর বাহারি মাছ বিক্রির জন্য মেলায় নিয়ে যান জেলেরা। এসব মাছ কিনতে দূরদূরান্ত থেকে সেখানে ভিড় করেন ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা। মেলা এক দিনের হলেও এর আবহ থাকে কয়েক দিন।

মেলায় বিভিন্ন বয়সী নারী ও শিশুদের ভিড় দেখা গেছে

সম্পর্কিত নিবন্ধ