জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) তথ্যানুসন্ধান দলের প্রতিবেদনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অকাট্য দলিল হিসেবে ব্যবহার করা যাবে বলে উল্লেখ করেছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ট্রাইব্যুনালে এ কথা বলেন তিনি।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউসূসের নেতৃত্বে ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর অভ্যুত্থানের সময় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়। এর ধারাবাহিকতায় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার একটি তথ্যানুসন্ধানী দল গঠন করেন। গতকাল এ তথ্যানুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় আওয়ামী লীগের সহিংস কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি বিগত সরকার এবং নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো পদ্ধতিগতভাবে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় জড়িত ছিল। ক্ষমতায় থাকার জন্য হাসিনা সরকার ক্রমাগত নৃশংস পদক্ষেপ নিয়ে পদ্ধতিগতভাবে বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা করেছিল।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম আজ প্রতিবেদনটি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, অস্ত্রের ব্যবহার এবং আহত-নিহতের পরিসংখ্যান থেকে বোঝা যায়, একটা পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র বহুবিস্তৃত (ওয়াইডস্প্রেড) ও পদ্ধতিগতভাবে (সিস্টেমেটিক) একটা জনগোষ্ঠীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তাদের নিশ্চিহ্ন করার জন্য। এটা মানবতাবিরোধী অপরাধের পক্ষে একটা সুস্পষ্ট ও জোরালো প্রমাণ। এই প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার মাধ্যমে একটা এভিডেন্স (প্রমাণ) হিসেবে ট্রাইব্যুনালে আসবে।

তাজুল ইসলাম বলেন, যেহেতু জাতিসংঘ বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও সর্বজন গ্রহণযোগ্য একটা সংস্থা, তাই তাদের এ প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ। কোনো দলের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে প্রতিবেদনটি করা হয়নি। তাঁদের (প্রসিকিউশন) সঙ্গেও কথা বলেননি জাতিসংঘের তদন্তকারীরা। তাঁরা অপরাধীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। যেখানে কথা বলা দরকার, সেই জায়গায় কথা বলেছেন। সুতরাং এটা অকাট্য দলিল, প্রমাণ হিসেবে এই আদালতে ব্যবহার করা যাবে। সেটা তাঁরা ব্যবহার করবেন বলে তিনি আজ জানান।

তৎকালীন সরকারপ্রধানের দায়দায়িত্বে (রেসপনসিবলিটি) এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে এবং ঘটনায় রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলো সম্পৃক্ত ছিল বলে উল্লেখ করেন তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘যেসব অফিসার এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল বলে প্রাথমিক তথ্যপ্রমাণে পাওয়া যাবে, জাতিসংঘ সুপারিশ করেছে প্রত্যেককে সাসপেন্ড (সাময়িক বরখাস্ত) করার জন্য ন্যায্য ও নিরপেক্ষ বিচার যাতে হতে পারে। চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ও এমনটা মনে করে।’

আসামিদের মৃত্যুদণ্ড নিয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগ আছে বলে জানান ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর। তিনি বলেন, ‘শুধু তাদের (জাতিসংঘ) একটা কনসার্ন (উদ্বেগ) আছে যে মৃত্যুদণ্ডের ব্যাপারটা যেটা আছে, সেটা তারা বলেছে একটা মরাটোরিয়াম (স্থগিত)। অর্থাৎ একধরনের মৃত্যুদণ্ড যদিও দেওয়া হয়, সেটা যাতে স্থগিত রাখা হয়, এ রকম একটা প্রস্তাব করেছে। এটার সুযোগ, যেহেতু আমাদের ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের কাছে ক্ষমতা আছে, তাঁরা কী ধরনের দণ্ড দেবেন কি দেবেন না, সেটা পরে দেখা যাবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ত জ ল ইসল ম সরক র অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

বায়ার্নকে বিদায় করে সেমিতে ইন্টার

কাজটা প্রথম লেগেই এগিয়ে রেখেছিল ইন্টার মিলান। ইতালির জায়ান্টরা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে বায়ার্নের মাঠ থেকে ২-১ গোলে জিতে ফিরেছিল।

দ্বিতীয় লেগে ইন্টারের শক্তিশালী রক্ষণ ভেঙে জিততে হতে বাভারিয়ানদের। বায়ার্ন জোড়া গোল পেলেও জিততে পারেনি। ২-২ গোলের সমতা করেছে। এতে দুই লেগ মিলিয়ে ৪-৩ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ চারে উঠে গেছে ইনগাঘির ইন্টার মিলান।

সান সিরোতে প্রথমার্ধে গোল শূন্য সমতা করে দুই দল। দ্বিতীয়ার্ধের ৫২ মিনিটে হ্যারি কেন গোল করে কামব্যাকের আসা জাগায়। দুই লেগ মিলিয়ে ২-২ গোলের সমতা করে ফেলে। 

পরেই গোল করে লিড নেয় ইন্টার। গোলটি আসে ইতালির লিগ টেবিলে শীর্ষে থাকা দল ইন্টারের আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার লওতারো মার্টিনেজ। ৬১ মিনিটে ডিফেন্ডার বেঞ্জামিন পাভার্ড ইন্টারকে ২-১ গোলে এগিয়ে নেন। 

ওই গোলও শোধ করে দেয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ইতিহাসের অন্যতম সেরা দল বায়ার্ন মিউনিখ। ম্যাচের ৭৬ মিনিটে গোল করেন এরিক ডায়ার। পরের সময়টা জাল অক্ষুন্ন রেখে শেষ চারে পা রেখেছে ইনগাঘির দল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ