পাসপোর্টের জন্য যে পুলিশি যাচাই ব্যবস্থা রয়েছে, তা তুলে দেওয়া যায় কিনা তা বিবেচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এছাড়া বাংলাদেশে আসার ১০ মিনিটেই বিদেশিরা অন অ্যারাইভাল ভিসা পাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ সংক্রান্ত অ্যাপ উদ্বোধন করে এ নিয়ে কথা বলেন তিনি। 

বিদেশি নাগরিকদের অন অ্যারাইভাল ভিসা সেবা সহজ করতে এ অ্যাপ উদ্বোধন করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অন অ্যারাইভাল ভিসা পেতে অনেক সময় লাগে; ৪৫ মিনিট-এক ঘণ্টা সময় লাগে। যে সিস্টেম (অ্যাপ) করা হচ্ছে, সেটা কার্যকরী হলে ৫-১০ মিনিটে উনি অন অ্যারাইভাল ভিসা পেয়ে যাবেন।’ এছাড়া পাসপোর্টের জন্য যে পুলিশি যাচাই ব্যবস্থা রয়েছে, তা তুলে দেওয়া যায় কিনা তা বিবেচনা করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। 

বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ অ্যাপ উদ্বোধন করে এ নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘অনলাইনে ইনফরমেশন দেওয়ার পরে আমাদের এখানে কাগজপত্র ঠিক থাকলে একটা কোড আবেদনকারী পাবেন। এরপর বাংলাদেশে আসার পরে কোড দেখানোর পর ডলারে পেমেন্ট করলে ভিসা পেয়ে যাবেন। এই প্রক্রিয়া সারতে ৫ থেকে ১০ মিনিট সময় লাগতে পারে। ব্যাংকিং চ্যানেলে যতটুকু সময় ততটুকুই। এই পেমেন্ট কার্ড ও ক্যাশে দুটোতেই দেওয়া যাবে।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘যেসব দেশের সাথে চুক্তি আছে, অন অ্যারাইভেল ভিসা তাদের জন্যই। আর যেসব দেশের সাথে চুক্তি নাই, তাদের ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি নিতে হবে। অন অ্যারাইভাল ভিসার মেয়াদ ৩০ দিন থাকবে। 

তিনি বলেন, পাসপোর্ট যেন সহজ হয়, এজন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন উঠিয়ে দেওয়া যায় কি না বা থাকলেও কত সহজ করা যায়- এ ব্যাপারে আমাদের চিন্তাভাবনা আছে। আমরা চেষ্টা করব পাসপোর্টের জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশনের যাতে দরকারই না হয়। 
 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

যে প্রলোভনে মিয়ানমারে দুই বছর জেল খাটলেন ২০ কিশোর–তরুণ

কারও বয়স ১৬, কারও ১৮ ছুঁই ছুঁই। দালালের প্রলোভনে পড়ে মালয়েশিয়ায় ভালো বেতনে চাকরি আর উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখেছিলেন তাঁরা। পরিবারকে না জানিয়েই রওনা দিয়েছিলেন অবৈধ বিপদসংকুল সাগরপথে। কিন্তু মিয়ানমারে পৌঁছেই আটক হন তাঁরা। তারপর অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ২২ মাস কারাভোগ করেন।

অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে ২০২৩ সালের জুনে মিয়ানমারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক এসব কিশোর–তরুণ আজ মঙ্গলবার সকালে নৌবাহিনীর জাহাজে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছান। সেখান থেকে সন্ধ্যায় বাসে তাঁদের নেওয়া হয় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে। সেখানে অপেক্ষারত পরিবারের সদস্যদের কাছে তুলে দেওয়া হয় এসব কিশোর–তরুণকে।

সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের সামনে বাস থেকে একে একে নামেন তরুণেরা। ছেলে কিংবা ভাইকে এত মাস পর কাছে পেয়ে দৌড়ে যান স্বজনেরা। কেউ কেউ কান্নায় ভেঙে পড়েন।

জানা গেছে, অসাধু দালালেরা এসব কিশোর–তরুণকে মালয়েশিয়ায় পাচারের চেষ্টা করেছিল। পথে মিয়ানমারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তাঁরা আটক হন। তাঁদের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব যাচাইয়ের পর মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে সরকার। এরপর বাংলাদেশ দূতাবাস তাঁদের প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করে।

অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফিরে আসা কিশোর–তরুণেরা কক্সবাজার জেলার টেকনাফ ও উখিয়া অঞ্চলের বাসিন্দা। মালয়েশিয়া যাত্রার কথা কেউ পরিবারকে জানাননি। প্রায় এক মাস পর স্বজনেরা জানতে পারেন তাঁরা আটক হয়েছেন। এক বছর আগে সরকারের কাছে তাঁদের ফিরিয়ে আনতে কাগজপত্র জমা দেয় পরিবার।

ফিরে আসা এক কিশোরের বোনের স্বামী আবদুল্লাহ বলেন, ‘পরিবারকে না জানিয়েই আমার শ্যালক দালালের খপ্পরে পড়ে মালয়েশিয়া যেতে চেয়েছিল। সে মিয়ানমারে আটক হয়। প্রায় এক মাস পর আমরা জানতে পারি। এখন সে পরিবারের কাছে ফিরে এসেছে।’

কিশোর–তরুণদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘তথ্য যাচাই করে তাঁদের বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। আমরা তাঁদের পরিবারের জিম্মায় হস্তান্তর করেছি।’

এর আগে গত রোববার মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন শহরের এমআইটিটি বন্দর থেকে ২০ বাংলাদেশি নাগরিক বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ বিএনএস সমুদ্র অভিযানে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা করেন। আজ সকালে জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ