চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শুরুর সময় ঘনিয়ে এসেছে। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে এই প্রতিযোগিতা। অংশগ্রহণকারী দলগুলো নিয়ে বিশ্লেষণ করাও শুরু হয়ে গেছে। সেমিফাইনাল ও ফাইনালে উঠবে কারা, কোন দলের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, কোন দল দুর্বল সেসব নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। 

২০০৬ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শিরোপা জেতে অস্ট্রেলিয়া। রিকি পন্টিংয়ের হাতে উঠে প্রথম শিরোপা। সেই পন্টিং আসন্ন চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের খুব একটা সম্ভাবনা দেখছেন না। বাংলাদেশকে নিয়ে পন্টিংয়ের ভাবনা এরকম, ‘‘আমার মনে হয় ওদের সংগ্রাম করতে হবে। দলটিতে সেরকম মান আছে বলে মনে হচ্ছে না। বিশেষ করে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির অন্য দলগুলোর সাথে তুলনা করলে। দলটিতে মানের অভাব আছে। তারা তাদের আদর্শ হোম কন্ডিশন পেলে ভয়ংকর দল, তবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নিজেদের মতো কন্ডিশন পাবে বলে মনে হয় না আমার।’’
বাংলাদেশের চেয়ে আফগানিস্তানকেই এগিয়ে রেখেছেন পন্টিং, ‘‘আমার তো মনে হয় চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের চেয়ে আফগানিস্তানের (ভালো করার) সম্ভাবনা বেশি। আফগানিস্তানের ব্যাটসম্যানরা যদি পরিপক্বতা ধরে রাখতে পারে, তাহলে তারা অপ্রত্যাশিত কিছু (অঘটন) করে ফেলতে পারে।’’

পন্টিংয়ের এমন কথার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের ভাবনা কী? জানতে চাওয়া হয়েছিল অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর কাছে। বাংলাদেশের দলপতির সাফ কথা, ‘‘আমার কোনো মতামত নেই।’’ অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তির কথা শান্ত ঠিকঠাক গ্রহণ করেনি বোঝাই যাচ্ছে। মাঠের ক্রিকেটে সেই জবাব দেবে এমনটাই বোঝা গেছে তার শরীরী ভাষায়।

আরো পড়ুন:

ফেয়েনূর্ড রূপকথা চলছেই

রিজওয়ান-সালমানের জোড়া সেঞ্চুরিতে ফাইনালে পাকিস্তান

এদিকে বাংলাদেশ দলের জন্য স্বস্তির খবর বর্তমান বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা বোলার জসপ্রিত বুমরাহকে খেলতে হবে না। পিঠের চোটের কারণে তাকে স্কোয়াডে রাখেনি ভারত। বুমরাহ না থাকায় নিশ্চিতভাবেই বাড়তি সুবিধা। তবে বাংলাদেশের অধিনায়ক নির্দিষ্ট কোনো খেলোয়াড়কে নিয়ে চিন্তা করছেন না, ‘‘প্রতিটি দলের প্রত্যেকটা ক্রিকেটারই দলকে জেতানোর মতো সামর্থ্যবান। এর ভেতরে একেক দলের একেক ‘এক্স ফ্যাক্টর’ থাকে। অবশ্যই সে (বুমরাহ) অনেক বড় বোলার। তবে আমরা আসলে আলাদা করে কাউকে নিয়ে পরিকল্পনা করতে চাই না। পুরো দলের একটা পরিকল্পনা থাকে যেকোন বোলারকে কীভাবে সামলাবে, কোন ব্যাটসম্যানকে কীভাবে আটকাবে। সার্বিক একটা দলীয় পরিকল্পনা থাকে।’’

ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

গাইবান্ধায় শিশুকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন

টাকা চুরির অভিযোগ এনে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায় এক শিশুকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। 

গত মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের দশলিয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। 

শিশুটি রানা মিয়া (৯) সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের দশলিয়া গ্রামের আনছার আলীর ছেলে। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে গতকাল বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাতে গণমাধ্যম কর্মীদের নজরে আসে। 

খুঁটিতে বেঁধে রাখার ৫৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, শিশুটির দুই হাত পিছনে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা। পিঠ ও বাঁধা দুই হাতের মাঝখানে খুঁটি। কয়েকজন নারী-পুরুষ তাকে ঘিরে রয়েছে। স্থানীয়রা তাকে নানা প্রশ্ন করছে। 

এসময় শিশুটিকে বলতে শোনা যায়, “হাত খুলে দেন ঝিনঝি (ব্যথা) লাগছে।” সেসময় শিশুটিকে বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। ঠোঁট ফ্যাকাসে হয়ে গিয়েছিল।

শিশুটির মা রেখা বেগম জানান, দু’দিন আগে নলডাঙ্গা ইউনিয়নের দশলিয়া গ্রামের বিকাশ ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমানের বাড়ি থেকে মোবাইল ও কিছু টাকা হারিয়ে যায়। এই ঘটনায় জড়িত মনে করে শিশুটিকে মঙ্গলবার সকাল নয়টার দিকে সন্দেহজনকভাবে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী স্থানীয় বাজারের একটি মুদি দোকানের সামনের রড সিমেন্টের তৈরি খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। এসময় তাকে নির্যাতন করে মারধর করে ওই ব্যবসায়ী ও তার লোকজন। এক পর্যায়ে বাচ্চাটির হাতে সুঁচ ঢোকানোর চেষ্টা করা হয়। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ঘটনার পর মঙ্গলবার রাতেই তাকে সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আজ বৃহস্পতিবারও (১৩ ফেব্রুয়ারি) শিশুটি হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডের ৮ নম্বর শয্যায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। শিশুটি বাম হাত ও বাম পায়ে আঘাত পেয়েছে। উঠেও দাঁড়াতে পারছে না। 

সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) সুরঞ্জন কুমার বলেন, “শিশুটি বাম হাত ও বাম পায়ে আঘাত পেয়েছে। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।” 

শিশুটির মা রেখা বেগম অভিযোগ করে বলেন, “টাকা চুরির অভিযোগ এনে ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান আমার ছেলেকে বাড়ি থেকে জোর করে ধরে নিয়ে যায়। তারপর আমার শিশু ছেলেকে বিনা অপরাধে খুঁটির সাথে বেঁধে রেখে নির্যাতন করা হয়। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আমার ছেলেকে ছেড়ে দেয় তারা। আমার ছেলে কোন দোষ করেনি। আমি এই নির্যাতনের বিচার চাই। কিন্তু আমাকে মীমাংসার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে।”

এসব বিষয় জানতে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। প্রথমে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। কিছুক্ষণ পর তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

সাদুল্লাপুর থানার ওসি তাজ উদ্দিন খন্দকার জানান, শিশুটিকে খুঁটিতে বেঁধে রাখার কথা শুনেছি। আমি স্বশরীরে হাসপাতালে তাকে দেখতে গিয়েছি। শিশুটির অভিভাবককে মামলা দেওয়ার কথা বলেছি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/মাসুম/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ