কাশেমের জানাজায় আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবি
Published: 13th, February 2025 GMT
গাজীপুরে সাবেক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলায় আহত হওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া আবুল কাশেমের জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। এ সময় কাশেম হত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টা ৩৫ মিনিটে গাজীপুরের রাজবাড়ি মাঠে আবুল কাশেমের জানাজা হয়। জানাজায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মী, সাধারণ শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
তারা বলেছেন, “পরিকল্পিতভাবে জাহাঙ্গীর ও মোজাম্মেলের লোকজন শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে। এ হামলায় শহীদ হয়েছেন আবুল কাশেম। কাশেমের রক্তের বদলা নেব আমরা। স্বৈরাচারের দোসররা এখনো গাজীপুরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। যেভাবে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হয়েছে, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার দায়ে আওয়ামী লীগকে সেভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে।”
জানাজার আগে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, ছাত্র অধিকার পরিষদ, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা বক্তব্য রাখেন।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার নাজমুল করিম খান, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কর্মকর্তা, সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
গত শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে গাজীপুর মহানগরীর ধীরাশ্রম দক্ষিণখান এলাকায় সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ওপর হামলা করা হয়। তাদেরকে আটকে রেখে মারধর করা হয়। এতে ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। পরদিন শনিবার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের গাজীপুরের আহ্বায়ক মো.
ঢাকা/রেজাউল/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গাইবান্ধায় শিশুকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন
টাকা চুরির অভিযোগ এনে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায় এক শিশুকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
গত মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের দশলিয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
শিশুটি রানা মিয়া (৯) সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের দশলিয়া গ্রামের আনছার আলীর ছেলে। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে গতকাল বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাতে গণমাধ্যম কর্মীদের নজরে আসে।
খুঁটিতে বেঁধে রাখার ৫৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, শিশুটির দুই হাত পিছনে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা। পিঠ ও বাঁধা দুই হাতের মাঝখানে খুঁটি। কয়েকজন নারী-পুরুষ তাকে ঘিরে রয়েছে। স্থানীয়রা তাকে নানা প্রশ্ন করছে।
এসময় শিশুটিকে বলতে শোনা যায়, “হাত খুলে দেন ঝিনঝি (ব্যথা) লাগছে।” সেসময় শিশুটিকে বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। ঠোঁট ফ্যাকাসে হয়ে গিয়েছিল।
শিশুটির মা রেখা বেগম জানান, দু’দিন আগে নলডাঙ্গা ইউনিয়নের দশলিয়া গ্রামের বিকাশ ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমানের বাড়ি থেকে মোবাইল ও কিছু টাকা হারিয়ে যায়। এই ঘটনায় জড়িত মনে করে শিশুটিকে মঙ্গলবার সকাল নয়টার দিকে সন্দেহজনকভাবে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী স্থানীয় বাজারের একটি মুদি দোকানের সামনের রড সিমেন্টের তৈরি খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। এসময় তাকে নির্যাতন করে মারধর করে ওই ব্যবসায়ী ও তার লোকজন। এক পর্যায়ে বাচ্চাটির হাতে সুঁচ ঢোকানোর চেষ্টা করা হয়। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ঘটনার পর মঙ্গলবার রাতেই তাকে সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আজ বৃহস্পতিবারও (১৩ ফেব্রুয়ারি) শিশুটি হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডের ৮ নম্বর শয্যায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। শিশুটি বাম হাত ও বাম পায়ে আঘাত পেয়েছে। উঠেও দাঁড়াতে পারছে না।
সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) সুরঞ্জন কুমার বলেন, “শিশুটি বাম হাত ও বাম পায়ে আঘাত পেয়েছে। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।”
শিশুটির মা রেখা বেগম অভিযোগ করে বলেন, “টাকা চুরির অভিযোগ এনে ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান আমার ছেলেকে বাড়ি থেকে জোর করে ধরে নিয়ে যায়। তারপর আমার শিশু ছেলেকে বিনা অপরাধে খুঁটির সাথে বেঁধে রেখে নির্যাতন করা হয়। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আমার ছেলেকে ছেড়ে দেয় তারা। আমার ছেলে কোন দোষ করেনি। আমি এই নির্যাতনের বিচার চাই। কিন্তু আমাকে মীমাংসার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে।”
এসব বিষয় জানতে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। প্রথমে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। কিছুক্ষণ পর তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
সাদুল্লাপুর থানার ওসি তাজ উদ্দিন খন্দকার জানান, শিশুটিকে খুঁটিতে বেঁধে রাখার কথা শুনেছি। আমি স্বশরীরে হাসপাতালে তাকে দেখতে গিয়েছি। শিশুটির অভিভাবককে মামলা দেওয়ার কথা বলেছি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/মাসুম/এস