গাজীপুরে সাবেক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলায় আহত হওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া আবুল কাশেমের জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। এ সময় কাশেম হত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। 

বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টা ৩৫ মিনিটে গাজীপুরের রাজবাড়ি মাঠে আবুল কাশেমের জানাজা হয়। জানাজায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মী, সাধারণ শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। 

তারা বলেছেন, “পরিকল্পিতভাবে জাহাঙ্গীর ও মোজাম্মেলের লোকজন শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে। এ হামলায় শহীদ হয়েছেন আবুল কাশেম। কাশেমের রক্তের বদলা নেব আমরা। স্বৈরাচারের দোসররা এখনো গাজীপুরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। যেভাবে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হয়েছে, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার দায়ে আওয়ামী লীগকে সেভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে।”

জানাজার আগে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, ছাত্র অধিকার পরিষদ, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা বক্তব্য রাখেন। 

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার নাজমুল করিম খান, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কর্মকর্তা, সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। 

গত শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে গাজীপুর মহানগরীর ধীরাশ্রম দক্ষিণখান এলাকায় সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ওপর হামলা করা হয়। তাদেরকে আটকে রেখে মারধর করা হয়। এতে ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। পরদিন শনিবার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের গাজীপুরের আহ্বায়ক মো.

আব্দুল্লাহ মোহিত বাদী হয়ে গাজীপুর সদর থানায় মামলা করেন। মামলায় ২৩৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০০-৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি আওয়ামী লীগের কর্মী আমজাদ হোসেন মোল্লা। 

ঢাকা/রেজাউল/রফিক 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

উপদেষ্টা আসিফের আশ্বাসে ইমির কর্মসূচি স্থগিত

ধর্ষণের বিচারসহ পাঁচ দাবিতে গত আট দিন ধরে শাহবাগে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি কর্মসূচি স্থগিত করেছেন। আজ শনিবার সন্ধ্যায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের আশ্বাসে তিনি কর্মসূচি স্থগিত করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ইমি সমকালকে বলেন, ‘সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ শাহবাগে আসেন। এ সময় আমাদের পাঁচ দফা দাবির প্রত্যেকটি সুনির্দিষ্টভাবে সময় উল্লেখ করে পূরণের আশ্বাস দেন তিনি। তাঁর প্রতি আস্থা রেখে আমি আপাতত আমার অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করেছি। আশা করছি আপাতত আর রাস্তায় থাকতে হবে না। এরপরও যদি প্রয়োজন হয় আবার, বারবার রাস্তায় নেমে আসব।’

সাত দিন টানা অবস্থানে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, শরীর একেবারে ভেঙে পড়েছে। বিশ্রাম দরকার। সবাই আমার, আমার সহযোদ্ধারা যারা আজকে আট দিন সবসময় আমাকে আগলে রেখেছেন, আমাদের জন্য দোয়া রাখবেন।   

এর আগে গত ৮ মার্চ তিনি শাহবাগে লাগাতার অবস্থান করা শুরু করেন। এরপর নানান পর্যায় থেকে নানাজন তার সঙ্গে এসে সংহতি জানান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে শামসুন নাহার হল সংসদের নির্বাচিত ভিপি। তিনি জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য ছিলেন। পরে নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপিতে আর যোগ দেননি।

তার দাবির মধ্যে রয়েছে- ধর্ষণ ও বলাৎকারের সম্পূর্ণ বিচার কার্যক্রম নিম্ম আদালত থেকে উচ্চ আদালত পর্যন্ত ১৮০ দিনের মধ্যে নিষ্পন্ন করতে হবে এবং দ্রুত রায় কার্যকর করতে হবে। প্রতিটি থানায় একজন নারী পুলিশ কর্মকর্তার নারী ও শিশু নির্যাতন একটি ইমারজেন্সি ক্রাইসিস রেস্পন্স টিম গঠন করতে হবে। একই সঙ্গে থানার অভ্যন্তরে ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ধারা-২৪ সংশোধন করে সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ভুক্তভোগীর পরিচয় প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে। ধর্ষণের শিকার ভিক্টিমের মানসিক, শারীরিক এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ সরকারকে নিতে হবে।

নারী ও শিশুর উপর সংঘটিত সকল নির্যাতনের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরির জন্য সরকারকে উদ্যোগী ভূমিকা পালন করতে হবে। স্কুল-কলেজের পাঠ প্রস্তুকে নৈতিক শিক্ষা, লিঙ্গ সমতা পাঠদানের বিষয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ