নির্বাচন কমিশনে বৈঠকে জামায়াতে ইসলামী
Published: 13th, February 2025 GMT
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীনসহ অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে জামায়াতে ইসলামীর ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে এই বৈঠক শুরু হয়।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে রয়েছেন— জামায়াতে ইসলামীর সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল এ.
বৈঠক শেষে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনের সামনে মিয়া গোলাম পরওয়ার প্রেস ব্রিফিং করবেন।
এর আগে গত রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির প্রতিনিধি দল। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ ও সেলিমা রহমান।
ওই বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দীন, নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, আবদুর রহমানেল মাসুদ, বেগম তহমিদা আহমদ এবং অবসরারপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদও বৈঠকে অংশ নেন।
বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছিলেন, সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অন্তরায় হলে বাধা দেবে বিএনপি। তিনি জানান, নির্বাচনের দিনক্ষণ নির্ধারণের ক্ষমতা ইসির নেই। তবে ইসির সঙ্গে তাদের আলাপে মনে হয়েছে, আগামী মে-জুনের মধ্যে ইসি পরিপূর্ণভাবে সংসদ নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তুত হবে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে কে এম নূরুল হুদার কমিশন দলটির নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। ২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবর তৎকালীন ইসি সচিব মো. হেলালুদ্দীন আহমদ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর দলটিকে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী নিবন্ধন দেওয়া হয়েছিল। দলটি নিবন্ধন নম্বর পেয়েছিল ১৪। কিন্তু একটি মামলার রায়ে হাইকোর্ট ২০১৩ সালে দলটির নিবন্ধন প্রক্রিয়া অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে। তাই নির্বাচন কমিশন দলটির নিবন্ধন বাতিল করে।
বর্তমানে নিবন্ধন ফিরে পেতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে দলটি। এ বিষয়ে শুনানি চলমান রয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
১৩ মাস ধরে বেতন বন্ধ, সংসার চলে না সিলেটের ‘খলিল মামুর’
ষাটোর্ধ্ব খলিল আহমদ সিলেটের কবি নজরুল অডিটরিয়ামে কেয়ারটেকার কাম নাইটগার্ডের চাকরি করেন। জেলা প্রশাসনের অধীন মাস্টাররোলে চাকরি তাঁর। প্রতিদিন ৪৫০ টাকা হিসাবে মাস শেষে সাড়ে ১৩ হাজার টাকা বেতন পান। তবে ১৩ মাস ধরে বেতন বন্ধ রয়েছে। এতে পরিবার নিয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন তিনি।
সিলেট জেলা প্রশাসনের পরিচালনাধীন নজরুল অডিটরিয়ামের অবস্থান নগরের রিকাবিবাজার এলাকায়। প্রায় ৭০০ আসনবিশিষ্ট এ মিলনায়তনেই মূলত শহরের সাহিত্য, সংস্কৃতি, রাজনীতিসংক্রান্ত অনুষ্ঠানগুলো হয়ে থাকে। আর এখানেই ২০২২ সালে অস্থায়ী ভিত্তিতে চাকরিতে ঢোকেন খলিল আহমদ। সাহিত্য-সংস্কৃতিকর্মীদের কাছে তিনি ‘খলিল মামু’ নামে সুপরিচিত।
গতকাল সোমবার রাত ১০টার দিকে অডিটরিয়ামের সামনে খলিলের সঙ্গে কথা হয়। স্ত্রী, তিন মেয়েসহ আটজনের সংসার তাঁর। মূল বাড়ি সিলেট নগরের দক্ষিণ সুরমার ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের বারখলা এলাকায়। বর্তমানে নগরের বাগবাড়ি এলাকায় ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে থাকেন।
খলিল বলেন, তাঁর দুই মেয়ে বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে খণ্ডকালীন চাকরি করছেন। দুই মেয়ে আর নিজের আয়ে তাঁর সংসার চলে। তবে গত বছরের জানুয়ারি মাস থেকে ‘অজানা কারণে’ তাঁর বেতন বন্ধ হয়ে গেছে। জেলা প্রশাসনের নেজারত শাখায় বারবার যোগাযোগ করেও বেতন পাচ্ছেন না। কী কারণে তাঁর বেতন বন্ধ হয়ে গেছে, চেষ্টা করে তা–ও জানতে পারেননি।
দীর্ঘদিন ধরে বেতন না পাওয়ায় পরিবার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন উল্লেখ করে খলিল আহমদ বলেন, ‘সংসার চালাইতাম পারতাছি না। ঋণের ওপর চলতাছি। ঋণ অই গেছে দেড় লাখ টাকা। খুব কষ্টে আছি। অফিসে (জেলা প্রশাসন) গিয়া দেখা করলে বলে সামনের মাসে দিমু। পরের মাসে দেখা করলে বলে সামনের মাসে দিমু। কিন্তু সামনের মাস আর আয় না। আমার বেতনও হয় না।’
সংসারের খরচের বিষয়ে খলিল বলেন, ঘরভাড়া ১১ হাজার টাকা, খাওয়াবাবদ খরচ গড়ে ১৪ হাজার টাকা। এর বাইরে অন্যান্য খরচ তো আছেই। বেতন বন্ধ হয়ে পড়ায় তাঁর জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়েছে। দুই মেয়ের সামান্য আয়ে সংসার চলছে না। বাধ্য হয়ে ঋণ নিয়ে কোনোরকমে সংসার চালাচ্ছেন। তবে এখন ঋণও পাচ্ছেন না। বেতন দ্রুত না হলে তাঁকে আরও ভোগান্তিতে পড়তে হবে।
সিলেটের সংস্কৃতি ও নাট্যব্যক্তিত্ব আমিরুল ইসলাম চৌধুরী (বাবু) মানবিক দিক বিবেচনা করে জেলা প্রশাসনকে দ্রুত খলিল আহমদের বেতন দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘খলিল কাজের প্রতি অত্যন্ত আন্তরিক। দীর্ঘদিন বেতন না পাওয়ায় অভাব-অনটনে থাকা সত্ত্বেও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন।’
এ বিষয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব বিষয়টি আসলে কী ঘটেছে।’