বিদায় শীত। আজ মাঘের শেষ দিন। ঋতুরাজ বসন্ত শুরু হচ্ছ কাল। তাই গোপালগঞ্জে পলাশ ফুলের রঙিন পাঁপড়িতে নতুন সাজে সেজেছে প্রকৃতি। পলাশ ফুল মুগ্ধতা ছড়িয়ে জানান দিচ্ছে বসন্ত এলো রে। ভালবাসা দিবসকেও যেন রাঙিয়ে তুলছে। 

গ্রামীণ আবহে আগে হরহামেশাই রাস্তার ধারে দেখা মিলতো মনমোহিনী পলাশের। প্রকৃতিকে রাঙিয়ে তোলা চোখ ধাঁধানো গাঢ় লাল রঙের অপরূপ সে পলাশেরই দেখা মিলেছে গোপালগঞ্জে।

ঋতুরাজের রূপ দেখে প্রকৃতি প্রেমি প্রাণীকূলও মেতে উঠে মিলনের আনন্দে

“ও পলাশ ও শিমুল-কেন এ মন মোর রাঙালে-জানিনা জানিনা আমার এ ঘুম কেন ভাঙালে”-প্রকৃতির এই অপরূপ রঙের সাজ দেখে যে কারোরই চোখ জুড়িয়ে যায়। পাখির কলকাকলি বসন্তের অপরূপ সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে ডাকে আপন সুরে। ঋতুরাজের রূপ দেখে প্রকৃতি প্রেমি প্রাণীকূলও মেতে উঠে মিলনের আনন্দে।

প্রায় ৫৫ একরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালযয়ে ক্যাম্পাসের লাইব্রেরি ভবনের সামনে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে দু’টি পলাশ গাছ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল মাঠ, শহীদ মিনার চত্ত্বরে পলাশের রক্তিম আভা ছড়িয়ে দিচ্ছে। সম্মুখে চওড়া পাপড়ি, পেছনে দুটি ডানার মত ছড়ানো এবং দুটি একত্রে বাঁকানো, পাখির ঠোঁটের মতো অরণ্যের অগ্নিশিখা পলাশ। যেন পহেলা ফাল্গুনের আগাম বার্তা দিয়ে যাচ্ছে। 

ক্যাম্পাসের লাইব্রেরি ভবনের সামনে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে পলাশ গাছ

পলাশের নয়ানাভিরাম সৌন্দর্য মন কেড়েছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। তার প্রমাণ মিলছে গাছগুলোর চারপাশে। প্রিয়তমার হাতে শোভা পাচ্ছে গাছ থেকে ঝরে পড়া পলাশ ফুল। কেউবা আবার ক্যামেরায় নিজেকে ফ্রেমবন্দি করতে ব্যস্ত। 

গোপালগঞ্জে বছর দশেক আগেও জেলার প্রত্যন্ত গ্রামের অধিকাংশ বাড়ির আনাচে কানাচে, রাস্তার পাশে, হালটে পলাশ গাছ দেখা গেলেও এখন তেমন একটা চোখে পড়ে না। 

পলাশের নয়ানাভিরাম সৌন্দর্য অনেকেই ছবি তুলে স্মৃতিময় করে রাখছেন

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২৩-২৪ বর্ষের শিক্ষার্থী মানসিতা কবির শিওনা বলেন, “পলাশ ও শিমুল ফুল আমাদের প্রকৃতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপাদান। আমরা যেটা দেখি প্রকৃতিপ্রেমি মানুষ যারা আছেন, প্রকৃতিকে অনুভব করতে ভালোবাসেন- তারা পলাশ ও শিমুলের গাছ লাগিয়ে থাকেন। পলাশ ও শিমুল ফুল প্রকৃতির সৌন্দর্য্য বাড়িয়ে দেয় বহুগুণে।”

একই বিভাগের শিক্ষার্থী অনিক দাস বলেন, “শীতের জড়তাকে কাটিয়ে প্রকৃতিকে আবার রাঙিয়ে তুলতে আমরা পলাশ ও শিমুল ফুলকে দেখতে পাই। কিন্তু বর্তমানে পলাশ ও শিমুল ফুল দেখাই যায় না। তীব্র গাছ কাটা ও না লাগানোর ফলে পলাশ ও শিমুল ফুল গাছ হারিয়ে যাচ্ছে।”

বশেমুরবিপ্রবির বাংলা বিভাগের সভাপতি মো.

আব্দুর রহমান বলেন, “পলাশ ও শিমুল বাংলাদেশের প্রত্যেকটি অঞ্চলে ও প্রত্যেক বাড়িতে বাড়িতে দেখা যেতো। আধুনিকতা আর নগরায়ণের ছোঁয়া পলাশ গাছ কেটে ফেলায় আর বীজ বপণ না করায় এসব গাছের অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে। সৌন্দর্য্যবর্ধক গাছগুলো এখন দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। ফলে পাখিরা তাদের আবাসস্থল হারিয়ে পড়ছে অস্তিত্ব সংকটে।”

ঢাকা/টিপু

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ন দর য বসন ত

এছাড়াও পড়ুন:

পিএসএল অভিষেকে উজ্জ্বল রিশাদ

ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটে নিজের অভিষেকে দু্যতি ছড়ালেন রিশাদ হোসেন। পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) রোববার লাহোর কালান্দার্সের হয়ে কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্সের বিপক্ষে ৪ ওভারে ৩১ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন রিশাদ। টানা বোলিং স্পেলে ১০টি ডট বল খেলান বাংলাদেশের লেগ স্পিনার। অভিষেকে উজ্জ্বল পারফরম‌্যান্স কেড়ে নিয়েছেন সবার নজর। জিতেছে তার দল লাহোরও। 

রাওয়ালপিণ্ডিতে আগে ব‌্যাটিংয়ে নেমে লাহোর ২১৯ রান করে। জবাব দিতে নেমে ১৪০ রানে গুটিয়ে যায় কোয়েটা। ৭৯ রানের বিশাল ব‌্যবধানে জয় পায় লাহোর। 

দেশের বাইরে এর আগে বিগ ব্যাশ, জিম আফ্রো টি-টোয়েন্টি এবং কানাডার গ্লোবাল টি-টোয়েন্টিতে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন রিশাদ। কিন্তু নানা কারণে খেলার সুযোগ মেলেনি তার। এবার পিএসএলে তাকে পুরো আসর খেলার জন‌্য অনাপত্তিপত্র দিয়েছে বিসিবি।

লেগ স্পিনার লাহোরের হয়ে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা প্রথম ম‌্যাচে বুঝিয়ে দিয়েছেন। রিশাদ যখন বোলিংয়ে আসেন তখন পরিস্থিতি অনুকূলে ছিল। বিশাল লক্ষ‌্য তাড়া করতে নেমে ৬ ওভারে ৫৪ রান তুলতে ৪ উইকেট হারায় কোয়েটা। 
সপ্তম ওভারে বোলিং করতে এসে নিজের প্রথম ওভারে ৭ রান দেন রিশাদ। হজম করেননি কোনো বাউন্ডারি। দ্বিতীয় ওভারে বাউন্ডারি হজমের সঙ্গে উইকেটেরও স্বাদ পান। তার চতুর্থ বলে ছক্কা ওড়ান রাইলি রুশো। পরের বল একটু দ্রুতগতিতে সিমের ওপর দিয়েছিলেন রিশাদ। তাতে উইকেট হারান রুশো। বিপজ্জনক এই ব‌্যাটসম‌্যানকে ফিরিয়ে রিশাদ দলের জয়ের পথ মসৃণ করেন। 

২২ বছর বয়সী বোলার তৃতীয় ওভারে দেন ৯ রান। চতুর্থ ওভারে পান জোড়া সাফল‌্য। মোহাম্মদ আমিরকে বোল্ড করার পর আবরার আহমেদকে ডিপ স্কয়ার লেগে তালুবন্দি করান। তাতে ৩১ রানে রিশাদের প্রাপ্তি ৩ উইকেট। এর আগে শেষ দিকে ব‌্যাটিংয়ে নেমে ১ বল খেলার সুযোগ পান। ১ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। 
লাহোরের এই ম‌্যাচের জয়ের নায়ক ফখর জামান। ৩৯ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৬৭ রান করেন তিনি। এছাড়া শেষ দিকে স‌্যাম বিলিংস ১৯ বলে ৫০ করেন ৪টি করে চার ও ছক্কায়। আগামী মঙ্গলবার করাচির মাঠে নিজেদের দ্বিতীয় ম‌্যাচ খেলবে লাহোর।

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ