বগুড়ায় বিনোদন পার্ক থেকে পাখি, হনুমান ও বানর উদ্ধার
Published: 13th, February 2025 GMT
বগুড়ার কাহালুতে একটি বিনোদন পার্ক ও রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়ে শঙ্খচিল, ভুবনচিল, ডাহুক, পাতি সরালি, বেগুনি কালিম, মদনা টিংসহ বিভিন্ন প্রজাতির ৩৪টি পাখি, ২টি হনুমান ও ২টি রেসাস বানর উদ্ধার করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল চারটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত রাবেয়া পার্ক অ্যান্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্টে অভিযান চালায় বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের ঢাকা থেকে আসা একটি দল। বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে কাহালু উপজেলার বীরকেদার এলাকায় পার্কটির অবস্থান।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট ঢাকার পরিদর্শক অসিম মল্লিক ও আবদুল্লাহ আস সাদিক। উদ্ধার করা এসব পাখি তাৎক্ষণিক অবমুক্ত করা হয়। দুটি মুখপোড়া হনুমান সিলেটের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান ও দুটি রেসাস বানর টাঙ্গাইল অভয়াশ্রমে মুক্ত করা হবে বলে বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
অসিম মল্লিক প্রথম আলোকে বলেন, বন বিভাগের অনুমতি ছাড়াই বাণিজ্যিক প্রদর্শনের উদ্যোশে কাহালু উপজেলার রাবেয়া পার্কে বিভিন্ন প্রজাতির ৩৪টি পাখি এবং ২টি মুখপোড়া হনুমান ও ২টি বানর সংরক্ষণ করা হয়েছিল। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ৩৮টি বন্য প্রাণী উদ্ধার করা হয়। এসব প্রাণীর মধ্যে রয়েছে ২টি হনুমান, ১৫টি ঘুঘু, ৫টি সবুজ টিয়া, ১টি মদনা টিং, ১টি শঙ্খচিল, ২টি রেসাস বানর, ৩টি ভুবনচিল, ৪টি ডাহুক, ১টি পাতি সরালি ও ৪টি বেগুনি কালিম। ওই পার্ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন বলে জানান তিনি।
রাবেয়া পার্ক অ্যান্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্টের মালিক আনিছুল রহমান বলেন, দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য পার্কে হনুমান, বানর ও পাখি প্রদর্শন করা হয়েছিল। বন বিভাগ থেকে অনুমতি নেওয়ার বিষয়টি তাঁদের জানা ছিল না।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বন য প র ণ হন ম ন
এছাড়াও পড়ুন:
মেট্রোরেল কর্মীদের কর্মবিরতি, ভাড়া আদায় ব্যবস্থা অকার্যকর
এমআরটি পুলিশ সদস্য দ্বারা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) চারজন কর্মী মৌখিকভাবে ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালন করছে মেট্রোরেল কর্মীরা। ফলে আজ সোমবার সকাল থেকে মেট্রোরেল চলাচলে নানা জটিলতা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে যাত্রীদের ভাড়া আদায় করার ব্যবস্থা অকার্যকর হয়ে আছে।
মেট্রোরেলে ফার্মগেট স্টেশন থেকে সকাল সাড়ে আটটার দিকে কারওয়ান বাজারে আসেন বেসরকারি চাকরিজীবী তাপসী রায়। তিনি বলেন, ফার্মগেটে ঢোকার সময় কার্ড পাঞ্চ করার পর তিনি যেতে পেরেছেন। তবে কারওয়ান বাজারে নেমে পাঞ্চ মেশিন তিনি অচল দেখেন। পাঞ্চ না করেই চলে আসতে পেরেছেন। এ সময় সেখানে থাকা কয়েকজন তাঁকে চলে যেতে বলেন। পরে জরিমানা করা হবে কি না জানতে চাইলে তাঁরা বলেন আজকে কিছু করা হবে না। টিকিটের কাউন্টারগুলোও বন্ধ দেখেছেন তিনি। ফলে যাদের এমআরটি ও র্যাপিড পাস আছে শুধু তারাই যাতায়াত করতে পারছেন। কেউ টিকিট কাটতে পারছেন না।
ডিএমটিসিএলের জনসংযোগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মো. জাহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, কর্মীদের ধর্মঘটের কারণে মেট্রোরেল চলাচলে কোনো বিঘ্ন ঘটেনি। চলাচল স্বাভাবিক আছে । তবে কোথাও কোথাও কোথাও রাজস্ব আয়ে সমস্যা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ স্টেশনে স্টেশনে কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করছেন। সুরাহা হয়ে যাবে।
রাতে 'ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ‘সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ' ব্যানারে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনা তুলে ধরে ছয়টি দাবি জানানো হয়।
মেট্রোরেল কর্মীদের দাবিগুলো হচ্ছে, আগামী এক কার্যদিবসের মধ্যে ঘটনার মূল হোতা ওই পুলিশ সদস্যকে (এসআই মাসুদ) স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করতে হবে ও ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সব পুলিশ সদস্যকে (কনস্টেবল রেজনুল, ইন্সপেক্টর রঞ্জিত) শাস্তি দিতে হবে এবং তাদের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। মেট্রোরেল, মেট্রো স্টাফ ও যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলতে হবে, এমআরটি পুলিশকে অবিলম্বে বাতিল করতে হবে, স্টেশনে দায়িত্বরত সিআরএ টিএমও, স্টেশন কন্ট্রোলারসহ অন্য সব কর্মীদের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, অফিশিয়াল পরিচয়পত্র ও অনুমতি ছাড়া কোনো ব্যক্তি যেন স্টেশনের পেইড জোনে প্রবেশ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে এবং আহত কর্মীর সম্পূর্ণ চিকিৎসার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কর্মসূচি ঘোষণা করে বলা হয়, দাবিগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা মেট্রোরেলের সব কর্মী কর্মবিরতি পালন করব এবং প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব। আমরা আশা করি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এবং মেট্রো স্টেশনে নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করবেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে বলা হয়, ‘আনুমানিক বিকেল সোয়া ৫টায় দুজন নারী কোনো পরিচয়পত্র না দেখিয়ে সিভিল ড্রেসে বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ করে এসে ইএফও অফিসের পাশে থাকা সুইং গেট ব্যবহার করে পেইড জোন থেকে বের হতে চান। যেহেতু তারা নির্ধারিত ইউনিফর্ম পরিহিত ছিলেন না ও তাদের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি, তাই দায়িত্বপ্রাপ্ত সিআরএ নিয়ম অনুযায়ী তাদের সেখান থেকে পিজি গেট ব্যতীত সুইং গেট দিয়ে বের হওয়ার কারণ জানতে চান। তবে, সংশ্লিষ্ট পুলিশের কর্মকর্তারা এতে উত্তেজিত হয়ে তর্কে লিপ্ত হন এবং একপর্যায়ে এমআরটি পুলিশের কন্ট্রোল রুমে চলে যান।'
'পরবর্তীতে ঠিক একইভাবে দুজন এপিবিএন সদস্য সুইং গেট ব্যবহার করে সুইং গেট না লাগিয়ে চলে যান, উক্ত বিষয়ের কারণ তাদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা পূর্বের ঘটনার জের ধরে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। কিছুক্ষণ পরে পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে আরও কয়েকজন পুলিশ এসে দায়িত্বে থাকা সিআরএ এর সঙ্গে ইএফও'তে তর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং ইএফও থেকে বের হওয়ার সময় কর্মরত সিআরএ এর কাঁধে বন্দুক দিয়ে আঘাত করে এবং কর্মরত আরেকজন টিএমও এর শার্টের কলার ধরে জোরপূর্বক এমআরটি পুলিশ বক্সে নিয়ে গিয়ে মারধর করে এবং গুলি করার জন্য বন্দুক তাক করে। উপস্থিত স্টেশন স্টাফ ও যাত্রীগণ বিষয়টি অনুধাবন করে উক্ত এমআরটি পুলিশ এর হাত থেকে কর্মরত টিএমওকে পুলিশের কাছ থেকে বাঁচিয়ে নিয়ে আসে।’