বলিউডের অনেক সিনেমায় ব্যবহৃত প্রেমিক-প্রেমিকার মুখের কত বুলি যে বাস্তবের প্রেমিক-প্রেমিকা সঠিক প্রয়োগ করে প্রিয়জনের হৃদয় জিতে নিয়েছেন, তা বলা মুশকিল। ‘মুঘল-ই-আজম’ থেকে ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’সহ আরও অনেক ছবির রোমান্টিক সংলাপগুলো এখনও চিরসবুজ। আগামীকাল ভালোবাসা দিবস। মনের মানুষকে ভালোবাসা প্রকাশের জন্য উপযুক্ত দিন এটি। সিনেমায় ব্যবহার করা সংলাপগুলোতে একবার চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন। বলা যায় না, কখন কোনটা কাজে লেগে যায়!
ইয়ে জাওয়ানি হে দিওয়ানি
আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে থেকো না, আমি আবার তোমার প্রেমে পড়ে যাব।
আশিকি টু
প্রেম, ভালোবাসা– এসব কেবলই শব্দ, বাক্যের বাইরে কিছুই নয়। আবার তুমি যখন প্রেমে পড়বে, কেবল তখনই ওই সব শব্দ, বাক্য ভাষা পাবে, অর্থ তৈরি করবে।
দিল চাহতা হ্যায়
আমি নিশ্চিত যে, আমি জন্মেছি শুধু তোমাকে ভালোবাসতে এবং তুমি একদিন আমার হয়ে উঠবে।
কাহো না প্যায়ার হ্যায়
তোমাকে দেখার জন্য আমার এই দুই চোখের দরকার নেই। আমি চোখ বন্ধ করে মনের দরজা খুলে তোমাকে আরও স্পষ্ট দেখতে পাই।
কোয়ি মিল গায়া
আমার বিশ্বাস, আমার জন্ম হয়েছে তোমার প্রেমে পড়ার জন্য। তোমাকে ভালোবাসার জন্য। তুমি জন্মেছ একদিন আমার হবে বলে।
যাব উই মেট
যখন কেউ প্রেমে পড়ে, তখন সে ভুল, নির্ভুলের ঊর্ধ্বে চলে যায়।
কাল হো না হো
প্রেম তো কত লোকেই করে। আমার মতো তীব্র প্রেমে কেউ কখনও পড়েনি। কারণ, অন্য কারও কাছে তো তুমি নেই।
ফানা
আমাকে ছেড়ে যাবে কীভাবে? আমাকে মুছে ফেলবে কীভাবে? আমি তোমার নিঃশ্বাসের ঘ্রাণ, শ্বাসপ্রশ্বাস ছাড়া বাঁচবে কীভাবে?
কুছ কুছ হোতা হ্যায়
আমরা একবার জন্ম নিই, একবার মারা যাই, একবার বিয়ে করি আর একবারই প্রেমে পড়ি।
ওম শান্তি ওম
আমি পাগলের মতো হন্যে হয়ে তোমাকে খুঁজেছি, পেতে চেয়েছি। তাই মহাবিশ্ব আর তার সবকিছু, সব শক্তি তোমাকে আমার কাছে পৌঁছে দিয়েছে।
এ দিল হ্যায় মুশকিল
ভালোবাসা। ভালোবাসা হলো এক তুফানের মতো; যা তোমাকে পৃথিবীর বিরুদ্ধে কখনও বিদ্রোহী করে তোলে, আবার সেই ভালোবাসাই তোমাকে পৃথিবীর সব থেকে শান্তি এনে দিতে পারে।
মহব্বতে
ভালোবাসাও জীবনের মতোই। সব মুহূর্ত সহজ হয় না, সব পরতে সুখ মেলে না। আমরা যদি জীবনের সঙ্গ না ছাড়ি তবে ভালোবাসার সঙ্গ কেন ছাড়ব।
দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে
আমার এমনই একজন প্রয়োজন, যাকে দেখতেই মনের সব আকাঙ্ক্ষা, সব রং, সব স্বপ্ন জীবন্ত হয়ে ওঠে। এখনও তা হয়নি। এখন মনে হচ্ছে, মেঘের আড়াল থেকে কোনো একজনের চেহারা উঁকি দিচ্ছে। জানি না কখন সে মেঘ সরিয়ে দেখা দেবে।
হাম দিল দে চুকে সনম
পরের সাত জনম ধরে তুমি বনরাজেরই থাকবে। আট নম্বর জনমে তুমি আমার হবে। তখন কোনো বনরাজ থাকা যাবে না, প্লিজ। আর নন্দু তুমি আমায় এভাবে দেখো না– কারণ, তুমি আবার আমার প্রেমে পড়ে যাবে.
বীর-জারা
আমি জানি না ভালোবাসা কী জিনিস... হ্যাঁ, জারার জন্য অন্তর থেকে দোয়া করি যে, তার চোখে কখনও অশ্রু না আসুক। সে সব সময় সুখী থাকুক। এখন এটা যদি ভালোবাসা হয়, তবে ভালোবাসাই হোক।
সিলসিলা
আমি ও আমার একাকিত্ব প্রায়ই কথা বলি, তুমি থাকলে কী হতো, তুমি এটা বলতে, তুমি সেটা করতে। তুমি এ কথায় চিন্তায় পড়তে, তুমি ওই কথায় কতটা হাসতে, তুমি থাকলে এমন হতো, তুমি থাকলে কেমন হতো!
বাজিরাও মাস্তানি
ভালোবাসা জটিল। সেই জটিল ভালোবাসার মধ্যেও কীভাবে শান্তি পেতে হয় তা খুব কম লোকই জানে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ভিজিএফ কর্মসূচির চালের বস্তায় এখনও শেখ হাসিনার নামসহ স্লোগান
শরীয়তপুরে নিবন্ধিত জেলেদের মাঝে বিতরণ করা ভিজিএফ (ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং) কর্মসূচির চালের বস্তায় এখনও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামমহ স্লোগান লেখা রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের সাত মাস অতিবাহিত হলেও সরকারি চালের বস্তায় তার নাম থাকার বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চললেও শনিবার দুপুর পর্যন্ত এ বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, যা অনেকের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
জানা যায়, শরীয়তপুর জেলার জাজিরা, নড়িয়া, ভেদরগঞ্জ ও গোসাইরহাট উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের নিবন্ধিত ১৫ হাজার ৪৪৬ জন জেলের মাঝে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় বিনামূল্যে চাল বিতরণ করা হয়। প্রতি জেলেকে দুই মাসের জন্য ৮০ কেজি চাল দেওয়া হয়, যা ৩০ কেজি ওজনের বস্তায় প্যাকেট করা ছিল। তবে বিতরণ করা চালের বস্তাগুলোর গায়ে স্পষ্টভাবে লেখা রয়েছে— ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ’।
কিছু জায়গায় কালো রঙের স্প্রে দিয়ে স্লোগানটি ঢাকার চেষ্টা করা হলেও বেশিরভাগ জায়গায় এটি স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে। জেলার প্রায় প্রতিটি ভিজিএফ চাল বিতরণ কেন্দ্রে এমন বস্তা পাওয়া গেছে। চাল বিতরণের সময় অনেকেই বস্তাগুলো দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং এর পেছনের কারণ জানতে চান। স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকার পরিবর্তনের পরও পুরোনো সরকারের নাম ও স্লোগান সম্বলিত চালের বস্তা বিতরণ করা পরিকল্পিত কোনো কর্মকাণ্ড কিনা, তা খতিয়ে দেখা দরকার।
স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভ:
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, চাল বিতরণের আগে তারা বিষয়টি খেয়াল করেছিলেন এবং কিছু জায়গায় বস্তাগুলোর গায়ের লেখাটি মুছে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে অনেক জায়গায় এই প্রচেষ্টাটি যথাযথভাবে করা হয়নি, যার ফলে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
কোদালপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন খান বলেন, ‘গত বুধবার খাদ্যগুদাম থেকে চালের বস্তাগুলো এনে জেলেদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। আমরা কিছু বস্তার ওপর শেখ হাসিনার নাম কালো কালি দিয়ে মুছে দিয়েছিলাম, কিন্তু অনেক বস্তায় নাম ও স্লোগান স্পষ্টভাবে থেকে যায়। এতে জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শরীয়তপুর জেলা আহ্বায়ক ইমরান আল নাজির বলেন, ‘শেখ হাসিনা ও তার সরকারের এমপিরা ক্ষমতা থেকে বিদায় নিলেও তৃণমূল থেকে সচিবালয় পর্যন্ত তার অনুগতরা রয়ে গেছে। তারা বিভিন্নভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। সরকারি চাল জনগণের করের টাকায় কেনা হয়, এটি কোনো দলের ব্যক্তিগত দান নয়। শেখ হাসিনার সরকার পতনের পরও চালের বস্তায় তার নাম থাকা দুর্ভাগ্যজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত। আমরা খাদ্য অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে অনুরোধ জানাই, দ্রুত এসব বস্তা নিষিদ্ধ করা হোক। অন্যথায় কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে এর দায়ভার রাষ্ট্র কিংবা জনগণ নেবে না।’
দক্ষিণ তাঁরাবুনিয়া ইউনিয়নের চাল বিতরণের ট্যাগ অফিসার ফিরোজ মিয়া বলেন, ‘৫ আগস্টের পর দেশে নতুন সরকার আসাং প্রশাসনে কিছু পরিবর্তন এসেছে। তাই এসব বস্তার পরিবর্তনও করা উচিত ছিল। চালের বস্তায় পুরোনো সরকারের নাম থাকা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং নিন্দনীয়। সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর উচিত পরবর্তী চাল বিতরণের আগে এসব বস্তার পরিবর্তন নিশ্চিত করা।’
এ বিষয়ে শরীয়তপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে এসব চালের বস্তা কেনা হয়েছিল এবং সেসময় সরকারিভাবে এসব বস্তায় শেখ হাসিনার নাম ও স্লোগান সংযোজন করা হয়েছিল। সরকার পরিবর্তনের পর নতুন সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, এসব বস্তা থেকে নাম মুছে ফেলার জন্য। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি স্প্রে দিয়ে নামটি মুছে দেওয়ার, তবে কিছু জায়গায় তা সম্ভব হয়নি। পরবর্তী চাল বিতরণের সময় বিষয়টি আরও কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে এবং যদি কোনো দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি অবহেলা করেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সরকার পরিবর্তনের সাত মাস পরেও ভিজিএফ কর্মসূচির চালের বস্তায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম থাকার বিষয়টি সাধারণ মানুষের মাঝে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে। স্থানীয়দের অনেকেই মনে করেন, এটি ইচ্ছাকৃতভাবে রাখা হয়েছে, যাতে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। আবার কেউ কেউ মনে করেন, পুরনো মজুত থেকে চাল বিতরণ করায় এমনটি হয়েছে। তবে জনগণের দাবি, সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে।