স্বাধীন ও নিরপেক্ষ গণমাধ্যমের জন্য নীতিমালা প্রয়োজন
Published: 13th, February 2025 GMT
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) সম্প্রতি গণমাধ্যম সম্পর্কে মানুষের মতামত জানার জন্য দেশব্যাপী একটি জরিপ করেছে। ‘গণমাধ্যম বিষয়ে জাতীয় জনমত জরিপ’–এর উদ্দেশ্য ছিল মানুষ গণমাধ্যমকে কত সহজে পান, কীভাবে ব্যবহার করেন, কতটা বিশ্বাস করেন আর গণমাধ্যম কতখানি স্বাধীন, সে সম্পর্কে তাঁদের ভাবনা জানা। জরিপে এটা বোঝার চেষ্টা করা হয়েছে যে বাংলাদেশের মানুষ গণমাধ্যমকে কীভাবে দেখেন আর এটি কতটা নিরপেক্ষভাবে খবর দিতে পারে।
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনকে অনেক ধন্যবাদ এই জরিপের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য। সরকারের উদ্যোগে এ ধরনের জরিপ দেশে প্রথমবারের মতো হয়েছে। ২০২৫ সালের ১ থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত পরিচালিত এ জরিপে কম্পিউটার দিয়ে ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকার (সিএপিআই) পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। এতে তথ্য সংগ্রহ করা দ্রুত ও সহজ হয়েছে। এ জরিপে ৬৪টি জেলার ৩৬টি করে মোট ২ হাজার ৩০৪টি এলাকা (যাকে পিএসইউ বলা হয়) বেছে নেওয়া হয়েছিল।
এলাকাগুলো এমনভাবে বাছাই করা হয়েছিল, যাতে সব অঞ্চলের মানুষের মতামত নেওয়া যায়। এরপর প্রতিটি এলাকা থেকে ২০টি করে সাধারণ পরিবার নির্বাচন করা হয়। সব মিলিয়ে ৪৫ হাজার ৪৮০টি পরিবারের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করার পরিকল্পনা ছিল।
নির্বাচিত পরিবারগুলোর মধ্যে ১০ বছর বা তার বেশি বয়সের সদস্যদের (পুরুষ ও নারী) মধ্য থেকে ‘কিশ গ্রিড’ নামের একটি পদ্ধতির মাধ্যমে একজনকে বেছে নেওয়া হয়েছে। তাঁর কাছ থেকেই তথ্য নেওয়া হয়েছে। এই হিসাবে, জরিপে ২ দশমিক ২৫ শতাংশ উত্তর পাওয়া যায়নি; যদিও জরিপের শুরুতে ১০ শতাংশ উত্তর না পাওয়ার একটা হিসাব ধরা হয়েছিল।
সম্প্রতি গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তির পরিপ্রেক্ষিতে ৭ ফেব্রুয়ারি ওই জরিপের ফলসংবলিত প্রতিবেদন বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়েছে।
জরিপের পূর্ণ ডেটাসেট বিবিএস বা গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের ওয়েবসাইটে না থাকায় কমিশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তির আলোকে এ জরিপ সম্পর্কে আমার কিছু ভাবনা তুলে ধরছি। জরিপের একটি তথ্য বেশ চমকপ্রদ। জরিপে দেখা গেছে, শিক্ষকেরাই হলেন বাংলাদেশে জ্ঞান ও শিক্ষালাভের সবচেয়ে বিশ্বস্ত উৎস।
জাতীয়ভাবে ৪২ দশমিক ৪১ শতাংশ উত্তরদাতা তাঁদের নির্ভরযোগ্য মনে করেন। তবে স্থান ও লিঙ্গের ওপর ভিত্তি করে কিছু ভিন্নতা রয়েছে। গ্রামীণ এলাকায় শিক্ষকের ওপর বিশ্বাসের মাত্রা বেশি, ৪৪ দশমিক ৮২ শতাংশ, যেখানে শহর এলাকায় এই হার ৩৪ দশমিক ১২। এটি থেকে বোঝা যায়, গ্রামীণ সমাজে শিক্ষকেরা সম্ভবত আরও বেশি প্রভাব রাখেন। মোটাদাগে বললে, দেশের মানুষ গণমাধ্যমের অভিগম্যতা, বিশ্বাসযোগ্যতা ও স্বাধীনতা নিয়ে নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন।
এ জরিপে মোট ৪৫ হাজার ৫৫ জন মানুষ অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে ২১ হাজার ৯০০ জন পুরুষ ও ২৩ হাজার ১৪৫ জন নারী। শতাংশের হিসাবে পুরুষদের অংশগ্রহণ ৪৮ দশমিক ৬২ এবং নারীদের অংশগ্রহণ ৫১ দশমিক ৩৮। জরিপ অনুযায়ী নারীদের অংশগ্রহণ পুরুষদের তুলনায় বেশি। সাধারণত অনেক জরিপে দেখা যায়, নারীদের অংশগ্রহণ কম থাকে। কিন্তু এখানে তাঁদের সংখ্যা বেশি হওয়া ইতিবাচক দিক হতে পারে।
জরিপের তথ্য বলছে, বাংলাদেশে গণমাধ্যম ব্যবহারের ধরন পরিবর্তিত হয়েছে, যেখানে মুঠোফোন সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত মাধ্যম। মোট ৫৯ দশমিক ২৮ শতাংশ মানুষ মুঠোফোন ব্যবহার করে গণমাধ্যমে প্রবেশ করেন, যা শহর ও গ্রাম উভয় জায়গাতেই জনপ্রিয়। তবে গ্রামে এ হার কিছুটা বেশি—৬১ দশমিক ৯৩ শতাংশ, যেখানে শহরে ৫২ দশমিক ৮৫ শতাংশ। নারীরা মুঠোফোন বেশি ব্যবহার করেন (৬৬ দশমিক ৯৯ শতাংশ), যেখানে পুরুষদের ব্যবহারের হার কিছুটা কম (৫৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ)।
টেলিভিশন এখনো গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে রয়ে গেছে, বিশেষ করে জাতীয় সংকটের সময় এটি সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সূত্র। জরিপে দেখা গেছে, ৩৫ দশমিক ১৭ শতাংশ মানুষ জাতীয় সংকটের সময় টেলিভিশনের ওপর নির্ভর করেন। জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশে ফেসবুক (৩১ দশমিক ৩৬ শতাংশ) সবচেয়ে বেশি বিশ্বাসযোগ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হয়। এরপর রয়েছে ইউটিউব (১৬ দশমিক ৫০ শতাংশ)। অন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর প্রতি মানুষের আস্থা খুবই কম।
পত্রিকা পড়ার হার তুলনামূলকভাবে কম। সারা দেশে ২৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ মানুষ পত্রিকা পড়েন। শহরে এর হার বেশি (৩৫ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ), যেখানে গ্রামে এই হার কম (২৪ দশমিক ৬২ শতাংশ)। পুরুষদের মধ্যে ৩৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ পত্রিকা পড়েন, যেখানে নারীদের মধ্যে এই হার মাত্র ২০ দশমিক ৫১।
বেশির ভাগ পাঠক মুদ্রিত পত্রিকা পছন্দ করেন (৩৭ দশমিক ৬১ শতাংশ), কিছু মানুষ কম্পিউটার বা ল্যাপটপে পড়েন (২ দশমিক ৫৪ শতাংশ)। যাঁরা পত্রিকা পড়েন না, তাঁদের প্রধান কারণ সময়ের অভাব (১৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ) এবং এটি প্রয়োজনীয় মনে না করা (৪৬ দশমিক ৫২ শতাংশ)। আমার পর্যবেক্ষণ, দেশের সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সাংবাদিকতা বিভাগের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর সংবাদপত্র পড়ার কোনো অভ্যাস নেই। কারণ, মুঠোফোনেই সব খবর পাওয়া যায়।
টেলিভিশন দেখা মানুষের সংখ্যা পত্রিকার তুলনায় অনেক বেশি। মোট ৬৫ দশমিক ৪২ শতাংশ মানুষ টেলিভিশন দেখেন। শহরে এর হার বেশি (৭৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ), যেখানে গ্রামে কম (৬২ দশমিক ৬৮ শতাংশ)। পুরুষদের মধ্যে ৭১ দশমিক ৩১ শতাংশ টেলিভিশন দেখেন, যেখানে নারীদের মধ্যে এই হার ৫৯ দশমিক ৮৫। যাঁরা টেলিভিশন দেখেন না, তাঁদের প্রধান কারণ হলো টেলিভিশন না থাকা (২ দশমিক ১৯ শতাংশ), সময়ের অভাব (১২ দশমিক ৫০ শতাংশ) এবং আগ্রহ না থাকা (৫৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ)।
রেডিওর জনপ্রিয়তা সবচেয়ে কম। মাত্র ৬ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ মানুষ রেডিও শোনেন। শহরে এর হার কিছুটা বেশি (৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ), যেখানে গ্রামে ৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ। পুরুষদের মধ্যে ৭ দশমিক ১৫ শতাংশ রেডিও শোনেন, যেখানে নারীদের মধ্যে এই হার ৫ দশমিক শূন্য ৫। রেডিও না শোনার প্রধান কারণ হলো এটি প্রয়োজনীয় মনে না করা (৫৪ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ), সময়ের অভাব (৭ শতাংশ) এবং বর্তমানে রেডিও অপ্রাপ্যতা (৩৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ)।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে অনেক মানুষ সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। মাত্র ১৭ দশমিক ২৯ শতাংশ মানুষ মনে করেন, গণমাধ্যম পুরোপুরি স্বাধীন, যেখানে ২৪ দশমিক ১৮ শতাংশ মনে করেন, এটি অনেকটা স্বাধীন। বেশির ভাগ মানুষ মনে করেন, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ (৭৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ), সরকারি নিয়ন্ত্রণ (৭১ দশমিক ৫০ শতাংশ) এবং ক্ষমতাশালীদের প্রভাব (৫০ দশমিক ১৪ শতাংশ) গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পথে বাধা। প্রায় ৪৭ দশমিক ২২ শতাংশ মানুষ মনে করেন, সাংবাদিকেরা স্বাধীনভাবে প্রতিবেদন করতে পারেন না।
গণমাধ্যমের ভবিষ্যৎ নিয়ে জনগণের স্পষ্ট চাহিদা রয়েছে। ৬৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ মানুষ চান গণমাধ্যম স্বাধীন হোক, ৫৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ চান এটি নিরপেক্ষ হোক, ৩২ দশমিক ৬৮ শতাংশ চান এটি সরকারি হস্তক্ষেপমুক্ত থাকুক এবং ৩৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত গণমাধ্যম চান।
সরকারি নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে জনগণের মধ্যে কিছু মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। বেশির ভাগ মানুষ মনে করেন, বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা উচিত (৫৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ) এবং একইভাবে বাংলাদেশ বেতার সরকারের অধীন থাকা উচিত বলে মনে করেন (৫৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ)।
এ জরিপ গুরুত্বপূর্ণ হলেও এতে কিছু ত্রুটি রয়েছে। বিশেষ করে হোয়াটসঅ্যাপের মতো জনপ্রিয় মাধ্যমকে অন্তর্ভুক্ত না করায় তথ্যের সম্পূর্ণতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ ছাড়া ‘আগ্রহ না থাকা’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। কিছু প্রশ্নে একাধিক উত্তর দেওয়ার সুযোগ থাকায় বিশ্লেষণও জটিল হয়ে গেছে। জরিপ থেকে উত্তরদাতাদের পরিচিতি, যেমন আয়ের সীমা ও শিক্ষাগত যোগ্যতার কোনো তথ্য মেলেনি। ভবিষ্যতের জরিপে এসব সমস্যা ঠিক করা প্রয়োজন।
একই সঙ্গে এ ধরনের জরিপ কর্মরত সাংবাদিক, গণমাধ্যমের মালিক, কোম্পানির পরিচালক, সম্পাদক, রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজ, ব্যবসায়ী এবং সামরিক–বেসামরিক আমলাদের মধ্যে আলাদাভাবে করার প্রয়োজন ছিল। গণমাধ্যমের নীতিনির্ধারক হওয়ায় জানা প্রয়োজন ছিল, তাঁরা আসলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বলতে কী বোঝেন।
১৯৯৪ সালে মিলিটারি-মিডিয়া সম্পর্ক নিয়ে গবেষণার সময় আমি সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মরত ৫০ জন কর্মকর্তার ওপর জরিপ পরিচালনা করতে চেয়েছিলাম। আশ্বাসের ছয় মাস পর কর্তৃপক্ষ অপারগতা প্রকাশ করেছিল। গত বছরের গোড়ার দিকে এক আলাপচারিতায় কিছু জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক যখন আমাকে বললেন, ‘আমাদেরও স্বাধীনতা রয়েছে সরকারকে সমর্থন করার’, তখন কয়েক সেকেন্ডের জন্য আমি বাকহারা হয়েছিলাম। এ রকম যে এখনো অনেকেই ভাবছেন না, তা হলফ করে বলা যাবে না।
এই জরিপের যদিও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, তারপরও এটি বাংলাদেশের গণমাধ্যমের নীতিতে পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা স্পষ্ট করেছে। জরিপ থেকে বোঝা যায়, গণমাধ্যম সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো জরুরি, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চল ও নারীদের মধ্যে এটা প্রয়োজন। ভুল তথ্য এড়াতে এবং গণমাধ্যমের গুরুত্ব বোঝাতে প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা কার্যক্রম চালানো দরকার।
এ ছাড়া সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করাও জরুরি। মানুষ মনে করেন, রাজনীতি ও সরকার গণমাধ্যমকে প্রভাবিত করছে। তাই সংবাদমাধ্যমকে নিরপেক্ষ ও স্বাধীন রাখার জন্য নীতিমালা তৈরি করতে হবে। ডিজিটাল বৈষম্য কমানোও গুরুত্বপূর্ণ; যদিও মুঠোফোন ব্যবহারের হার বেশি, কম্পিউটার ব্যবহারের হার তুলনামূলকভাবে কম। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে প্রযুক্তির সুযোগ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন, যাতে সবাই ডিজিটাল তথ্যের সুবিধা নিতে পারেন।
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের নিয়ন্ত্রণ নিয়েও নতুন করে ভাবার প্রয়োজন আছে। জরিপে দেখা গেছে, অনেকেই মনে করেন, বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতার সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা উচিত। এটি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার চাহিদার সঙ্গে পুরোপুরি মেলে না। তাই এ বিষয়ে পুনর্বিবেচনা প্রয়োজন, যাতে স্বাধীনতা ও রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণের মধ্যে একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা তৈরি করা যায়।
ভবিষ্যতের জরিপ আরও কার্যকর করতে সব জনপ্রিয় মাধ্যমকে অন্তর্ভুক্ত করা, প্রশ্নগুলো আরও পরিষ্কার করা এবং উত্তরের জটিলতা কমানো দরকার।
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের এই জরিপ জনগণের দৃষ্টিভঙ্গি বোঝার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এতে স্পষ্ট হয়েছে, মানুষ স্বাধীন ও নিরপেক্ষ গণমাধ্যম চান। যদিও জরিপের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, তবু এটি গণমাধ্যম ব্যবস্থার উন্নয়নে বড় সুযোগ তৈরি করেছে। এখন এ তথ্যের ভিত্তিতে বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ হবে এ জরিপের পুরো ডেটাসেট উন্মুক্ত করে দেওয়া; বিশেষত যাঁরা গণমাধ্যম বিষয়ে গবেষণা করছেন, তাঁদের জন্য তো বটেই। সেটা না হলে তা বিবিএসের নীতির সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হবে। জরিপের উন্মুক্ত তথ্যের বাণিজ্যিক অপব্যবহার হতে পারে—শুধু এ বিবেচনায় জরিপের ডেটাসেট তালাবদ্ধ থাকলে বিশ্বাসের ঘাটতি বাড়াবে।
গণমাধ্যমকে নিরপেক্ষ ও স্বাধীন রাখার জন্য স্বনিয়ন্ত্রণের বিষয়েও ভাবতে হবে। গণমাধ্যমগুলোকে এখন নিজের ঘরের দিকেও তাকাতে হবে। নিজ ঘরের সুশাসন নিশ্চিত করা প্রয়োজন, সরকারের জবাবদিহির দাবির পাশাপাশি। গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের সুপারিশ বাস্তবায়নে গণমাধ্যম নিজেই যদি বড় প্রতিবন্ধক হিসেবে আবির্ভূত হয়, তবে বাক্স্বাধীনতা তো বটেই, গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাও প্রবল হোঁচট খাবে, ইতিহাস তা–ই বলে।
রিজওয়ান-উল-আলম সহযোগী অধ্যাপক, গণমাধ্যম, যোগাযোগ এবং সাংবাদিকতা কর্মসূচি, রাজনীতি ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দশম ক শ ন য গণম ধ যমক ব যবহ র র ব শ ষ কর ম ন ষ মন ম ধ যমক জনপ র য় ৭ দশম ক সরক র র ২ দশম ক এই হ র হয় ছ ল র জন য র জন ত গ রহণ সবচ য় র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
খাদ্যশষ্য চোরাচালান রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ খাদ্য উপদেষ্টার
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গৃহযুদ্ধের কারণে সেখানে খাদ্যের সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ থেকে সেখানে খাদ্যশষ্যের চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবিসহ দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর থাকার নির্দেশ দিয়েছেন খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ‘খাদ্যশস্য চোরাচালান প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদারকরণ’ বিষয়ক সভায় তিনি এ নির্দেশ দেন। সভা শেষে দুপুর ১টার দিকে সংক্ষিপ্ত প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
এ সময় খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, “রাখাইন রাজ্যে খাদ্য সংকট দেখা দিলে বাংলাদেশ থেকে কিছুটা চোরাচালান হওয়ার ঝুঁকি থাকে। আগে থেকে সার এবং জ্বালানি তেল চোরাচালানের একটা প্রবণতা এখানে ছিল। তাই নজরদারি অব্যাহত রাখা এবং প্রয়োজনে আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যাতে কোনো অবস্থাতেই চোরাচালান না হতে পারে।’’
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
অপারেশন ডেভিল হান্টে আশানুরূপ অস্ত্র উদ্ধার হয়নি
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠক ১৫ ফেব্রুয়ারি
দেশে বর্তমানে খাদ্যশষ্যের সরকারি মজুদ এবং আমদানি ব্যবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে মন্তব্য করে খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, “সামনে বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে চালের যে কিছুটা সংকট তৈরি হয়েছিল, সেটি কেটে যাবে এবং চালের দামও সহনশীল পর্যায়ে থাকবে।’’
আগামী রমজান মাসকে ঘিরে যাতে দাম সহনশীল থাকে, সেই বিষয়েও সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে জানান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘‘আগামী রমজান মাসে দেশের ৫০ লাখ পরিবার কেজি ১৫ টাকা দরে ৩০ কেজি চাল পাবে। এ ছাড়া আগামী ঈদ উপলক্ষে এক কোটি পরিবারকে এক লাখ মেট্রিক টন চাল দেওয়া হবে উপহার হিসেবে। এ-সবই হচ্ছে সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির অংশ হিসেবে। বর্তমান সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে।’’
এর আগে জেলা চোরাচালান প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ সালাহউদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব, পুলিশসহ জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/তারেকুর/বকুল