১৯৬৯ সালের গণ–অভ্যুত্থানে দেশের প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী সৈয়দ মুহম্মদ শামসুজ্জোহার মৃত্যুর দিনটি ‘জাতীয় শিক্ষক দিবস’ হিসেবে ঘোষণার দাবি জানিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার ঢাকায় উপদেষ্টার কার্যালয়ে স্মারকলিপিটি জমা দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার।

এর আগে সোমবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.

) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী রাজশাহী সফরে আসেন। একই দাবিতে তাঁর কাছেও স্মারকলিপি দেন রাজশাহীর কয়েকজন সমন্বয়ক।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে ১৯৬৯ সালের গণ–অভ্যুত্থান একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এ আন্দোলনে যেসব সাহসী ব্যক্তিত্ব তাঁদের জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাঁদের মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক শামসুজ্জোহা প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী ছিলেন। ছাত্রদের জীবন রক্ষায় তিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করে বাংলাদেশে শিক্ষক নেতৃত্বের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাঁর এই আত্মত্যাগ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন মুক্তিসংগ্রামে বিপ্লবীদের অনুপ্রাণিত করেছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদও ‘জোহা স্যার’ হতে চেয়েছিলেন উল্লেখ করে স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়েছে, ‘সর্বশেষ চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানে যখন শিক্ষার্থীরা গুলির সম্মুখীন হয়েছিল, তখন শিক্ষকেরা নির্লিপ্ত ছিলেন। এ সময় শহীদ শামসুজ্জোহা স্যারের অনুপস্থিতি আমরা গভীরভাবে অনুভব করেছি। শহীদ আবু সাঈদও লিখেছিলেন, “আমি জোহা স্যার হতে চাই।”’

আরও পড়ুনছাত্রদের বাঁচাতে জীবন দিয়েছিলেন যে শিক্ষক২৮ জুলাই ২০২৪

শামসুজ্জোহার মৃত্যুর দিনটি জাতীয় শিক্ষক দিবস হিসেবে ঘোষণার দাবি জানিয়ে স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা বিশ্বাস করি, জাতি হিসেবে আমাদের নৈতিক দায়িত্ব হলো শহীদ জোহা স্যারের আত্মত্যাগকে যথাযথ সম্মান দেওয়া। তাঁর আদর্শ ও ত্যাগ নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের জন্য চিরন্তন প্রেরণা হয়ে থাকবে। অতএব শহীদ শামসুজ্জোহাকে যথাযোগ্য জাতীয় মর্যাদায় ভূষিত করা এবং তাঁর আত্মত্যাগকে স্মরণীয় রাখতে প্রতিবছর ১৮ ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় শিক্ষক দিবস হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানাচ্ছি।’ সেই সঙ্গে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ জোহার স্মরণে বিশেষ আলোচনা সভা ও শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠান আয়োজন করার দাবি জানানো হয়েছে স্মারকলিপিতে।

আরও পড়ুন‘স্যার! এই মুহূর্তে আপনাকে ভীষণ দরকার, স্যার!’১৭ জুলাই ২০২৪১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রক্টর সৈয়দ মুহম্মদ শামসুজ্জোহা পাকিস্তানি সৈন্যদের গুলির নিশানা হন। পরে বেয়নেটের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করে তাঁকে হত্যা করা হয়।

এ ব্যাপারে সালাহউদ্দিন আম্মার প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থান, যেকোনো আন্দোলনে শহীদ শামসুজ্জোহা আমাদের উদ্দীপনা ও সাহস হিসেবে কাজ করেছেন। চব্বিশের আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদও জোহা স্যার হতে চেয়েছিলেন। আবু সাঈদকে নিয়ে দিবস হতে পারলে জোহা স্যার কেন নয়। এটি আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি। আজ (গতকাল) শিক্ষা উপদেষ্টা এবং সোমবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি জমা দিয়েছি। তাঁরা আমাদেরকে দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।’

১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রক্টর সৈয়দ মুহম্মদ শামসুজ্জোহা পাকিস্তানি সৈন্যদের গুলির নিশানা হন। পরে বেয়নেটের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করে তাঁকে হত্যা করা হয়। ১৮ ফেব্রুয়ারি শামসুজ্জোহার মৃত্যুর পর থেকেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দিনটিকে ‘শিক্ষক দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ১৮ ফ ব র য় র স ম রকল প ত উপদ ষ ট র প রথম আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

অস্ট্রেলিয়াতেও হাউজফুল দাগি, বাড়ছে শো

দেশের মাল্টিপ্লেক্সেগুলোতে দারুণ দর্শক টেনেছে শিহাব শাহীন পরিচালিত সিনেমা ‘দাগি’। সিনেমাটির জন্য দর্শকদের মাঝে হাহাকার তৈরি হয়েছিল। ফলে ঈদের দুই সপ্তাহ পরও সিনেমাটির শো হাউজফুলের খবর আসছে। দেশ মাতিয়ে এবার সিনেমাটিদেশের বাইরেও চমক দেখাতে শুরু করেছে। 

ইতোমধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটি। দেশটির সিডনিতে গত ১২ এপ্রিল  সিনেমাটি মুক্তির পর থেকে হাউজফুল যাচ্ছে বলে খবর আসছে। 

নির্মাতা শিহাব শাহীন জানান, পথ প্রোডাকশন এবং ঈগল এন্টারটেইনমেন্টের পরিবেশনায় ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় ১৫টি শোর অগ্রিম টিকিট বিক্রি চলছে। একই পরিবেশকের অধীনে নিউজিল্যান্ডে মুক্তি পাবে সিনেমাটি। এরপর পর্যায়ক্রমে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ আরও অনেক দেশে মুক্তির কথা রয়েছে।

পথ প্রোডাকশনসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মুক্তির পর অলরেডি শো হাউজফুল যাচ্ছে। শুরুতে অস্ট্রেলিয়ায় ১৫টি শো চলার কথা থাকলেও, দর্শক চাপে আরও ৫টি শো বেড়ে ২০ টি শো চালানো হবে। 

‘দাগি’তে অভিনয় করেছেন আফরান নিশো। এই সিনেমার মাধ্যমে দুই বছর পর সিনেমা হলে ফিরেছেন তিনি। তার সঙ্গে অভিনয় করেছেন তমা মির্জা, সুনেরাহ বিনতে কামাল, শহীদুজ্জামান সেলিম প্রমুখ।

প্রযোজনা করেছে এসভিএফ আলফা আই এন্টারটেইনমেন্ট।

সম্পর্কিত নিবন্ধ