Samakal:
2025-02-13@09:42:09 GMT

স্মৃতিই যখন অনুপ্রেরণা

Published: 13th, February 2025 GMT

স্মৃতিই যখন অনুপ্রেরণা

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে আজ রাতে আরব আমিরাতের উদ্দেশে দেশ ছাড়বে বাংলাদেশ। বুধবার অফিসিয়াল সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত আট জাতির এই টুর্নামেন্টের প্রস্তুতি, লক্ষ্য, সম্ভাবনা ও প্রত্যাশা নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন। তিনি জানান, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে যাচ্ছেন চ্যাম্পিয়ন হওয়াল লক্ষ্যে।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রেরণা

শান্ত: শেষ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভালো একটা স্মৃতি আছে; সেমিফাইনাল খেলেছি। এটা বাড়তি একটা অনুপ্রেরণা দেবে। পাশাপাশি দেশের মানুষের প্রত্যাশা ও খেলোয়াড়দের পরিবারের প্রত্যাশা আছে। আমরা যেভাবে প্রস্তুতি নিতে পেরেছি, আশা করছি ভালো কিছু করা সম্ভব হবে।

নিজের প্রস্তুতি নিয়ে

শান্ত: আমার ম্যাচ খেলতে না পারার ভেতরেও ইতিবাচক দিক ছিল। অতিরিক্ত অনুশীলন করার সুযোগ পেয়েছি। কোচরা সাহায্য করেছেন। ফিটনেস নিয়েও কাজ করতে পেরেছি। বিপিএলের সময়ে খুব ভালো প্রস্তুতি নিতে পেরেছি। আশা করছি, সব ঠিক থাকলে টুর্নামেন্টটা ভালো যাবে।

ম্যাচ প্র্যাকটিসের ঘাটতি

শান্ত: শেষ ওয়ানডে ম্যাচে ভালো একটা ইনিংস খেলেছিলাম আফগানিস্তানের বিপক্ষে। টি২০ বিষয়টি নিয়ে যেটা বললেন, ভালো অবস্থায় নেই। গত বছর রান মোটামুটি করেছি, স্ট্রাইক রেট ওই রকম আপ টু দ্য মার্ক ছিল না। তবে রান মোটামুটি ভালো করেছি। আমি বিশ্বাস করি, আমি এর চেয়েও ভালো ব্যাটার। আসলে ওই সংস্করণ নিয়ে চিন্তা করছি না। ওয়ানডে ফরম্যাট ভালো যাচ্ছে। অনেক দিন পর ম্যাচ খেলব। ম্যাচ প্রস্তুতিটা এখানে হচ্ছে। গতকাল ম্যাচ সিনারিও প্র্যাকটিস হয়েছে। আজকে হবে। সামনে একটি প্র্যাকটিস ম্যাচ আছে। আর এই সংস্করণে আমরা ছোটবেলা থেকে অনেক খেলি। সুতরাং মানিয়ে নিতে সমস্যা হবে না। 

প্রস্তুতি নিয়ে কোচের অতৃপ্তি

শান্ত: আমার মনে হয় না, কোচ এ রকম কোনো কিছু মিন করেছেন। ফরম্যাট অনুযায়ী দেখলে একটু তো ভিন্নতা আছেই। উইকেট ভালো ছিল, ব্যাটাররা ভালো প্রস্তুতি নিয়েছে। এখন ৫০-৬০ রানকে কীভাবে ১০০-১৩০ করতে পারে, এটা গুরুত্বপূর্ণ। তারই ম্যাচ সিনারি হচ্ছে। একটি প্রস্তুতি ম্যাচ আছে। ভালো উইকেটেও বেশ কিছু বোলার ভালো বল করেছে। আমার মনে হয় প্রস্তুতির দিক দিয়ে আমরা ভালো অবস্থানে আছি। আমাদের হাতে সাত দিন সময় তো আছেই। এই সাত দিনে আরও একটু গুছিয়ে নিতে পারব।

রিয়াদ-মুশফিকের রোল

শান্ত: তারা দু’জন খুবই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। এত বছর ধরে খেলছেন, শেষ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও ছিলেন। তাদের এই অভিজ্ঞতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তবে অধিনায়ক হিসেবে কোনো একক খেলোয়াড়ের ওপর ভরসা করি না। পুরো দল নিয়ে চিন্তা। আমরা হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে খেলতে পারলে ভালো করা সম্ভব। রিয়াদ ভাই, মুশফিক ভাইয়ের কাছে চাওয়া, তারা যেন নিজেদের অভিজ্ঞতা সবাইকে দেন, তাদের ভাবনা যেন মাঠের ভেতর শেয়ার করেন।

দুবাইয়ে রান চেজ করা বা বড় টার্গেট সেট করা

শান্ত: আমি পাকিস্তানে ৩০০ প্লাস রান আশা করছি। আগে ব্যাট করলে অবশ্যই এ ধরনের স্কোর করতে হবে। ডিফেন্ড করার ক্ষেত্রেও এ রকম রান ডিফেন্ড করতে হবে। দুবাইয়ে একেক সময় একেক রকম হয়। আমার মনে হয়, ২৬০ থেকে ২৮০-এর ভেতরেই থাকবে। এভাবে সংখ্যা অনুমান করা কঠিন। তবে অতীতের স্ট্যাট.

দেখলে তাই মনে হয়। নির্দিষ্ট দিনে কী রকম রান করা দরকার বা কত রানে আটকানো দরকার– এসব অ্যানালাইসিস করব আমরা।

টুর্নামেন্টে দলীয় লক্ষ্য

শান্ত: আমরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যে যাচ্ছি।

বিপিএলে রিশাদের খেলা নিশ্চিত করা

শান্ত: রিশাদ খুব গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। আমাদের দেশে রিস্ট স্পিনার বলতে রিশাদই সেরা। আমাদের হাতে ওই রকম বিকল্প নেই। সম্প্রতি ও টি২০ সংস্করণে যেভাবে খেলছে, বিপিএলেও ২-৩ ম্যাচ একাই জিতিয়েছে। খুবই ভালো বোলিং, পাশাপাশি ব্যাটিং; আর ফিল্ডিং তো আছেই। সে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একজন খেলোয়াড়। আমি খুবই খুশি যেভাবে বোলিং ও ব্যাটিং করেছে। আমি আরও বেশি কিছু আশা করেছিলাম। সে যতটুকু করেছে, আমি খুশি।

বুমরাহর না থাকা চাপ কমাবে

শান্ত: প্রতিটি দলের প্রত্যেক ক্রিকেটার সামর্থ্যবান। একেক দলে এক্স ফ্যাক্টর থাকে। সে অনেক বড় বোলার। আসলে এভাবে ব্যক্তিকেন্দ্রিক পরিকল্পনা করতে চাই না। পুরো দলের প্ল্যান থাকে, কোন বোলারকে কীভাবে হ্যান্ডেল করব বা ব্যাটারকে যেভাবে আটকাব। ওভারঅল একটি টিম প্ল্যান তো থাকেই।

চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য দলের ওপর চাপ

শান্ত: আমার কাছে বাড়তি চাপ মনে হয় না। ৮ দলই ডিজার্ভ করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার, কোয়ালিটি টিম। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের দলের ওই সামর্থ্য আছে। আমার মনে হয় না কেউ বাড়তি চাপ অনুভব করবে। কারণ সবাই মনেপ্রাণে এটাই চাচ্ছে। সবাই বিশ্বাস করে ওই সামর্থ্য আছে। আমাদের রিজিকে আল্লাহ কী লিখে রেখেছেন, জানি না। আমরা ওইভাবে মেহনত করছি, সততার সঙ্গে কাজ করছি। প্রত্যেক খেলোয়াড় বিশ্বাস করি, আমরা ওই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব।

সাকিব মিস করবে

শান্ত: সাকিবকে অবশ্যই মিস করব। এই প্রশ্ন কেন করলেন আমি জানি না। আমরা সবাই জানি, এই উত্তর অনেক খেলোয়াড় দিয়েছে। অবশ্যই সাকিব ভাইকে মিস করব, থাকলে ভালো হতো– এই উত্তর অনেকবার পেয়েছেন। আমার মনে হয় না এ রকম একটি টুর্নামেন্টে যাওয়ার আগে এ প্রসঙ্গে বলা যৌক্তিক হবে। তবে ওই ম্যাচে দারুণ ব্যাটিং করেছেন। দলকে জেতাতে অনেক সহায়তা করেছে।

স্কোয়াড নিয়ে খুশি

শান্ত: যে ১৫ জন স্কোয়াডে আছে, সবাইকে নিয়ে খুবই খুশি ও আত্মবিশ্বাসী। যেই খেলবে, একা হাতে ম্যাচ জেতাতে পারে, এই সামর্থ্য সবার আছে। 

মিডল অর্ডারে উইকেট না নিতে পারা

শান্ত: মিডল ওভারে উইকেট যদি নিতে পারে স্পিনাররা, দলের জন্য খুব ভালো। তাদের মধ্যে এই সামর্থ্য আছে। গত সিরিজে হয়তো হয়নি। মিডল ওভারে উইকেট নিতে পারিনি। তার মানে এই না সামনে পারব না। অতীতে অনেক ম্যাচে মিরাজ মিডল ওভারে উইকেট নিয়ে জিতিয়েছে, নাসুম, রিশাদ নিয়েছে। সামর্থ্য সবারই আছে। ওই দিনে দায়িত্বটা যে পাবে, দলের জন্য কতটুকু দিচ্ছে এটা গুরুত্বপূর্ণ। আমি বিশ্বাস করি, তারা ভালো কিছু করবে। 

বুমরাহ না থাকায় ভারত সহজ কিনা

শান্ত: একক কাউকে নিয়ে চিন্তা করছি না, তাদের পুরো দলই ভালো। শুধু ভারত নয়, পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড– তিনটি দলই ভারসাম্যপূর্ণ। তিনটি দলের সঙ্গেই কষ্ট করে খেলতে হবে।

ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে ভাবনা

শান্ত: শেষ সিরিজটি ইনজুরির কারণে আমরা দু-তিনজন খেলোয়াড় খেলতে পারিনি। এই সুযোগে জাকের আলী অনিকের অসাধারণ একটা সিরিজ গেছে। রিয়াদ ভাই ভালো করছেন। মিরাজ চারে ভালো করছে। আমরা আসলে বুঝতে পেরেছি কোন জায়গায় কাকে ফিট করা যাবে এবং কে কতটুকু ভালো অবস্থানে আছে। এই ইনজুরিটা আমাদের জন্য ভালো হয়েছে। সবাইকে দেখার সুযোগ হয়েছে। তবে আমরা জানি কে কোথায় ব্যাটিং করবে, কার কী রোল। এটা নিয়ে খুব বেশি একটা সমস্যা হবে না।

বিপিএলে ভালো উইকেটে খেলা

শান্ত: এত অল্পতে খুশি হয়েন না, মাত্র শুরু হলো। বিপিএলে খুব ভালো উইকেট ছিল। ব্যাটাররা খুব ভালোভাবে ব্যাটিং করেছে, বোলারদের কষ্ট হয়েছে। এটা শুরু। আমার মনে হয়, আরও ভালো উইকেট হওয়া সম্ভব। কীভাবে লম্বা সময় ধরে ভালো উইকেটে প্র্যাকটিস করছি, ডিপিএল, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে। লম্বা সময় ধরে এমন উইকেট পেলে হেল্প হবে। এবার ভালো উইকেট হওয়ায় ব্যাটাররা কনফিডেন্ট আছে। বোলারদেরও কোথায় বল করতে হবে– এসব ধারণা আগের চেয়ে ভালো।

ব্যাটিং না বোলিংয়ে এগিয়ে

শান্ত: আলাদাভাবে চিন্তা করছি না। একসময় পেস বোলার ছিল না। এখন ভালো পেস বোলিং ইউনিট। রিস্ট স্পিনার ছিল না, এখন আছে। সব মিলিয়ে ব্যালান্স দল। সবাই সবার দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করলে যে কোনো দলকে যে কোনো সময় হারানো সম্ভব।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫

প্রতিপক্ষ     তারিখ         ভেন্যু
বাংলাদেশ : ভারত  ২০ ফেব্রুয়ারি দুবাই
বাংলাদেশ : নিউজিল্যান্ড  ২৪ ফেব্রুয়ারি রাওয়ালপিন্ডি
বাংলাদেশ : পাকিস্তান  ২৭ ফেব্রুয়ারি  রাওয়ালপিন্ডি 
সময় বিকেল ৩টা  বাংলাদেশ সময়

বাংলাদেশ স্কোয়াড: নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, সৌম্য সরকার, তাওহিদ হৃদয়, তাসকিন আহমেদ, নাহিদ রানা, জাকের আলী, তানজিদ হাসান তামিম, তানজিম হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ ও পারভেজ হোসেন ইমন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব শ ব স কর আম র ম ব প এল আম দ র উইক ট স করব

এছাড়াও পড়ুন:

সিলেটে বিপণিবিতানের সাইনবোর্ডে ভেসে ‍উঠল, ‘চাচা, হাসু আপা কোথায়?’

সিলেটের গোলাপগঞ্জে বিপণিবিতানে একটি প্রতিষ্ঠানের ডিজিটাল সাইনবোর্ডে ‘চাচা, হাসু আপা কোথায়? মুদির কাছে পালিয়ে গেছে’ লেখা ভেসে উঠেছে। পরে ওই ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

বিপণিবিতানটির নাম কুশিয়ারা শপিং কমপ্লেক্স। এর অবস্থান উপজেলার চৌমুহনী এলাকায়। গতকাল বুধবার রাতে এর দ্বিতীয় তলায় নিরাময় ডেন্টাল কেয়ারের পাশে একটি ডিজিটাল সাইনবোর্ডে ‘চাচা, হাসু আপা কোথায়? মুদির কাছে পালিয়ে গেছে’ লেখা ভেসে ওঠে। পরে রাতেই ওই ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

এ বিষয়ে নিরাময় ডেন্টাল কেয়ারের পরিচালক (টেক‌নিক‌্যাল) মারজান সি‌দ্দিকী আজ বৃহস্পতিবার সকালে বলেন, ডি‌জিটাল সাইনবোর্ডটি কে বা কারা হ‌্যাক করে এ ঘটনা ঘ‌টিয়েছে। এ কারণে ভুল–বোঝাবুঝির সৃ‌ষ্টি হয়েছে। বিষয়‌টি নিয়ে গোলাপগঞ্জ থানায় আলোচনা হয়েছে। থানায় সাধারণ ডায়ে‌রি (জিডি) করার প্রস্তু‌তি চলছে।

গোলাপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান মোল্লা বলেন, ওই ঘটনার খবর শুনে পুলিশ গতকাল রাতে ওই বিপণিবিতানে গিয়েছিল। তখন বিপণিবিতানটি বন্ধ ছিল। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিপণিবিতানের ব্যবসায়ী সমিতির কয়েকজন থানায় আসেন। তাঁরা জানিয়েছেন, ডিজিটাল সাইনবোর্ডটি হ্যাক করে ওই লেখা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে বিপণিবিতানের কেউ জড়িত নন। এমনটি যাতে আর না হয়, সে জন্য পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ