সরকার থেকে কোনো প্রণোদনা দিতে পারব না: বাণিজ্য উপদেষ্টা
Published: 13th, February 2025 GMT
ঢাকায় চার দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক পণ্যের মেলা শুরু হয়েছে। এতে ৮০০টির বেশি স্টল অংশ নিয়েছে। এবারে বাংলাদেশ, চীন, জার্মানি, ভারত, ইতালি, জাপানসহ ১৮টি দেশের ৩৯০টির বেশি ব্র্যান্ড অংশগ্রহণ করেছে।
ঢাকার পূর্বাচলের ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) গতকাল বুধবার এই মেলার উদ্বোধন করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। বাংলাদেশ প্লাস্টিক পণ্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিপিজিএমইএ) জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি কে এম ইকবাল হোসেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি শামীম আহমেদ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব (চলতি দায়িত্ব) আবদুর রহিম খান, ইয়র্কার্স ট্রেড অ্যান্ড মার্কেটিং সার্ভিসের পরিচালক আকাই লিন, সার্ক চেম্বারের সভাপতি মো.
‘সরকার থেকে কোনো প্রণোদনা দিতে পারব না’ বলে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘২০২৬ সালের নভেম্বর মাসে আমাদের দেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবে। ফলে রপ্তানিতে আমরা যে অগ্রাধিকারমূলক বাজারসুবিধা পাই, তা আর থাকবে না। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রণোদনা দিতে পারব না। এ ক্ষেত্রে পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়াতে হবে। উৎপাদনশীলতা ও পণ্য উৎপাদন ব্যয়ে প্রতিযোগী সক্ষম হতে হবে। সক্ষমতা না থাকলে দারুণভাবে বিপদে পড়ে যাব।’
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘পণ্য রপ্তানির সম্ভাবনাকে বৈচিত্র্যময় করার আমাদের যে আকাঙ্ক্ষা রয়েছে, প্লাস্টিক পণ্য সেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘বাস্তবতার নিরিখে আমাদের নীতিনির্ধারণ করা দরকার। যার বিনিময়ে আমরা খারাপ প্লাস্টিককে রহিত করব এবং ভালো প্লাস্টিকের সঙ্গে বাস করব। তাই দায়িত্বশীলতার সঙ্গে আমাদের ভালো প্লাস্টিকের উৎপাদন ও ব্যবহার বৃদ্ধির প্রচেষ্টা চালাতে হবে।’
আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক মেলাটি যৌথভাবে আয়োজন করছে বিপিজিএমইএ ও হংকংভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইয়র্কার্স ট্রেড অ্যান্ড মার্কেটিং সার্ভিস। আয়োজকেরা জানান, মেলায় দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো গৃহস্থালিতে ব্যবহার্য প্লাস্টিকের পণ্য, প্যাকেজিং উপকরণ, মোল্ড, ক্রোকারিজ ও খেলনাসামগ্রী, ওষুধশিল্পের প্রয়োজনীয় উপকরণ, প্লাস্টিকের আসবাব, মেলামাইন পণ্য, তৈরি পোশাক খাতের প্রয়োজনীয় পণ্য, পিপি ওভেন ব্যাগ ইত্যাদি পণ্য প্রদর্শন করছে। অন্যদিকে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো প্লাস্টিক ইনজেকশন মোল্ডিং মেশিন, পিপি ওভেন ব্যাগ মেশিন, প্যাকেজিং মেশিন, ফ্লেকসোগ্রাফিক প্রিন্টিং মেশিন, পেট ব্লো মেশিন, প্লাস্টিকের ব্যাগ তৈরির মেশিন প্রদর্শন করছে।
আয়োজকেরা জানান, দর্শনার্থীদের জন্য প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত মেলা উন্মুক্ত থাকবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
পোশাকশিল্প মালিকেরা করপোরেট কর অপরিবর্তিত চান
রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তারা আগামী ২০২৫–২৬ অর্থবছরের বাজেটে করপোরেট করহার বর্তমানের মতো ১২ শতাংশ বহাল রাখার দাবি জানিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা পাল্টা শুল্ক, ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির কারণে রপ্তানিমুখী খাতটি ঝুঁকিতে রয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে করপোরেট কর বাড়ানো হলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীর মধ্যে আস্থার ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে আজ মঙ্গলবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়োজিত প্রাক্-বাজেট আলোচনায় তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর এবং বিকেএমইএর নেতারা এ দাবি করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান। প্রাক্–বাজেট আলোচনায় অংশ নেন বিজিএমইএর সহায়ক কমিটির সদস্য এনামুল হক, বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বস্ত্রকলের মালিকদের সংগঠন বিটিএমএর সহসভাপতি সালেউদ জামান খান প্রমুখ।
বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম আগামী পাঁচ অর্থবছরের জন্য উৎসে কর দশমিক ৫ শতাংশ করার দাবি জানান। তিনি শতভাগ রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকশিল্পের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্য ও সেবাকে ১০০ শতাংশ ভ্যাটমুক্ত রাখার প্রস্তাব করেন। বিকেএমইএ বন্ড ব্যবস্থাপনায় আমদানি পণ্যের চালান খালাসের সময় যে জটিলতা দেখা দেয়, তা নিরসনে এইচএস কোড সহজ করা ও ৮ ডিজিটের পরিবর্তে ৬ ডিজিটের এইচএস কোড চালুর দাবি জানিয়েছে। সংগঠনটি আগামী বাজেটে জ্বালানিসাশ্রয়ী বাতির ওপর ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে আবার ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছে।
ম্যান মেইড বা কৃত্রিম তন্তুর তৈরি পোশাক খাতের বিনিয়োগ ও রপ্তানি উৎসাহিত করতে বিশেষ প্রণোদনা প্রদান, দেশের বাজারে কৃত্রিম সুতা বিক্রির ওপর থেকে ৩ শতাংশ কর প্রত্যাহার, কৃত্রিম তন্তু দিয়ে তৈরি পোশাকের কাঁচামাল আমদানিতে দেওয়া অগ্রিম কর (এটি) ও সম্পূরক শুল্ক (এসডি) এবং প্রযোজ্য ভ্যাট প্রত্যাহার চেয়েছে বিকেএমইএ।
এদিকে তুলা ও সুতা সরবরাহের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ১ শতাংশ উৎসে কর কর্তনের হার দশমিক ৫০ করার দাবি জানায় বিটিএমএ। এ ছাড়া শিল্পোৎপাদনে ব্যবহৃত কাঁচামালের সরবরাহের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ৩ শতাংশের পরিবর্তে দশমিক ৫ শতাংশ করার আহ্বান জানান।