গাজীপুর সাফারি পার্কে আনা হয়েছে দিনাজপুরের স্বপ্নপুরী পার্ক থেকে উদ্ধার করা পাঁচটি এশিয়ান কালো ভল্লুক।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) প্রাণীগুলোকে পার্কের কোয়ারেন্টাইনে নেওয়া হয়। এর আগে বন বিভাগের বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের কর্মীরা মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টার দিকে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার আফতাবগঞ্জে স্বপ্নপুরী পার্ক থেকে ভল্লুকগুলো উদ্ধার করেন। 

বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের বন্য প্রাণী পরিদর্শক অসীম কুমার মল্লিক জানান, ইউনিটের পরিচালক ছানাউল্ল্যা পাটওয়ারীর সার্বিক দিকনির্দেশনায় অভিযানে দিনাজপুর সামাজিক বন বিভাগ এবং বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রাম ও রাজশাহীর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

তিনি আরো বলেন, “অভিযানের সময় ওই পার্ক থেকে ভল্লুক ছাড়াও ৪৩টি পশুপাখি উদ্ধার করা হয়। এগুলোর মধ্যে ছিল ৫টি মায়া হরিণ, ১১টি বানর, ১৭টি সাম্বার হরিণ, ৫টি রাজ ধনেশ, ২টি শজারু ও ১টি ভোঁদড়। এগুলোর শুধু ভাল্লুকগুলো গাজীপুর সাফারি পার্কে পাঠানো হয়েছে। অভিযানের পর বন্ধ করা হয়েছে স্বপ্নপুরী পার্কের মিনি চিড়িয়াখানা।”

অসীম বলেন, “গত ২৬ জানুয়ারি পার্কটিতে প্রথম ধাপের অভিযানে ৭৪টি বন্য প্রাণী জব্দ করা হয়। এগুলোর মধ্যে ৫২টি বন্য প্রাণী পার্ক কর্তৃপক্ষের জিম্মায় রাখা হয়েছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সেসব প্রাণীর বেশির ভাগের পক্ষে কোনো বৈধ কাগজ দেখাতে না পারায় পরে মঙ্গলবার অভিযান পরিচালনা করে প্রাণীগুলো নিয়ে আসা হয়।”

বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের অপর বন্য প্রাণী পরিদর্শক আবদুল্লাহ আল সাদিক জানান, স্বপ্নপুরী পার্কের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো.

রফিকুল ইসলাম বলেন, “প্রাণীগুলোর চিকিৎসা ও পুনর্বাসন চলবে।”

ঢাকা/রফিক/টিপু 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বন য প র ণ ইউন ট র

এছাড়াও পড়ুন:

যশোরে বাড়িতে ঢুকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করল যুবককে 

যশোরের ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ ম্যানসেলের প্রধান সহযোগী মীর সামির সাকিব সাদী (৩৫) দুর্বৃত্তদের ছোড়া গুলি ও ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছে। সোমবার রাত পৌনে ১২টার দিকে শহরের মুড়িব সড়ক জয়ন্তী সোসাইটির পেছনে বাড়িতে ঢুকে দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করে। নিহত সাদী ওই এলাকার মীর শওকত আলীর ছেলে। এ ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং জড়িতদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে।
 
নিহতের চাচাতো ভাই রাকিব জানান, রাত পৌনে ১২টার দিকে তিনি ও সাদী বাড়ি ফেরেন। বাড়ির উঠানে মোটরসাইকেল তোলার সময় পেছন থেকে সাদীকে চাকু দিয়ে আঘাত করা হয়। এরপর তাকে গুলি করে। এক রাউন্ড গুলির পর গুলি বের হচ্ছিলো না। এ সময় তিনি হামলাকারী সুমন, মেহেদীসহ তাদের সহযোগীদের লক্ষ্য করে ইট নিক্ষেপ করলে তারা আরও ৫-৬ রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে পালিয়ে যায়। তাদের ছোড়া দু’টি গুলি সাদীর গলা ও বুকে লাগে। 

স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ মরদেহ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। তিনি দাবি করেন, সাদী রেল বাজারের ইজারাদার। হামলাকারীরা বাজার এলাকায় চাঁদাবাজি করত। তাদের প্রশয় না দেওয়ায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।

যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূর-ই-আলম সিদ্দিকী জানান, খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। জড়িতদের ধরতে পুলিশের একাধিক টিম অভিযান শুরু করেছে। হত্যার কারণ জানতে পুলিশ তদন্ত করছে। তিনি জানান, নিহত সাদী ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে যাদের নাম আসছে উভয়পক্ষই সন্ত্রাসী। সকলের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা বলছেন, সাদী যশোরের শীর্ষ সন্ত্রাসী ম্যানসেলের প্রধান সহযোগী ও ম্যানেজার। সাদীকে যারা হত্যা করেছে তারাও ম্যানসেলের সহযোগী। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা ও ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ ম্যানসেলসহ তার পক্ষের লোকজন গা-ঢাকা দেয়। সম্প্রতি সাদীসহ তাদের কেউ কেউ এলাকায় ফিরতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে তাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে সাদী খুন হয়।

স্থানীয়রা জানান, ২০১৩ সালের ৯ ডিসেম্বর যশোর শহরের সিভিল কোর্ট মোড়ে জেলা ছাত্রদলের তৎকালীন সহসভাপতি কবির হোসেন পলাশকে খুন করে মোটরসাইকেলযোগে পালানোর সময় শহরের পালবাড়ি ভাস্কর্য মোড়ে সড়ক দুর্ঘটনার আহত হন সাদী। দুর্ঘটনায় তার এক পা কেটে ফেলতে হয়। এক পা হারিয়েও ম্যানসেলের প্রধান সহযোগী পরিচয়ে সাদী এলাকায় সন্ত্রাসী তৎপরতা চালিয়ে আসছিল।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ