ফাইল ছবি
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সময়মতো ফোর্সড সেল না করলে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানকে
শেয়ারবাজারে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো সময়মতো নিয়ম মেনে ফোর্সড সেলের উদ্যোগ না নিলে তার জন্য ঋণগ্রহীতা বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানকে। এমন সুপারিশ করেছে পুঁজিবাজার উন্নয়নে গঠিত টাস্কফোর্স। সম্প্রতি টাস্কফোর্স মার্জিন ঋণ বা প্রান্তিক ঋণসংক্রান্ত বিধিবিধান সংশোধনে তাদের প্রস্তাব জমা দিয়েছে। সেখানে এই সুপারিশ করা হয়েছে।
বর্তমানে শেয়ারের দরপতনের কারণে কোনো ঋণগ্রহীতার পত্রকোষ বা পোর্টফোলিও ভ্যালু বা মূল্য ১২৫ শতাংশে নেমে এলে ওই বিনিয়োগকারীর শেয়ার জোরপূর্বক বিক্রি বা ফোর্সড সেলের মাধ্যমে ঋণ সমন্বয়ের বিধান রয়েছে। টাস্কফোর্সের সদস্যরা বলছেন, এ বিধান কার্যকরে কোনো ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান ব্যর্থ হলে এবং তার জন্য কোনো বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেই ক্ষতির দায় নিতে হবে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানকে।
উদাহরণ হিসেবে ধরা যাক, একজন বিনিয়োগকারী ২০০ টাকায় কোনো একটি কোম্পানির শেয়ার কিনেছেন। তার জন্য ওই বিনিয়োগকারী নিজে ১০০ টাকা বিনিয়োগ করেছেন, বাকি ১০০ টাকা ঋণ নিয়েছেন। এখন বাজারে দরপতনের কারণে ওই শেয়ারের দাম ১২৫ টাকায় নেমেছে। তাহলে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানকে ওই শেয়ার বিক্রির কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। সেই উদ্যোগ কার্যকর হলে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান তার ঋণের ১০০ টাকা সমন্বয়ের পরও ঋণগ্রহীতা বিনিয়োগকারী ২৫ টাকা ফেরত পাবেন। কিন্তু ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান যদিও শেয়ারের বাজারমূল্য ১২৫ টাকায় নামার পরও কোনো ধরনের ফোর্সড সেলের উদ্যোগ না নেন এবং তাতে বিনিয়োগকারীর যত টাকা ক্ষতি হবে, সেই ক্ষতি পুষিয়ে দিতে হবে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানকে। অর্থাৎ শেয়ারের দাম ১২৫ টাকায় নামার পর ফোসর্ড সেল না করে ১১০ টাকায় নামার পর যদি ওই শেয়ার বিক্রি করা হয়, তাহলে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানকে ১৫ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
নতুন এই বিধানের সুপারিশের কারণ হিসেবে টাস্কফোর্সের যুক্তি হলো যদি সময়মতো ফোর্সড সেল করা যায়, তাহলে বিনিয়োগকারীর নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ফেরত পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু সেটি করা না হলে বিনিয়োগকারীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন। বিনিয়োগকারীরা যাতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সে জন্য এ বিধানের সুপারিশ করা হয়েছে।
পুঁজিবাজার উন্নয়নে আইনকানুন সংশোধনসহ বিভিন্ন বিষয়ে সুপারিশের জন্য গত ৭ অক্টোবর ৫ সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করে বিএসইসি। তবে এ-সংক্রান্ত সরকারি চূড়ান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় গত ১০ জানুয়ারি। টাস্কফোর্সের সদস্যরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এ এম মাজেদুর রহমান, নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান হুদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোংয়ের অংশীদার এ এফ নেসারউদ্দীন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক মোস্তফা আকবর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাকাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের শিক্ষক আল-আমিন।
টাস্কফোর্স গত মঙ্গলবার তাদের সুপারিশ পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসই) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের হাতে জমা দেন। তাতে শেয়ারের বিপরীতে ঋণসুবিধার বিষয়ে নানা সুপারিশ করা হয়। ১০ লাখ টাকার কম বিনিয়োগ যাদের, তাদের ঋণসুবিধা না দেওয়ার সুপারিশ করেছে টাস্কফোর্স।