জাতিসংঘের প্রতিবেদন: পুলিশ, বিচারব্যবস্থাসহ ৫ খাতে সংস্কারের সুপারিশ
Published: 13th, February 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দল। মানবাধিকার লঙ্ঘনের এসব ঘটনা ঘটেছে গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার ও দলটির শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বন্ধে পাঁচটি খাতে জরুরি ভিত্তিতে ও ব্যাপক পরিসরে সংস্কার পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করেছে জাতিসংঘ।
২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ ও গুরুতর আহতসহ অনেক বিক্ষোভকারীর সঙ্গে কথা বলে একটি প্রতিবেদন দিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) তথ্যানুসন্ধান দল। গতকাল বুধবার এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেখানেই বাংলাদেশ নিয়ে এসব সুপারিশ করা হয়েছে।
বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বন্ধে জাতিসংঘ যে পাঁচটি খাতে জরুরি ভিত্তিতে ও ব্যাপক সংস্কারের সুপারিশ করেছে, সেগুলো হলো জবাবদিহি ও বিচারব্যবস্থা; পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী; নাগরিক পরিসর; রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও অর্থনৈতিক সুশাসন। সংস্থাটি বলছে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বন্ধ ও ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে সবার আগে এসব খাতে সংস্কারের উদ্যোগ নিতে হবে।
জবাবদিহি ও বিচারব্যবস্থা
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, নির্যাতনসহ এ ধরনের অপরাধের তদন্ত ও বিচারের জন্য কার্যকর, স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও সমন্বিত প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি বলছে, এসব অপরাধ যাঁদের নির্দেশে হয়েছে, বিদ্যমান আইন ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী তাঁদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি ভুক্তভোগীদের ন্যায্যবিচার নিশ্চিত করা ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার প্রমাণাদি সংগ্রহ ও সংরক্ষণের কাজটিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়েছে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দলের প্রতিবেদনে। বলা হয়েছে, অপরাধের সঙ্গে যাঁরা জড়িত ছিলেন, তাঁদের দেওয়া আনুষ্ঠানিক নির্দেশের নথিও সংরক্ষণ করতে হবে। অপরাধের প্রমাণাদি নষ্ট বা লুকানোর সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় বা ফৌজদারি মামলা করে পদক্ষেপ নিতে হবে।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আছে, এমন কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করার সুপারিশ করেছে জাতিসংঘ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সুষ্ঠু ও কার্যকর বিচার, বিশেষ করে এসব অপরাধের নেপথ্যে থাকা ব্যক্তিদের বিচার নিশ্চিত করার জন্য একটি ক্রান্তিকালীন বিচারব্যবস্থার মডেল গড়ে তুলতে হবে। এমন একটি মডেল তৈরির জন্য সব পক্ষের অংশগ্রহণে একটি জাতীয় সংলাপ আয়োজনের উদ্যোগ নিন।’
জাতিসংঘ বলছে, বিচারব্যবস্থায় সব পর্যায়ে স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে। কাগজে–কলমে নয়, বাস্তবেও প্রতিফলন থাকতে হবে। বিচারব্যবস্থাকে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত করতে হবে।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার প্রমাণাদি সংগ্রহ ও সংরক্ষণের কাজটিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়েছে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দলের প্রতিবেদনে। বলা হয়েছে, অপরাধের সঙ্গে যাঁরা জড়িত ছিলেন, তাঁদের দেওয়া আনুষ্ঠানিক নির্দেশের নথিও সংরক্ষণ করতে হবে। অপরাধের প্রমাণাদি নষ্ট বা লুকানোর সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় বা ফৌজদারি মামলা করে পদক্ষেপ নিতে হবে।পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী
মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বন্ধে পুরো পুলিশ প্রবিধান সংশোধনের সুপারিশ করেছে জাতিসংঘ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানবাধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক বিধি ও মানদণ্ডের সঙ্গে সংগতি রেখে এতে সংশোধন আনতে হবে। সংশোধিত প্রবিধান অনুযায়ী গুরুতর আহত অথবা আসন্ন মৃত্যুঝুঁকি ছাড়া পুলিশ বলপ্রয়োগ এবং জনসমাগম ছত্রভঙ্গ করতে মারণাস্ত্র ও গোলাবারুদের ব্যবহার করতে পারবে না।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কথা বলে পুলিশ ও অন্য নিরাপত্তা বাহিনীকে ধাতব (প্রাণঘাতী) গুলি দেওয়া বন্ধের কথা বলেছে জাতিসংঘ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামরিক ও আধা সামরিক বাহিনীকে এ ধরনের গোলাবারুদ দেওয়া কমিয়ে দিতে হবে। আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় জড়িত ব্যক্তিদের এমন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে, যেখানে মারণাস্ত্রের ব্যবহার না করে শৃঙ্খলা ফেরানোর কৌশল শেখানো হবে।
স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনের সুপারিশ করে তথ্যানুসন্ধান দলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাগরিক প্রতিনিধিসহ নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত এ কমিশন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণমুক্ত থাকবে।নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের পূর্ণ বাস্তবায়ন, পুলিশ অধ্যাদেশ সংশোধন করে নতুন আইন প্রণয়ন, মেধার ভিত্তিতে পুলিশে নিয়োগের মতো বিষয়গুলো নিয়েও বেশ কিছু সুপারিশ করেছে জাতিসংঘ। র্যাব বিলুপ্ত করে এই বাহিনীর যেসব সদস্য গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় জড়িত নন, তাঁদের নিজ নিজ বাহিনীতে ফেরত পাঠাতে হবে। বিজিবিকে সীমান্তসংক্রান্ত বিষয় ছাড়া অন্য কিছুতে যুক্ত না করা এবং ডিজিএফআইয়ের কাজ সামরিক গোয়েন্দা তৎপরতায় সীমাবদ্ধ রাখার সুপারিশ করেছে জাতিসংঘ। পাশাপাশি ডিজিএফআইয়ের আইনি ক্ষমতা কমানোর কথাও বলা হয়েছে।
স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনের সুপারিশ করে তথ্যানুসন্ধান দলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাগরিক প্রতিনিধিসহ নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত এ কমিশন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণমুক্ত থাকবে।
নাগরিক পরিসর
মানবাধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সংগতি রেখে বিতর্কিত ফৌজদারি আইনগুলো রদ অথবা সংশোধন করে এসব আইনে গ্রেপ্তার, তদন্ত ও বিচার স্থগিতের সুপারিশ করেছে জাতিসংঘ। ঐতিহাসিকভাবে এসব আইন ব্যবহার করে গণমাধ্যম, নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক বিরোধীদের কণ্ঠরোধের চেষ্টা চালাতে দেখা গেছে। এর মধ্যে রয়েছে সাইবার নিরাপত্তা আইন, রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা–সংক্রান্ত আইন, সন্ত্রাসবাদ দমন আইন ও মানহানি আইন। এসব আইনের পাশাপাশি বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তার, তল্লাশি ও নজরদারি–সংক্রান্ত ক্ষমতা কমানোরও সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, শ্রমিকনেতা, নাগরিক অধিকারকর্মীসহ অন্য মানবাধিকারকর্মীদের ওপর বেআইনি নজরদারি বন্ধে নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে অবিলম্বে নির্দেশ দেওয়ার কথা বলেছে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দল। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর দ্বারা নাগরিকদের ওপর নজরদারির ঘটনায় একটি স্বাধীন তদন্ত শুরু এবং তদন্তে পাওয়া তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন আইনের অস্পষ্ট বিধিবিধান সংশোধনের কথাও বলেছে জাতিসংঘ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাছবিচারহীনভাবে নজরদারির জন্য এসব বিধি যুক্ত করা হয়েছে।
রাজনৈতিক ব্যবস্থা
জাতিসংঘ বলছে, মৌলিক স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে অবাধ ও প্রকৃত নির্বাচনের জন্য একটি নিরাপদ ও সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব দল ও প্রার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিতে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। যেসব প্রতিষ্ঠান নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে, তাদের সক্ষমতাও বাড়াতে হবে। এতে করে শাসনকাজে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রভাবের ক্ষেত্রে ভারসাম্য থাকবে।
কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছে জাতিসংঘ। এর কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এতে করে বাংলাদেশে বহুদলীয় গন্ত্রতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রত্যাবর্তন বাধাগ্রস্ত হবে। পাশাপাশি ভোটারদের একটা বড় অংশ ভোটাধিকার প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত হবেন।
রাজনীতিতে ও জনপরিসরে নারী-পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠার জন্য সংশ্লিষ্ট আইন ও নীতিমালার কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করার সুপারিশ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেসব ক্ষেত্রে প্রয়োজন ও দরকার, সে ক্ষেত্রে স্বল্পমেয়াদি বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে।
জাতিসংঘ বলছে, মৌলিক স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে অবাধ ও প্রকৃত নির্বাচনের জন্য একটি নিরাপদ ও সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।অর্থনৈতিক সুশাসন
ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আত্মসাৎসহ বড়মাপের দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ জব্দ ও বাজেয়াপ্ত করার জন্য বিদ্যমান আইনে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুর্নীতি দমনসংক্রান্ত আইনের যথাযথ প্রয়োগ হচ্ছে কি না, তা নিশ্চিত করতে হবে। আর যাঁরা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, বিশেষ করে উচ্চ স্তরের কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের বিচার করতে হবে। দুর্নীতি দমন কমিশনের সদস্যদের স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র স প র শ কর ছ র র স প র শ কর ন শ চ ত করত ন শ চ ত কর র র জন য র জন ত ক অপর ধ র ব যবস থ নজরদ র ত কর র ন আইন ক ষমত তদন ত ব আইন আইন র
এছাড়াও পড়ুন:
নারীদের পোশাকে নজরদারি করতে মোবাইল অ্যাপ, সিসিটিভি, ড্রোন ব্যবহার করছে ইরান
ভিন্নমত দমনে, বিশেষ করে সরকারের বেঁধে দেওয়া পোশাকনীতি নারীরা অমান্য করছেন কি না, তা নজরদারি করতে ড্রোন ও অন্যান্য ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে ইরান।
জাতিসংঘের একটি তদন্ত প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
তদন্তকারীরা বলেছেন, ইরানের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বিশেষ অ্যাপ ব্যবহার করে লোকজনকে ট্যাক্সি ও অ্যাম্বুলেন্সের মতো ব্যক্তিগত যানবাহনেও নারীরা পোশাকবিধি লঙ্ঘন করছেন কি না, সে বিষয়ে তথ্য দিতে উৎসাহিত করছেন।
জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনে বিশেষভাবে আরও বলা হয়, রাজধানী তেহরান ও ইরানের দক্ষিণাঞ্চলে নারীরা হিজাব পরার বাধ্যবাধকতা অনুসরণ করছেন কি না, তা নজরদারি করতে ড্রোন ও নিরাপত্তা ক্যামেরার ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে।
নারীরা যদি আইন লঙ্ঘন করেন অথবা ওই আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান, তবে তাঁদের গ্রেপ্তার, মারধর, এমনকি পুলিশি হেফাজতে ধর্ষণের শিকার হওয়ার মতো পরিণতি ভোগ করতে হয়।
একটি স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন এই তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছে।
২০২২ সালে তেহরানে নীতি পুলিশের হেফাজতে মাসা আমিনি নামের ২২ বছরের এক কুর্দি তরুণীর মৃত্যু হয়। পুলিশি হেফাজতে ‘শারীরিক নিপীড়নের’ কারণে মাসার মৃত্যু হয়েছে এবং এ জন্য দেশটির ইসলামপন্থী সরকারব্যবস্থা দায়ী—এমন ধারণার পর জাতিসংঘের একটি তদন্ত দল ইরানে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, গ্রেপ্তার করার সময় ইরানের নীতি পুলিশ মাসাকে মারধর করেছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ মাসার সঙ্গে খারাপ আচরণ করার অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং দাবি করেছে, ‘হঠাৎ হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে’ মাসার মৃত্যু হয়েছে।
মাসার মৃত্যুর পর ইরানজুড়ে বড় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে; ওই বিক্ষোভের রেশ এখনো রয়ে গেছে। গ্রেপ্তার ও কারাবন্দী হওয়ার ঝুঁকি নিয়েই বিক্ষোভকারীরা বিক্ষোভ চালিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
আরও পড়ুনমাসা আমিনির মৃত্যুর কারণ জানাল ইরান সরকার০৭ অক্টোবর ২০২২তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল, তারপর আড়াই বছর কেটে গেছে। কিন্তু ইরানের নারীরা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এখনো দেশটির আইন ও আইনের বাস্তবায়নে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন, বিশেষ করে বাধ্যতামূলক হিজাব পরার নীতি প্রয়োগের ক্ষেত্রে।’
এ ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় যেসব নজরদারি যন্ত্র রয়েছে, সেগুলো ব্যবহার করে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে এবং ব্যক্তিগতভাবে নারীরা হিজাব পরার বাধ্যবাধকতা অনুসরণ করছেন কি না, তার ওপর নজরদারি বাড়াচ্ছে বলেও ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। সেখানে আরও বলা হয়, ‘কর্তৃপক্ষ কাজটি এমনভাবে করাচ্ছে, যেন এটা একটি নাগরিক দায়িত্ব।’
নারীদের হিজাব পরার ওপর কীভাবে নজরদারি করা হচ্ছে, তার কিছু উদাহরণ ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
যেমন তেহরানের আমিরকবির বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকার পথে একটি ‘ফেসিয়াল রিকগনাইজেশন সফটওয়্যার’ বসিয়েছে। ওই যন্ত্রে প্রবেশকারীদের চেহারা পরীক্ষার পাশাপাশি নারীরা হিজাব পরেছেন কি না, সেটাও দেখা হয়।
ইরানের বড় সড়কগুলোয় যে নজরদারি ক্যামেরা লাগানো আছে, নারীরা হিজাব ছাড়া রাস্তায় বের হয়েছেন কি না, সেগুলো ব্যবহার করে তা নজরদারি করা হয়।
ইরানে ‘নীতি পুলিশের’ হেফাজতে মারা যাওয়া তরুণী মাসা আমিনি