ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে আলোচনায় সম্মত ট্রাম্প-পুতিন
Published: 13th, February 2025 GMT
ইউক্রেনে যুদ্ধ নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে পুতিনের ফোনালাপের পর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ট্রাম্প নিজেই।
ট্রাম্প তার নিজের সামাজিক মাধ্যম ট্রুথে এক পোস্টে জানান, যে পুতিনের সঙ্গে তার একটি ‘দীর্ঘ ও অত্যন্ত ফলপ্রসূ ফোনালাপ’ হয়েছে। এটি ট্রাম্পের দায়িত্ব গ্রহণের পর তাদের মধ্যে প্রকাশ্যে জানা প্রথম ফোনালাপ। তিনি বলেন, ‘আলোচনায় ইউক্রেন, মধ্যপ্রাচ্য, জ্বালানি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ডলার ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ট্রাম্প লিখেছেন, আমরা দু’জনেই একমত হয়েছি যে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে যে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, তা বন্ধ করতে চাই।
প্রেসিডেন্ট পুতিন এমনকি আমার শক্তিশালী প্রচারমূলক স্লোগান ‘কমন সেন্স’ ব্যবহার করেছেন। আমরা উভয়েই এতে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। কিন্তু প্রথমেই আমরা একসঙ্গে কাজ করতে এবং একে অপরের দেশ পরিদর্শন করতে সম্মত হয়েছি।
ট্রাম্প জানান, দুই নেতা তাদের দলকে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটানোর জন্য আলোচনা শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। এই যুদ্ধ প্রায় তিন বছর আগে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল।
তিনি বলেন, বুধবার তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গেও কথা বলবেন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, সিআইএ পরিচালক জন র্যাটক্লিফ, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ওয়াল্টজ এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ-কে আলোচনার নেতৃত্ব দিতে বলবেন।
ট্রাম্প বলেন, আর কোনো জীবনহানি হওয়া উচিত নয়। আমি প্রেসিডেন্ট পুতিনকে তার সময় ও প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ জানাই এবং গতকাল মুক্তি পাওয়া মার্ক ফোগেলের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। তিনি একজন অসাধারণ মানুষ, যাকে আমি গত রাতে হোয়াইট হাউসে ব্যক্তিগতভাবে স্বাগত জানিয়েছি।
এই ফোনালাপটি মার্ক ফোগেলের মুক্তির একদিন পরেই অনুষ্ঠিত হয়। ফোগেল একজন মার্কিন নাগরিক, যিনি রাশিয়ায় তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্দি ছিলেন। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র আলেকজান্ডার ভিনিক-কে মুক্তি দিতে পারে। যিনি গত বছর অর্থপাচার ষড়যন্ত্রের দায় স্বীকার করেছিলেন। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি পুতিনের সঙ্গে তার যোগাযোগের বিষয়ে খোলাসা করেননি।
ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারের সময় ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন যে, প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার আগেই তিনি এই যুদ্ধ বন্ধ করতে পারবেন। পুতিনের সঙ্গে এই ফোনালাপ ইঙ্গিত দিচ্ছে যে শান্তি আলোচনা আরও গুরুতর হতে পারে।
ট্রাম্প ও তার মিত্ররা ইউক্রেনে মার্কিন সহায়তা অব্যাহত রাখার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন এবং তিনি বলেছেন, যে ইউরোপের উচিত কিয়েভকে সমর্থনে আরও বড় ভূমিকা নেওয়া। পাশাপাশি, গত মাসে ট্রাম্প মস্কোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন। যদি তারা যুদ্ধবিরতির আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানায়।
এদিকে সহ-রাষ্ট্রপতি জেডি ভ্যান্স ইউরোপের মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দিতে যাচ্ছেন এবং সেখানে তিনি জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট ইউক্রেনে গিয়ে জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করবেন। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদে আরও বেশি প্রবেশাধিকার পেতে চায়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইউক র ন য দ ধ
এছাড়াও পড়ুন:
হামজা বরণে প্রস্তুত বাফুফে, থাকছে বিশেষ নিরাপত্তা
জামাল ভূঁইয়া, তারিক কাজীর মতো প্রবাসী ফুটবলাররা লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়িয়েছেন। তাদের সঙ্গী হওয়ার অপেক্ষায় হামজা দেওয়ান চৌধুরী। ২৫ মার্চ শিলংয়ে ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের ম্যাচ দিয়েই বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক হতে যাচ্ছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা এ ডিফেন্ডারের। বর্তমানে শেফিল্ড ইউনাইটেডে খেলা এ ফুটবলারকে বরণের সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন।
সময় কম থাকায় হামজার জন্য কোনো সংবর্ধনার আয়োজন করছে না বাফুফে। তবে হামজার সিলেট নামা থেকে শুরু করে ঢাকায় আসা, তার পর ভারতে যাওয়া পর্যন্ত তাঁর জন্য বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। হামজার চলাচলের জন্য বাফুফের একটি বিশেষ গাড়ি এবং সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার জন্য একজন অফিসিয়ালকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে গতকাল সমকালকে নিশ্চিত করেছেন বাফুফের অন্যতম সহসভাপতি ফাহাদ করিম, ‘তিনি (হামজা) ১৭ তারিখে সিলেট বিমানবন্দরে নামবেন। সেই সময় তাঁকে বরণ করে নেবেন বাফুফের তিন-চারজন নির্বাহী সদস্য। এর পর তিনি চলে যাবেন হবিগঞ্জ। সেখানে যাওয়ার ট্রান্সপোর্ট বাফুফে ব্যবস্থা করেছে। তাঁর জন্য বিশেষ একটি গাড়ি ও নিরাপত্তার জন্য একজন অফিস বয় থাকবে সারাক্ষণ। প্রশাসনকেও জানানো হয়েছে।’
বাংলাদেশের ফুটবলে অতীতে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা কাউকে দেখা যায়নি। আর বর্তমানে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে এতবড় তারকাও নেই। বর্তমানে হামজাকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে সব জায়গায় উন্মাদনা বইছে। বাফুফে চাইছে সেই উন্মাদনা কাজে লাগাতে। প্রথমে হামজাকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল।
সময় স্বল্পতার কারণে তা সম্ভব নয় বলে জানান ফাহাদ, ‘সংবর্ধনা দেওয়ার সুযোগ নেই। সরাসরি এসে ক্যাম্পে যোগ দেবেন। যদি ১৭ তারিখ সরাসরি কিংবা ১৮ তারিখেও ঢাকায় আসতেন, তাহলে সংবর্ধনা বা অন্য কিছু দেওয়া যেত।’
তবে ২০ মার্চ ভারত যাওয়ার আগে হামজাকে মিডিয়ার সামনে আনার পরিকল্পনা ফেডারেশনের। হবিগঞ্জ থেকে ১৮ তারিখ রাতে কিংবা ১৯ তারিখ সকালে ঢাকায় ফেরার সম্ভাবনা হামজার। এর পর ঢাকার একটি পাঁচতারকা হোটেলে দলীয় ফটোশুট হবে। দলের সঙ্গে ক্যাম্পে যোগ দেওয়া হামজা ঢাকায় অনুশীলন করবেন কিনা, তা নির্ভর করছে কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার ওপর।