চ্যাম্পিয়নস লিগ প্লে-অফের প্রথম লেগের ম্যাচে আজ চোখ ছিল সাবেক দুই চ্যাম্পিয়নস বায়ার্ন মিউনিখ ও এসি মিলানের ওপর। শেষ ষোলোতে যাওয়ার প্রথম ধাপে লড়াইয়ে বায়ার্ন জিতলেও হেরে গেছে এসি মিলান। সেল্টিকের বিপক্ষে বায়ার্ন জিতেছে ২- ১ গোলে। আর ফেইনুর্ডের মাঠে মিলানের হার ১-০ গোলে। অন্য ম্যাচে মোনাকোর বিপক্ষে জিতেছে বেনফিকা। আর রাতের প্রথম ম্যাচে আতলান্তাকে হারিয়ে দিয়েছে ক্লাব ব্রুগা।শেষ ষোলোর পথে এগিয়ে গেল বায়ার্ন

সেল্টিক ১ : ২ বায়ার্ন মিউনিখ

সেল্টিকের মাঠে ম্যাচের প্রথম মিনিটেই পিছিয়ে পড়ে বায়ার্ন। যদিও অফসাইডের কারণে বেঁচে যায় জার্মান পরাশক্তিরা। বাতিল হওয়া এই গোলের পর প্রথমার্ধের বাকি সময় দাপট ছিল বায়ার্নেরই। একের পর আক্রমণে প্রতিপক্ষকে কাঁপিয়ে দেয় তারা। তবে বারবার চেষ্টা করেও গোল পাচ্ছিল না বায়ার্ন। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ৪৫ মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোলটি পেয়ে যায় বায়ার্ন।

দারুণ এক শটে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন মাইকেল ওলিস। বিরতির পর অবশ্য ব্যবধান দ্বিগুণ করতে বেশি সময় নেয়নি বায়ার্ন। কর্নার থেকে বল পেয়ে দারুণ এক ভলিতে বায়ার্নকে ২-০ গোলে এগিয়ে দেন হ্যারি কেইন। ৭৯ মিনিটে দাইজেন মায়েদা সেল্টিকের হয়ে এক গোল শোধ করে ম্যাচে রোমাঞ্চ ফেরানোর আভাস দেন। যদিও শেষ পর্যন্ত সমতাসূচক গোলটি আর পায়নি তারা।

আরও পড়ুনশেষ মুহূর্তের নাটকীয়তায় লিভারপুলের হতাশা৪১ মিনিট আগেহারের হতাশা মিলানের

ফেইনুর্ড ১ : ০ এসি মিলান

ফেইনুর্ডের মাঠে ম্যাচের শুরুতেই পিছিয়ে পড়ে এসি মিলান। ৩ মিনিটে গোল করেন ইগর পায়াক্সাও। এই গোলের শোধের জন্য শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করেছে মিলান। সুযোগও এসেছিল বেশ কিছু। কিন্তু ৯০ মিনিটের পর যোগ করা সময়েও গোলটি আর পাওয়া হয়নি ইতালিয়ান ক্লাবটির। হার মেনেই ছাড়তে হয়েছে মাঠ। এখন আগামী মঙ্গলবার দ্বিতীয় লেগে নিজেদের মাঠে মিলান পাশার দান বদলাতে পারে কি না সেটাই দেখার অপেক্ষা।

ফেইনুর্ড-মিলান ম্যাচের একটি মুহূর্ত.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র প রথম ইন র ড

এছাড়াও পড়ুন:

গ্রিসের পর্যটন দ্বীপ সান্তোরিনির নিচে ঘুমিয়ে আছে ভয়ংকর আগ্নেয়গিরি

গ্রিসের জনপ্রিয় পর্যটন দ্বীপ সান্তোরিনি। যেখানে সাদা-নীল বাড়ি, সূর্যাস্ত আর নীল সমুদ্রের অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্যের টানে প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক ভিড় করেন। কিন্তু অনেকের স্বপ্নের এই দ্বীপের নিচেই লুকিয়ে আছে এক ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি, যা আবারও ভয়াবহ বিস্ফোরণে ফেটে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।

প্রায় ৩ হাজার ৬০০ বছর আগে আগ্নেয়গিরির বিশাল এক বিস্ফোরণে সান্তোরিনি দ্বীপের বর্তমান আকৃতি তৈরি হয়। সেই বিস্ফোরণে দ্বীপের মাঝখান দেবে গিয়ে একটি বিশাল গর্ত বা কালডেরা সৃষ্টি হয়। এর পর এই অঞ্চলটিতে বড় আকারের ভূমিকম্প আর দেখা যায়নি।

গত বছরের শুরুর দিক থেকে কয়েকবার ভূমিকম্পে দ্বীপটি কেঁপে ওঠায় নতুন করে সামনে এসেছে দ্বীপটির নিচে ঘুমিয়ে থাকা আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাতের সম্ভাবনা ও তার ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এ ধরনের ভূমিকম্প ভূগর্ভের ম্যাগমা চেম্বারে চাপ বাড়ার লক্ষণ হতে পারে।

ব্রিটেনের গবেষণা জাহাজ ‘আরআরএস ডিসকভারি’ থেকে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের একটি দল সান্তোরিনির সমুদ্রতলের আগ্নেয়গিরি ও হাইড্রো-থার্মাল ভেন্ট নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন এখন। চলমান এ গবেষণার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ব্রিটেনের ন্যাশনাল ওসিওগ্রাফি সেন্টারের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইসাবেল ইয়ো। তিনি জানান, এই গবেষণার মূল উদ্দেশ্য হলো আগ্নেয়গিরির আচরণ বিশ্লেষণ করে কখন বড় বিস্ফোরণের আশঙ্কা তৈরি হতে পারে তা বুঝতে পারা। সান্তোরিনি দ্বীপের ৭ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে সাগরের নিচে থাকা আরেকটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি কলোম্বো নিয়েও পর্যবেক্ষণ করছেন তারা।

চলমান এই গবেষণায় রোবটের মাধ্যমে সাগরের ৩০০ মিটার নিচ থেকে গরম পানি, গ্যাস ও আগ্নেয় পাথরের নমুনা সংগ্রহ করছেন তারা। এ ছাড়া ভূকম্পন এবং ভেতরে থাকা জ্বলন্ত লাভার গতিবিধি বোঝার জন্য ভূতাত্ত্বিক মানচিত্রও তৈরি করছেন গবেষকরা। এই গবেষণা শেষে পাওয়া তথ্য গ্রিস সরকারকে সরবরাহ করা হবে। গ্রিসের সিভিল প্রটেকশন এজেন্সি এই গবেষণার ফল বিশ্লেষণ করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করছে। অধ্যাপক পারাস্কেভি নোমিকো– যিনি নিজে সান্তোরিনির বাসিন্দা এবং সরকারিভাবে জরুরি পরিকল্পনায় যুক্ত– বিবিসিকে বলেন, ‘এই গবেষণা আমাদের জানাবে, কোথায় কতটা ঝুঁকি এবং কোন এলাকায় আগ্নেয়গিরি জেগে উঠলে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে।’

সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ফলে সান্তোরিনির ১১ হাজার বাসিন্দার প্রায় অর্ধেকই দ্বীপ ছেড়ে চলে গেছেন। পর্যটন খাতেও এর প্রভাব পড়েছে। অনেকেই তাদের পূর্বনির্ধারিত ভ্রমণ পরিকল্পনা বাতিল করেছেন। স্থানীয় ফটোগ্রাফার ইভা রেন্ডল বলেন, ‘আমার অনেক ক্লায়েন্ট তাদের শুটিং বাতিল করেছেন। আগে এপ্রিল থেকেই কাজ শুরু হতো; এবার মে পর্যন্ত কেউ আসেনি।’

তবে দ্বীপ ছেড়ে চলে যাওয়া অনেকেই জায়গাটির অতুলনীয় সৌন্দর্যের প্রেমে পড়ে আবার ফিরেও আসছেন। সান্তোরিনিতে বিয়ের ছবি তুলতে আসা এক নবদম্পতি বলেন, ‘আমরা ইচ্ছা করেই আগ্নেয়গিরির পাশে বিয়ে করতে চেয়েছি!’ এখন পর্যন্ত তাৎক্ষণিক বিস্ফোরণের আশঙ্কা না থাকলেও বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এটি ‘শুধু সময়ের ব্যাপার।’ বিবিসি।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ