জমি নিয়ে বিরোধে সংঘর্ষ যুবক নিহত, আটক ৩
Published: 13th, February 2025 GMT
রৌমারীতে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে সংঘর্ষে শাহাদত হোসেন নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন পুলিশসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১৭ জন। গত মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে যাদুরচর ইউনিয়নের ধনারচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় বুধবার তিন নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ। সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয় তিন পুলিশ সদস্যকে। তবে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তাদের প্রত্যাহার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রৌমারী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মমিনুল ইসলাম।
আটক নারীরা হলেন– আফরিনা আকতার, কুপিয়া বেগম ও আফরোজা বেগম। নিহত শাহাদত হোসেন উপজেলার ধনারচর এলাকার আব্দুল হামিদের ছেলে।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে যাদুরচর ইউনিয়নের ধনারচর এলাকার আবুল হোসেন ও নূর ইসলামের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি একাধিক মামলাও রয়েছে আদালত ও থানায়। এরই জের ধরে গত মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে বিরোধপূর্ণ জমিতে সরিষা তুলে নিয়ে যাচ্ছিল আবুল হোসেনের পক্ষের শতাধিক লোক। সে সময় জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে কল দেয় নূর ইসলামের পক্ষের লোকজন। সত্যতা যাচাইয়ের জন্য এসআই খুকিন, কনস্টেবল সোহেল ও রাশেদ ঘটনাস্থলে যান। এ সময় পুলিশের সামনে দু’পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে গুরুতর আহত হন শাহাদত, রিতা, শেফালী, বাছিরন, রাবেয়া, মন্টু মিয়া, শহিদুলসহ অন্তত ১৭ জন। তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বুধবার সকাল ৭টার দিকে সেখানে মারা যান শাহাদত হোসেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বুধবার এলাকায় আবারও উত্তেজনা তৈরি হয়। খবর পেয়ে ইউএনও, সার্কেল এসপি, রৌমারী ও রাজীবপুর থানার ওসি ঘটনাস্থলে ছুটে যান। এ সময় বিক্ষোভে ফেটে পড়ে উত্তেজিত জনতা। এতে তোপের মুখে পড়ে পুলিশ।
মঙ্গলবার পুলিশের সামনে দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় এসআই খুকিন, কনস্টেবল সোহেল ও রাশেদকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আজিজুল হক নামে একজন বাদী হয়ে ৪৩ জনের নামে হত্যা মামলা করেছেন। এ মামলায় ৫০-৬০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে পলাতক অভিযুক্তরা। বক্তব্য জানতে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কাউকে পাওয়া যায়নি।
সহকারী পুলিশ সুপার মমিনুল ইসলাম বলেন, ৩ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একটি হত্যা মামলা হয়েছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৩ নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রৌমারী থানায় নিয়ে এসেছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র এল ক র জন য স ঘর ষ ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
বৈষম্যবিরোধীদের দাবির মুখে মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন স্থগিত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে আওয়ামী লীগ নেতার প্রার্থিতা বাতিলের দাবির পর নির্বাচন কমিশন স্থগিতের এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির ২০২৫-২৬ সালের এই নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনে সভাপতি পদে দুজন প্রার্থীর মধ্যে একজন হচ্ছেন কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক এ এস এম আজাদুর রহমান। গতকাল বুধবার বিকেলের দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা আওয়ামী লীগ নেতা আজাদুর রহমানের প্রার্থিতা বাতিলের দাবি জানান। এই দাবিতে আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ের সামনে তাঁরা অবস্থান নেন। পরে নির্বাচন কমিশন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবীসহ সমিতির উপস্থিত সদস্যরা তাৎক্ষণিক বৈঠকের মাধ্যমে নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেন। গতকাল রাত আটটার পর নির্বাচন স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া হয়।
ঘোষণায় বলা হয়েছে, জেলা আইনজীবী সমিতির আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সালের নির্বাচন অনিবার্য কারণবশত স্থগিত করা হলো। পরে সমিতির সংবিধান অনুসারে নির্বাচনের বিষয়ে সবাইকে অবগত করা হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি কাজী মনজুর আহমেদ বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগের আজাদুর রহমানের প্রার্থিতা বাতিলের দাবি জানিয়েছি। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা আছে। এই দাবিতে আমরা বারের সামনে অবস্থান করি। রাতে নির্বাচন স্থগিতের কথা জানানো হয়েছে।’
জেলা আইনজীবী সমিতির প্রধান নির্বাচন কমিশনার মামুনুর রশীদ বলেন, ‘আজাদুর রহমানের প্রার্থিতার বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আপত্তি দিয়েছে। তাদের আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন, সিনিয়র-জুনিয়র আইনজীবীসহ কমিটির সদস্যরা রাতে বৈঠক করেন। বৈঠকে নির্বাচন সাময়িক স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী দুই–তিন দিনের মধ্যে আলোচনা করে নির্বাচনের বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’