২২ দিন ধরে পড়ে আছে চিকিৎসা সরঞ্জাম
Published: 13th, February 2025 GMT
দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে ২২ দিন ধরে পড়ে আছে ওষুধ ও বিভিন্ন সামগ্রী। ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম ক্রয়ে অনিয়মের অভিযোগে কর্তৃপক্ষ সেসব গ্রহণ না করায় এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত পণ্য সংরক্ষণের মতো গুদাম না থাকায় মেঝেতে ফেলে রাখা হয়েছে।
হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড সার্জিক্যালের ছয় গ্রুপের ১২টি কার্যাদেশের মাধ্যমে কিনে আনা বিভিন্ন ওষুধ ও মালপত্র ২২ দিন ধরে হাসপাতালের বহির্বিভাগের মেঝেতে পড়ে আছে। এসব অতিরিক্ত মালপত্র সংরক্ষণেরও কোনো গুদাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেই। নিম্নমানের অপ্রয়োজনীয় ওষুধ ও বিভিন্ন সামগ্রীর বেশি পরিমাণে কিনে আনাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট জটিলতার কারণে এসব মালপত্র মেঝেতে ফেলা রাখা হয়েছে। এমনকি কার্যাদেশে সরবরাহ করা ওষুধের মেয়াদ দুই বছর থাকলেও কিছু ওষুধের মেয়াদ ইতোমধ্যে ছয় মাস অতিবাহিত হয়ে গেছে।
জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেবিদ্বার সরকারি হাসপাতালে ওষুধ ও এমএসআর সামগ্রী ক্রয়ের জন্য ই-জিপিতে গত বছর ছয় গ্রুপের ছয়টি আইডিতে ২ কোটি ২০ লাখ ৩৬ হাজার টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়। কার্যাদেশ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড সার্জিক্যাল। সেই অনুযায়ী ওষুধ নন-ইডিসিএল, এমএসআর যন্ত্রপাতি, গজ-ব্যান্ডেজ-তুলা সামগ্রী, লিনেন সামগ্রী, কেমিক্যাল রি-এজেন্ট সামগ্রী ও আসবাব সরবরাহ করার কথা।
পরিচয় গোপন রাখার শর্তে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক কর্মকর্তা জানান, ই-জিপিতে দরপত্র আহ্বান করে সাবেক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ঠিকাদার জানান, দরপত্র আহ্বানকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে ছিলেন তৎকালীন দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলী এহসান। তিনি তাঁর পছন্দের ঠিকাদারকে দরপত্র পাইয়ে দিয়েছেন। তিনি দরপত্র মূল্যায়ন করার আগেই পাবনার ঈশ্বরদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি হয়ে যান।
মূল্যায়ন কমিটির সদস্য ডা. কবির হোসেন বলেন, ‘আমরা দরপত্র অনুযায়ী প্রাপ্ত ওষুধ ও মালপত্রে অসংগতি পাওয়ায় তা গ্রহণ করিনি।’
সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি আনাস ও জহিরুল ইসলাম জানান, দরপত্র অনুযায়ী ওষুধ ও মালপত্র সাপ্লাই ভাউচারের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়েছে। মূল্যায়ন কমিটি মূল্যায়ন শেষে মালপত্র সংগ্রহ করেছে।
জানতে চাইলে ডা. আলী এহসান বলেন, ‘আমি টেন্ডার কার্যক্রম পরিচালনা করলেও এখন বাকি কাজটা বর্তমান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাই করবেন। আমি দেবিদ্বারের জনগণের স্বার্থে দুটি চাহিদাপত্রের কার্যাদেশ একসঙ্গে দিয়েছি যাতে করে বরাদ্দের টাকা ফেরত না যায়।’
দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মহিবুস ছালাম খানের ভাষ্য, অনিয়মের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ব স থ য কমপ ল ক স দরপত র আইট ম
এছাড়াও পড়ুন:
বানরের ‘হানায়’ শ্রীলঙ্কায় বিদ্যুৎ বিপর্যয় নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে যত আলোচনা
একটি বানর, আর সেটিকে ঘিরে তোলপাড় পুরো শ্রীলঙ্কায়। গতকাল রোববার দেশটির একটি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে ‘হানা’ দেয় একটি বানর। তাতেই পুরো শ্রীলঙ্কায় বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দেয়। দেশজুড়ে বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ সরবরাহ।
এ ঘটনায় আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানান শ্রীলঙ্কার জ্বালানিমন্ত্রী কুমারা জয়াকোদি। ঘটনাটি মুহূর্তের মধ্যেই শোরগোল ফেলে দেয় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ঘটনাটি নিয়ে ব্যঙ্গ ও সমালোচনা করা হচ্ছে।
গতকাল রোববার স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। রাজধানী কলম্বোর দক্ষিণে একটি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে ‘হানা’ দেয় একটি বানর। এতে পুরো দেশে বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা যায়।
স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তারা জানান, বিদ্যুৎ সরবরাহ আবার চালু করতে কয়েক ঘণ্টা সময় লেগে যেতে পারে।
দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য কলম্বো পোস্ট জানায়, পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা পর থেকে বিভিন্ন এলাকায় ধারাবাহিকভাবে বিদ্যুৎ–সংযোগ স্বাভাবিক হতে শুরু করে। সে ক্ষেত্রে দেশটির স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান আর পানি পরিশোধন কেন্দ্রগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে শ্রীলঙ্কার জ্বালানিমন্ত্রী কুমারা জয়াকোদি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের বিদ্যুৎ সরবরাহের ট্রান্সফরমারের সংস্পর্শে আসে একটি বানর। এতে বিদ্যুৎ সরবরাহব্যবস্থা ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে।’
ঘটনাটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যঙ্গ করা হচ্ছে। কেউ কেউ কর্তৃপক্ষের সমালোচনাও করছেন।
এক্স পোস্টে মারিও নাওফেল নামের একজন লেখেন, ‘কলম্বোয় একটি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে বিপর্যয় সৃষ্টির পর পাজি বানরটি দেশের পুরো গ্রিডে ধস নামিয়েছে।’ তিনি আরও লেখেন, ‘একটি বানর পূর্ণাঙ্গ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। অবকাঠামো নিয়ে নতুন করে ভাবার সময় এসেছে?’
শ্রীনি আর নামের আরেকজন ব্যবহারকারী এক্সে লেখেন, ‘অতীতে বানরের ব্যবসার অভিজ্ঞতা রয়েছে শ্রীলঙ্কার।’ পোস্টে তিনি একটি হনুমানের ছবিও যুক্ত করে দেন।
স্থানীয় পত্রিকা ডেইলি মিররের প্রধান সম্পাদক জামিলা হুসেইন বলেন, ‘বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভেতরে বানরের দলের লড়াই হওয়ায় পুরো দ্বীপে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনা শুধু শ্রীলঙ্কাতেই ঘটতে পারে।’
আরও পড়ুনএক বানরের কাণ্ডে অন্ধকার পুরো শ্রীলঙ্কা৪ ঘণ্টা আগেআজ সোমবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ডেইলি মিরর বলছে, প্রকৌশলীরা ‘বছরের পর বছর ধরে’ সরকারগুলোকে বিদ্যুৎ গ্রিড হালনাগাদ করার জন্য সতর্ক করে আসছেন। এমনটা করা না হলে ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের আশঙ্কা তাঁদের।
এর আগে ২০২২ সালে অর্থনৈতিক সংকট চলার সময় শ্রীলঙ্কায় ব্যাপক পরিসরে বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা গিয়েছিল।