বেতার বর্তমান বিশ্বের যোগাযোগের একটি নির্ভরযোগ্য মাধ্যম। সমাজ উন্নয়ন, দুর্যোগ, শিক্ষা, সংবাদ ও বিনোদনের বিশেষ বাহন হিসেবে কাজ করে বেতার। তথ্য সরবরাহকে গণমানুষের কাছে আরও দ্রুত ও বিস্তৃতি ঘটাতে প্রতিবছর ১৩ ফেব্রুয়ারি দিবসটি পালিত হয়। স্পেনের অনুরোধে এবং জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে ইউনেস্কো ২০০৮ সাল থেকে দিবসটি পালন করছে।
বাংলাদেশেও যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে দিবসটি পালিত হবে। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ বেতার ও বিভিন্ন কেন্দ্র দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। বেতারের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি, বেতারের মাধ্যমে অবাধ তথ্য পাওয়ার সুবিধা এবং ব্রডকাস্টারদের মধ্যে যথাযথ সংযোগ বাড়ানোই এ দিবসের মূল লক্ষ্য।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে সামাজিক যোগাযোগের পাশাপাশি মানসম্মত বেতার এখনও বেশ জনপ্রিয়।
২০২৫ সাল জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি বছর। প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী যদি বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ১.
পরিবেশ রক্ষার ধারণা জনপ্রিয় করার পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন এবং এর গুরুত্ব সম্পর্কে শ্রোতাদের দৃষ্টিভঙ্গি প্রভাবিত করতে পারে বেতার মাধ্যম। জলবায়ু পরিবর্তনের বাস্তবতা এবং সম্ভাব্য সমাধান সম্পর্কে শ্রোতাদের অসীম জ্ঞান রয়েছে। বিশেষ করে গ্রামীণ মানুষ এবং আদিবাসী, যারা নির্দিষ্ট অঞ্চলে পরিবেশগত দুর্যোগের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নিত্যনতুন সমস্যা মোকাবিলা করছেন, তাদের কথা বেতারে আরও যত বেশি তুলে ধরা যাবে ততই বেতার এগিয়ে যাবে। বিশেষ করে দুর্যোগ-দুর্বিপাকে যখন অন্য সব মিডিয়া স্থবির, তখনও বেতার নিরবচ্ছিন্নভাবে সেবা দেয়। বিশেষত দুর্গম এলাকায় এখনও বেতার তথ্য আদান-প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ গণমাধ্যম হিসেবে স্বকীয়তা বজায় রেখেছে।
দুর্যোগ-দুর্বিপাকে বেতারের বিরামহীন সম্প্রচার মানুষকে সঠিক দিকনির্দেশনা দেয়। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বেতারের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা সম্পর্কে আমাদের সবারই জানা। সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে এবং উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণে গণমানুষকে উদ্বুদ্ধ ও উৎসাহিত করতে বেতার শক্তিশালী হাতিয়ার। এ ছাড়াও জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগ সম্পাদন এবং দুর্যোগের ঝুঁকি মোকাবিলায় বেতারের ভূমিকা অনন্য। সিডর, আইলা, নার্গিস, মহাসেন, রোয়ানুর মতো বিভিন্ন দুর্যোগের সময় কমিউনিটি বেতারের কর্মী বাহিনী নিরবচ্ছিন্নভাবে তথ্য প্রদান করে দেশ ও জাতির সেবায় নিয়োজিত থেকেছে।
শুধু কি তাই? মানুষের যাপিত জীবনে বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড়, মহামারিসহ নানা প্রকৃতিক দুর্যোগে প্রকৃত বন্ধুর মতো পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ বেতার। এখনও অবিরাম তথ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ বেতার দেশের ১৮ কোটি মানুষের জন্য, সব সময় সব কাজে। আর কমিউনিটি রেডিওগুলো নিরবচ্ছিন্নভাবে গ্রামবাংলার তৃণমূল কার্যক্রমকে তুলে ধরছে।
বেতারকে বিশেষ করে কমিউনিটি রেডিওগুলোকে দক্ষতা ও যোগ্যতা দিয়ে আরও বেশি সক্ষম করতে পারলে অভাবনীয় সফলতা এনে দেবে এসব কমিউনিটি রেডিও।
বহির্বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে গেলে বেতারের এখনও অনেক আধুনিকায়ন প্রয়োজন। এ ছাড়া বাজারের অবস্থা বুঝে শিল্পী ও কলাকুশলীদের সম্মাননা বৃদ্ধি করতে না পারলে ভালোমানের শিল্পী পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। তাই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে বাংলাদেশ বেতারসহ কমিউনিটি রেডিওগুলো এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশ বেতার তার সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতকে মোকাবিলা করার জন্য আরও বেশি মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাবে। এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন: অধ্যাপক, কৃষি রসায়ন বিভাগ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জলব য়
এছাড়াও পড়ুন:
নাগা চৈতন্যকে অবসাদে ফেলে চলে যান সামান্থা: নাগার্জুর
জনপ্রিয় দম্পতি হিসেবে পরিচিত ছিলেন দক্ষিণী তারকা নাগা চৈতন্য ও সামান্থা রুথ প্রভু। দীর্ঘ ৭ বছরের সম্পর্কে থাকার পর ২০১৭ সালে বিয়ে করেন তারা। কিন্তু তাদের সংসার বেশি দিন টেকেনি। ২০২১ সালে চার বছরের সংসার ইতি টানেন এই দুই তারকা।
ছেলে নাগা চৈতন্যকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছিলেন দক্ষিণী তারকা নাগার্জুন। যদিও শোভিতার সঙ্গে নাগার দ্বিতীয় বিয়ের পর নিশ্চিন্ত বাবা। তবে প্রাক্তন বৌমা সামান্থাকে ছেলেকে অবসাদে ফেলে চলে যাওয়ার জন্য দোষারোপ করলেন নাগার্জুন।
সামান্থার সঙ্গে নাগা চৈতন্যের বিচ্ছেদের পর থেকে সমাজমাধ্যমে রোষের মুখে পড়তে হয় নাগাকে। বাবার দ্বিতীয় বিয়ের প্রসঙ্গ তুলে নাগার দ্বিতীয় বিয়ের কারণ খুঁজেছে নেটিজেনরা।
২০১৭ সালে সামান্থাকে বিয়ের পর ২০২১-এ বিচ্ছেদের ঘোষণা করেছিলেন দু’জনে। দু’জনে মিলেই আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এখনও তাঁরা পরস্পরকে শ্রদ্ধা করেন। কিন্তু সমাজমাধ্যম বা সংবাদমাধ্যমে এমনভাবে বিষয়টি নিয়ে চর্চা হয় তাতে নিজেকে অপরাধী মনে হয়। অভিনেতা সাফ বলেন, ‘লোকে এমন করছেন যেন আমি কোনও দোষ করেছি।’
এবার ছেলের কথার রেষ টেনে নাগার্জুন বলেন, ‘আসলে নাগা খুব দুঃখে ছিল। সে কারও কাছে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে না। বাবা হিসাবে আমি বুঝতাম। সামান্থার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর নাগা অবসাদে ডুবে গিয়েছিল। এখন ওকে খুশি দেখে আমি নিশ্চিন্ত।’
যদিও নাগার্জুনের এই মন্তব্য ভালভাবে গ্রহণ করেননি সামান্থার অনুরাগীরা। যদিও এই প্রসঙ্গে এখনও পর্যন্ত মুখ খোলেননি অভিনেত্রী। সূত্র: আনন্দবাজার।