Samakal:
2025-04-15@22:11:40 GMT

চেয়ারম্যানের কক্ষে তালা, সংঘর্ষ

Published: 13th, February 2025 GMT

চেয়ারম্যানের কক্ষে তালা, সংঘর্ষ

যশোরের কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের কক্ষে ছাত্র-জনতার তালা দেওয়াকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২২ জন আহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার দুপুরে চিংড়া বাজারসংলগ্ন এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়।

এদিকে মঙ্গলবার বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার জের ধরে ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে বুধবার দিনভর হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাগরদাঁড়ী ইউপি চেয়ারম্যান কাজী মুস্তাফিজুল ইসলাম মুক্ত কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। গত ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনি চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করেন। তাঁর ছোট ভাই কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি। বর্তমানে তিনি কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরও কাজী মুক্ত ইউপি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে স্থানীয় ছাত্র-জনতা তাঁর পদত্যাগের দাবিতে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে সমবেত হয়। এক পর্যায়ে তারা চেয়ারম্যানের কক্ষে তালা লাগিয়ে দেয়। সংবাদ পেয়ে এলাকাবাসী সেখানে এসে তালা খুলে দেওয়ার দাবি জানান। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে উভয় পক্ষের অন্তত ২২ জন আহত হন। পরে এলাকাবাসী তালা ভেঙে ফেলেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু সাঈদ, উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইউনুস হোসেন, সাগরদাঁড়ী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মেহেদী হাসান রনি, ছাত্রদল নেতা সাগর, আকাশ, নাঈম, রকি, গোলাম মোস্তফা এবং ইউপি চেয়ারম্যানের ভাই উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক কাজী মুজাহিদুল ইসলাম পান্না ও কাজী মাজহারুল ইসলাম সোনা। অন্য ব্যক্তিরা স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ও আলাদাভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।

যশোর জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি মজনু হোসাইন বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যান কাজী মুস্তাফিজুল ইসলাম মুক্ত শেখ হাসিনার পক্ষে কাজ করছেন। এমন খবরে ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে পরিষদে গিয়ে চেয়ারম্যানের কক্ষে তালা দেয়। এ সময় চেয়ারম্যানের পক্ষের লোকজন এসে হামলা চালায়। এতে তাদের ১৪-১৫ জন আহত হয়।

ইউপি চেয়ারম্যান কাজী মুস্তাফিজুল ইসলাম মুক্ত বলেন, তিনি নিয়মিত পরিষদে আসছেন। বুধবার পরিষদ বন্ধ থাকার সুযোগে প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁর কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এ সময় এলাকার সাধারণ মানুষ তালা খুলে দেওয়ার দাবিতে জড়ো হলে তাদের ওপর হামলা হয়। এতে তাঁর দুই ভাইসহ সাতজন আহত হয়েছে।
কেশবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, দুই পক্ষের সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তের পর ব্যবস্থা নেবেন।  

এদিকে সামাজিক দ্বন্দ্বের জেরে মঙ্গলবার সকালে হরিণাকুণ্ডুর চাঁদপুর ইউনিয়নের হাকিমপুরে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এতে আইনজীবীর সহকারী ও বিএনপি কর্মী মোশাররফ হোসেন নিহত হন। এ ঘটনায় ২০ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন তাঁর স্ত্রী ময়না খাতুন। 

এ ঘটনার জেরে বুধবার আসামিদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও গোয়াল ঘর থেকে গরু লুট করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দলু ও হানেফ গ্রুপের সমর্থকরা বিএনপি নেতা সাইদের ৫টি, আমিরুলের ৩টি, মইনের ২টি, আমিরুলের ৪টি, আব্দুল জব্বারের ৫টি ও আব্দুল আলীমের ৩টিসহ মোট ৩৭টি গরু নিয়ে গেছে। 

বিএনপি নেতা সাইদের ভাষ্য, লুট করা গরুর দাম প্রায় কোটি টাকা। বাদীপক্ষের লোকজন তাঁর বাড়ি থেকে দুই লাখ ও সারের দোকান থেকে দেড় লাখ টাকা নিয়ে গেছে। এ সময় দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘরে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। বর্তমান গ্রামটি পুরুষশূন্য। 

হরিণাকুণ্ডু থানার ওসি এম এ রউফ খানের ভাষ্য, গরু লুট বা বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুরের কোনো তথ্য তাঁর কাছে নেই। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল ল ইসল ম জন আহত স ঘর ষ ব এনপ উপজ ল এ সময়

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিমা মাত্র

বাবেলের অধিবাসীরা যখন হজরত ইবরাহিমের (আ.) কথা কর্ণপাত করল না, শক্ত যুক্তিও মেনে নিতে রাজি হলো না, তখন তিনি দাওয়াত দেওয়ার ভিন্ন একটি কৌশল অবলম্বন করলেন। তাদের মন্দিরে অনেকগুলো কাঠের দেবদেবী ছিল, এর মধ্যে একটি ছিল প্রধান দেবতা। তিনি পরিকল্পনা করলেন তার জাতিকে দেখাবেন এই প্রতিমাগুলো কত দুর্বল—নিজের শরীর থেকে একটি মাছি তাড়াবারও শক্তি এদের নেই।

একদিন বাবেলে ধর্মীয় মেলা হবে, লোকজন ইবরাহিমকে (আ.) সেখানে নিয়ে যাওয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করতে লাগল। ইবরাহিম (আ.) আকাশের তারকার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘আমি অসুস্থ।’ তিনি ঠিক মিথ্যা বলেননি, তার জাতির কুফরি কাজকর্মে তিনি আত্মিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তারা তার কথা বিশ্বাস করে। (সুরা সফফাত, আয়াত: ৮৮-৯০) ইবরাহিম (আ.) আস্তে আস্তে বললেন, ‘আল্লাহর কসম, তোমরা চলে যাওয়ার পর আমি অবশ্যই তোমাদের প্রতিমাগুলোর কায়দা করব।’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত: ৫৭)

আরও পড়ুন‘রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া’ কখন পড়ব০৪ মার্চ ২০২৫

এরপর তারা যখন চলে যায়, তিনি চুপি চুপি প্রতিমাগুলোর কাছে গেলেন। যাদের সামনে ছিল থরেথরে সাজানো ফলমূল আর সুস্বাদু খাবার। তিনি বললেন, ‘তোমরা কি খাবে না? তোমাদের কী হয়েছে, কথা বলছো না কেন?’ (সুরা সফফাত, আয়াত: ৯১-৯৩) তিনি সজোরে মূর্তিগুলোর ওপর আঘাত হানলেন। কিন্তু বড় মূর্তিটাকে কিছু করলেন না, যেন ওটার ওপর সব দোষ চাপানো যায়।

লোকজন ধর্মমেলা থেকে ফিরে যখন মন্দিরের এই হাল দেখল, রেগেমেগে একদম বেহাল হয়ে হয়ে গেল। তারা বলল, ‘কে আমাদের দেবদেবীর এই অবস্থা করল? সে নিশ্চয় সীমালংঘনকারী। কেউ কেউ বলল, এক যুবককে দেখেছি এদের সমালোচনা করতে, তার নাম ইবরাহিম। তারা বলল, তাকে জনতার সামনে উপস্থিত করো, যেন তারা তাকে দেখতে পারে।’

ইবরাহিমকে (আ.) উপস্থিত করার পর তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘তুমিই কি আমাদের দেবদেবীদের এই হাল করেছ? ইবরাহিম (আ.) বললেন, ওই বড় দেবতাটাই এসব করেছে, ওটাকে জিজ্ঞেস করো, যদি কথা বলতে পারে!’

এ কথা শুনে তারা চিন্তায় পড়ে গেল। তারা একে অপরকে বলল, তোমরা দেবদেবীদের অরক্ষিত রেখে গেছ, তোমরাই বরং সীমালঙ্ঘনকারী। তারপর লজ্জায় তাদের মাথানত হয়ে গেল। তারা ইবরাহিমকে (আ.) বলল, ‘তুমি তো ভালো করেই জানো এরা কথা বলতে পারে না।’

আরও পড়ুনসুরা ইয়াসিনের সার কথা১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ইবরাহিম (আ.) এই মন্তব্য শোনারই অপেক্ষায় ছিলেন। তিনি বললেন, ‘তবে কি তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুর ইবাদত করো, যা তোমাদের কোনো উপকার করতে পারে না এবং কোনো ক্ষতিও করতে পারে না? ধিক তোমাদের এবং আল্লাহর পরিবর্তে তোমরা যাদের ইবাদত কর তাদের। এরপরও কি তোমরা বুঝবে না?’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত ৫৯-৬৭)

মূর্তিপূজার অসারতার এমন স্পষ্ট প্রমাণের পর বাবেলের অধিবাসীদের উচিত ছিল এক আল্লাহয় বিশ্বাস করা, হজরত ইবরাহিমকে (আ.) নবী বলে মেনে নেওয়া। কিন্তু তারা তা না করে ফন্দি আঁটতে থাকে কীভাবে মূর্তি ভাঙার প্রতিশোধ নেওয়া যায়, কীভাবে তাকে কঠিন শাস্তি দেওয়া যায়।

আল্লাহর শরিয়ত কোনো প্রাণীকেই জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার অনুমতি দেয় না, আর মানুষ তো সবচেয়ে সম্মানিত প্রাণী, তার বেলায় তো আরও আগে না। (মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস: ৩,৫৪২) কিন্তু কাফেরদের নীতিতে ইনসাফ নাই, মানবতা নাই, আছে কেবল পাশবিকতার জয়গান। আর তাই বাবেলের মূর্তিপূজারীরা সিদ্ধান্ত নেয়—এই যুবককে নিরস্ত করার একটাই উপায় আছে, আর তা হলো জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা।

আরও পড়ুনআল্লাহর কাছে যে দোয়া করেছিলেন নবী সোলায়মান (আ.) ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ