‘নাশিত আমাদের ছোট ভাইয়ের মতো। তাকে হত্যার বিচারের দাবি নিয়ে মানববন্ধনে এসেছি। হত্যাকারীদের আজ আদালতে তোলা হয়েছে। তাদের সুষ্ঠু বিচার চাই, যেন এমন জঘন্য কাজ আর কেউ করতে না পারে।’ কথাগুলো ফেনী বালিকা বিদ্যানিকেতনের এসএসসি পরীক্ষার্থী জয়া জান্নাতের।

তার মতো আরও কয়েকজন ছাত্রছাত্রী গতকাল বুধবার এসেছিল ফেনী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সামনে। এখানে নাশিত হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেন স্বজন ও এলাকাবাসী। 

বুধবার সকালে ওই আদালতে হাজির করা হয় আলোচিত নাশিত হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার তিন আসামি আশরাফ হোসেন তুষার, মোবারক হোসেন ওয়াসিম ও ওমর ফারুক রিফাতকে। দুপুরে তাদের শাস্তির দাবিতে কর্মসূচিতে অংশ নেন নাশিতের স্বজনের পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।

আহনাফ আল মাঈন নাশিত (১০) গত বছরের ৮ ডিসেম্বর বিকেলে ফেনী থেকে নিখোঁজ হয়। ১২ ডিসেম্বর পৌর এলাকার দেওয়ানগঞ্জে পরিত্যক্ত ডোবায় পাওয়া যায় তার লাশ। শহরের একাডেমি এলাকার ভাড়া বাসায় বসবাস করে তার পরিবার। নাশিত একই এলাকার গ্রামার স্কুলের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। তার বাবা মাঈন উদ্দিন সোহাগ ফেনী রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিতে কর্মরত। ছেলের খোঁজ না পেয়ে তিনি ৯ ডিসেম্বর ফেনী মডেল থানায় জিডি করেন। তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে মুক্তিপণ বাবদ ১২ লাখ টাকা দাবি করে দুর্বৃত্তরা। তিনি এ বিষয়ে এজাহার করলে ১২ ডিসেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়। পুলিশ আসামি আশরাফ হোসেন তুষারকে আতিকুল আলম সড়ক ও মোবারক হোসেন ওয়াসিম, ওমর ফারুক রিফাতকে বিসিক এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। তাদের দেওয়া তথ্যে নিশাতের লাশ উদ্ধার করা হয়।

বুধবারের মানববন্ধনে নিশাতের স্বজন মো.

তৌহিদ বলেন, ‘আর কোনো মায়ের কোল যেন খালি না হয়। এ জন্য হত্যাকারীদের বাইরে রাখা যাবে না। নাশিত হত্যাকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।’

ফেনী বালিকা বিদ্যানিকেতনের এসএসসি পরীক্ষার্থী মরিয়ম কবির মীম, আরফা ও গিরিশ অক্ষয় একাডেমি স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র শুভ হাজারী বলে, আর কেউ যেন এমন ঘৃণিত ও জঘন্য কাজ করতে না পারে, এ জন্য হত্যাকারীদের ফাঁসি দাবি করছে তারা। সর্বোচ্চ শাস্তিই তাদের প্রাপ্য।

ফেনী লাইট হাউজ কোচিং সেন্টার থেকে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয় নাশিত। সে প্রতিষ্ঠানের কনিষ্ঠ ছাত্রদের একজন জানিয়ে শিক্ষক মোহাম্মদ রায়হান বলেন, ‘এ ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।’

মামলার বাদী ও নাশিতের বাবা মাঈন উদ্দিন সোহাগ বলেন, মামলার তারিখে আসামিদের আদালতে আনা হয়। যেহেতু এরা আত্মস্বীকৃত খুনি। তিনি অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পুলিশ এদের সন্দেহের ভিত্তিতে ধরে নিয়ে আসে। তাদের দেখানো জায়গায় লাশ পাওয়া যায়। তারা নাশিতকে শ্বাসরোধে হত্যার বিষয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। পরে ব্যাগে পাথর দিয়ে লাশ গুম করার চেষ্টা করেছে। এই বর্বরোচিত হত্যার জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চান তিনি। 

ফেনী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মেজবা উদ্দিন খান বলেন, আসামিদের আজ (বুধবার) আদালতে হাজির করা হয়েছে। তাদের হাজতে রেখেই কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তিন আসামি ইতোপূর্বে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। তাদের জন্য কেউ জামিনের আবেদন করেনি। এটি রোমহর্ষক শিশুহত্যা। বাদীপক্ষ সাক্ষীদের সঠিক সময়ে আদালতে আনতে পারলে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে।

ফেনী আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মাজহারুল করিম বলেন, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এ ফারহানা লোকমানের আদালতে ওই আসামিদের উপস্থাপন করা হয়। আদালত মামলাটির পরবর্তী দিন আগামী ১৮ মার্চ নির্ধারণ করেছেন। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড স ম বর স বজন

এছাড়াও পড়ুন:

রূপগঞ্জে খেলার মাঠ স্থায়ী করার দাবিতে মানববন্ধন

নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জে জুটো ফাইবার সংলগ্ন খেলার মাঠ স্থায়ী করার দাবিতে ১১টি স্কুল ১৬টি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে স্থানীয় এলাকাবাসী  বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।

সোমবার (১০) ফেব্রুয়ারি দুপুরে উপজেলার তারাবো পৌরসভার শীতলক্ষা নদীর তীর সংলগ্ন তারক ও বাজার এলাকায় এ বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন, তারাবো পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক ভূইয়া, সাবেক মেয়র শফিকুল ইসলাম চৌধুরী, ব্যবসায়ী শামীম মাহবুব, আসিফ ইকবাল, ফারুক আহমেদ জনি, আতিক চৌধুরী, শাহাবুদ্দিন চৌধুরী, বাদল মাস্টার, আবু তাহের, মোজাম্মেল হক ফারহানসহ আরো অনেকে।


 মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, তারাবো পৌর সভায় ৭ ও ৮ নং ওয়ার্ডের ৬০ হাজার বাসিন্দাদের একমাত্র খেলার মাঠ ছিলো  ঢাকাইয়া মসলিন প্রকল্পের পাশে ৮ বিঘা জুড়ে সরকারি জমিতে খেলার মাঠ। কিন্তু  জুটো ফাইবার নামে তাদের অলাভজনক সরকারী প্রতিষ্ঠান গড়তে এলাকাবাসীকে মাঠ বঞ্চিত করে ইতোমধ্যে বালি ফেলে ভরাট করে নিয়েছে। এতে ৩০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর কোমলপ্রাণ সন্তানরা মাঠ বঞ্চিত হবে। অথচ ঢাকাইয়া মসলিন প্রকল্পটির অধীনে থাকা পর্যাপ্ত জায়গা অলস পড়ে থাকে। সরকার চাইলে সেখানেই তাদের নতুন প্রজেক্ট করতে পারেন৷ 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ডাক বিভাগে ১২৩ পদে চাকরির সুযোগ
  • কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন
  • কৃষি গুচ্ছের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, আবেদন শুরু ১৫ ফেব্রুয়ারি
  • মুন্সীগঞ্জে নিখোঁজ স্কুলছাত্রের সন্ধানের দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভের পর থানায় ভাঙচুর
  • বিজিবি নেবে সিপাহি, আবেদন শেষ কাল
  • ছেলে ঘরে ঢুকে দেখে, মায়ের লাশ ঝুলছে
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় জিপিএর ওপর নম্বর কমেছে, মেধা স্কোর নির্ধারণ যেভাবে
  • বগুড়ায় ব্যবসায়ীকে মারধরে অভিযুক্ত যুবদল নেতার পক্ষে-বিপক্ষে মানববন্ধন
  • রূপগঞ্জে খেলার মাঠ স্থায়ী করার দাবিতে মানববন্ধন