এসিল্যান্ডের ওপর হামলার চেষ্টা, একজন গ্রেপ্তার
Published: 13th, February 2025 GMT
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজ এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে এসিল্যান্ডের ওপর হামলার চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বুধবার ভোরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কথিত স্থানীয় সমন্বয়ক ফরহাদ ইবনে রুমিকে উপজেলার উবাহাটা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার ফরহাদ উপজেলার উবাহাটা এলাকার দিদার হোসেনের ছেলে।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার উপজেলার নতুন ব্রিজ এলাকায় আদালতের আদেশে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন চুনারুঘাট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহবুব আলম মাহবুব। এ সময় ফরহাদ সহকারী কমিশনারের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে। এক পর্যায়ে লাঠি দিয়ে সহকারী কমিশনারের ওপর হামলার চেষ্টা করে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এ ঘটনায় বুধবার ভোরে শাহজিবাজার সেনা ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন আরাফি তাজোয়ার আমিনের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর একটি দল ফরহাদকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে চুনারুঘাট থানায় হস্তান্তর করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন ফরহাদ ও তার লোকজন উবাহাটা মৌজার খাস খতিয়ানে রাস্তা ও এক ব্যক্তির প্রায় ২০ ফুট জমি দখল করে দোকানঘর নির্মাণ করে। এ ঘটনায় ফরহাদের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের ৬ ডিসেম্বর হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলায় দায়ের করেন বাবুল মিয়া নামে এক ব্যক্তি। ওই মামলায় সম্প্রতি অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বাবুল মিয়ার পক্ষে আদেশ প্রদান করেন। ওই আদেশের পর সহকারী কমিশনার ফরহাদের ভূমি উচ্ছেদ করতে গেলে সে বাধা দেয়।
মামলার বাদী বাবুল মিয়া জানান, ফরহাদসহ তার লোকজন এলাকার প্রভাবশালী। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পায় না। তারা দীর্ঘদিন ধরে তাঁর জায়গাসহ রাস্তার জমি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছিল। উপজেলা এসিল্যান্ড সেখানে উচ্ছেদ অভিযানে গেলে ফরহাদ তার ওপরও চড়াও হয়।
এলাকাবাসীর ভাষ্য, ফরহাদ এতদিন যুবলীগের পরিচয় দিলেও গত ৫ আগস্টের পর থেকে নিজেকে ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক বলে দাবি করছে। গত কয়েক মাসে সে এলাকায় নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে।
চুনারুঘাট উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক তোফাজ্জল মিয়া বলেন, ফরহাদ নামে কোন সমন্বয়ক নেই, সে নিজেকে জাহির করার জন্য এমন পরিচয় দিয়েছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহবুব আলম মাহবুব জানান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আদেশে তিনি ওই স্থাপনায় উচ্ছেদ অভিযানে গেলে ফরহাদ সরকারি কাজে বাধা দিয়ে হামলার চেষ্টা করে। তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চুনারুঘাট থানার ওসি নুর আলম জানান, সেনাবাহিনী ফরহাদকে আটকের পর থানায় হস্তান্তর করলে বাবুল মিয়ার দায়েরকৃত মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সমন বয়ক উপজ ল র ফরহ দ সহক র
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনার সন্ধান চেয়ে পাগলা মসজিদের দানবাক্সে চিঠি
কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের দানসিন্দুকে ২৮ বস্তা টাকার পাশাপাশি প্রায় এক বস্তা চিঠি-চিরকুট পাওয়া গেছে। চিঠিতে কেউ প্রিয় মানুষের ভালোবাসা পেতে, কেউবা নিজের বিয়ের জন্য দোয়া চেয়েছেন। কেউ নিজের সন্তানের রোগমুক্তি কামনা করেছেন। কেউ আবার পছন্দের দল বা ব্যক্তিকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় দেখতে চেয়ে পাগলা বাবার কাছে চিঠি লিখেছেন।
৪ মাস ১২ দিন পর আজ পাগলা মসজিদের ১১টি সিন্দুক খোলা হয়। সিন্দুকে মোট ২৮ বস্তা টাকা, এক বস্তা চিরকুট, বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার ও বৈদেশিক মুদ্রা পাওয়া গেছে। দিনভর গণনার পর এবার রেকর্ড ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেসমিন আক্তার।
দানের পাশাপাশি মনোবাসনা পূরণে কেউ কেউ সিন্দুকে চিরকুট বা চিঠি ফেলে যান। মানুষের ধারণা, এখানে চিরকুটের মাধ্যমে কিছু চাইলে, সেটাও পাওয়া যাবে। গতবার চিঠির বিষয়টি গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় এবার বেনামি চিঠির পরিমাণ বেশি ছিল। কিছু চিঠিতে নাম থাকলেও ঠিকানা দেওয়া ছিল কম।
মো. ইমরান নামের এক তরুণ ভালোবাসার মানুষ রাবেয়াকে কাছে পেতে দানবাক্সে একটি চিরকুট রেখে গেছেন। চিঠিতে ইমরান লিখেছেন, ‘ইয়া পাগলা বাবা, আমাদের সালাম গ্রহণ করবেন। আমাদের আরজি কবুল করুন। আমাদের মনের বাসনা আপনি বোঝেন। ইমরান ভালোবাসে রাবেয়া আক্তারকে। রাবেয়ার পরিবার ইমরানকে বিয়ে দেওয়ার জন্য রাজি না। আপনি রাবেয়াকে এনে দেন।’
বেনামি একজন বিয়ের আকুতি জানিয়ে লিখেছেন, ‘আমি খুব অসহায়। আমার বিয়ে বারবার ভেঙে যাচ্ছে। আমার পরিবার আমাকে নিয়ে চিন্তিত। চারপাশের মানুষের কটুকথা আমি আর সহ্য করতে পারছি না। তুমি জানো আমি নির্দোষ ও নিরপরাধ। আমার বিয়েতে যদি কোনো বাধাবিপত্তি থাকলে তুমি সমাধান করে দাও...তুমি আমাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিও না।’
আরও পড়ুনপাগলা মসজিদের দানসিন্দুকে পাওয়া গেল রেকর্ড ৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা১ ঘণ্টা আগেবেনামি আরেকটি চিরকুটে একজন পাগলা বাবার কাছে শেখ হাসিনার সন্ধান চেয়ে জানতে চেয়েছেন, ‘পাগলা চাচা, শেখ হাসিনা কোথায়?’ আরেকজন ‘সাধারণ জনগণ’ নামে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ক্ষমতায় দেখতে চেয়ে লিখেছেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই। আল্লাহ তুমি সহজ করে দাও।’
রেহানা সারোয়ার নামের একজন সন্তান কামনা করে চিঠি লিখেছেন। তিনি নাম-ঠিকানা উল্লেখ করে লিখেছেন, ‘আমার বিয়ে হয়েছে ১২ বছর চলতাছে। কিন্তু এখনো আমি কোনো সন্তানের মা হতে পারলাম না। অনেক ডাক্তার দেখাইছি, কিন্তু কোনো লাভ হয় নাই। আমি এমন কোনো দিন নাই, এমন কোনো রাত নাই, আমার আল্লাহর কাছে হাত তুলে কাঁদি নাই...আমাকে একটা নেক সন্তানের মা হওয়ার সুযোগ দেন।’
কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের দানসিন্দুকে পাওয়া টাকা গণনার কাজ করছেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ অন্যরা