ছাত্রদল নেতার নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রকে জিম্মি, মুক্তিপণ আদায়
Published: 13th, February 2025 GMT
শ্যামনগরে নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অবিনাশ মুণ্ডাকে জিম্মি করে ৪৫ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করেছে এক ছাত্রদল নেতার নেতৃত্বে দুর্বৃত্তরা। বুধবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলা সদর থেকে কৌশলে তাঁকে গৌরিপুর এলাকায় নিয়ে আটকে রাখা হয়। এক পর্যায়ে শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়। বিকাশ ও নগদ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে মুক্তিপণের টাকা পেয়ে রাত ৮টার দিকে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা অবিনাশকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন।
নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের খুলনা ক্যাম্পাসের ছাত্র অবিনাশ উপজেলার কালিঞ্চি গ্রামের গোবিন্দু মুণ্ডার ছেলে। এ ঘটনায় ছাত্রদল নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন ও আজিজুর রহমানের নামে শ্যামনগর থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। শ্যামনগর উপজেলার গৌরিপুর গ্রামের মামুন নিজেকে সাতক্ষীরা পলিটেকনিক কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক বলে পরিচয় দেন।
অবিনাশের ভাই দীনবন্ধু মুণ্ডা জানান, বুধবার সকালে অবিনাশ শ্যামনগরে যান। পূর্ব পরিচিত আজিজুর রহমানের সঙ্গে বিআরটিসি বাস কাউন্টারে বসে কথা বলার সময় আব্দুল্লাহ আল মামুন সেখানে যান। অবিনাশকে গৌরিপুর এলাকায় নিয়ে আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। মোবাইল ফোনে তাঁর চিৎকার শুনিয়ে দুই দফায় ৪৩ হাজার টাকা আদায় করা হয়। এ ছাড়া অবিনাশের মোবাইল ফোন এবং তাঁর কাছে থাকা আরও ২ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে রাত ৮টার পরে তাঁকে হাসপাতালের সামনে ফেলে যায়। এ ঘটনায় দু’জনের বিরুদ্ধে তিনি শ্যামনগর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। তবে স্থানীয় বিএনপির এক নেতা টাকা ও মোবাইল ফোন ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাই আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
অবিনাশ জানান, পলিটেকনিক কলেজে পড়ার সময় আজিজুরের সঙ্গে তাঁর পরিচয় ছিল। মামুনের ডাকে সাড়া দিয়ে শ্যামনগর যাওয়ার পর বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে তাঁকে গৌরিপুর গুচ্ছগ্রামে নিয়ে আটকে রাখা হয়। পরে মারধর করে টাকা ও ফোন ছিনিয়ে নেয়।
এ বিষয়ে আজিজুর রহমান জানান, তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। কে জড়িত– জানতে চাইলে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান। প্রধান অভিযুক্ত মামুন বলেন, ‘আমি সাতক্ষীরা চলে এসেছি। বিষয়টি মীমাংসা হয়ে গেছে’। তাঁর পক্ষে স্থানীয় বিএনপি নেতারা দু’পক্ষের মধ্যে মীমাংসা করে দিয়েছেন বলে তাঁর দাবি। টাকা ও মোবাইল ফেরত দেওয়া হয়েছে কিনা– জানতে চাইলে তিনি বলেন, থানা পুলিশের কাছে জেনে নিন। ঘটনার বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক অভিক বলেন, বাদী ও বিবাদী দু’পক্ষ থানার বাইরে বিষয়টি মীমাংসা করে নেবেন বলে জানিয়েছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ য মনগর আজ জ র র ছ ত রদল অব ন শ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
'ডেভিল হান্ট' অভিযানে সুন্দরবনের দস্যুদের দুই সহযোগীসহ মোংলায় পাঁচজন আটক
সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত করতে পরিচালিত বিশেষ অভিযান ‘ডেভিল হান্ট’-এর অংশ হিসেবে যৌথ বাহিনী সুন্দরবনের দস্যুদের দুই সহযোগীসহ মোংলায় পাঁচজনকে আটক করেছে। কোস্টগার্ড ও পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে।
রোববার রাতে সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানার চকবারা বাজার এলাকা থেকে কোস্টগার্ডের সদস্যরা একটি অবৈধ দেশীয় একনালা পাইপ গান ও ১৬টি দেশীয় অস্ত্রসহ আব্দুল হাকিম গাজী (৬৮) ও হাফিজুর রহমান (২৫)-কে আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছে যে, তারা সুন্দরবনের ডাকাতদের সহযোগিতা করতো।
কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের (মোংলা সদর দপ্তর) অপারেশন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার তারেক আহম্মেদ জানান, আটককৃত ব্যক্তিরা সুন্দরবনের দস্যুদের সহায়তা করতো এবং তারা সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানার চকবারা গ্রামের বাসিন্দা। আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত করতে কোস্টগার্ডের ‘ডেভিল হান্ট’ অভিযান চলমান থাকবে।
অন্যদিকে সোমবার ভোর রাতে মোংলার চাঁদপাই এলাকা থেকে পুলিশ আরও তিনজনকে আটক করে। তারা হলেন দুলাল ফকির (৪০), আমজাদ মোড়ল (৪২) ও মো. হেলাল (৩০)। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আটক ব্যক্তিরা স্থানীয় রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, সুন্দরবন ও আশপাশের এলাকায় দস্যুতার বিরুদ্ধে অভিযান আরও জোরদার করা হবে।
মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনিসুর রহমান জানান, আটক তিনজনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদের বাগেরহাট জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।