ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজ স্থবিরের ঘটনায় বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের উদ্বেগ
Published: 12th, February 2025 GMT
ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজ স্থবির হয়ে পড়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। বুধবার সংগঠনটির সভাপতি মো. আমিরুল ইসলাম ও মহাসচিব মুহাম্মদ মাজাহারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্বেগ জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারকার্য স্থবির হয়ে পড়েছে। যে কারণে বিচারপ্রার্থী মানুষ অবর্ণনীয় হয়রানির শিকার হচ্ছেন। বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন অত্যন্ত ধৈর্য ও সতর্কতার সঙ্গে এত দিন পুরো ঘটনা পর্যবেক্ষণ করছে। পরিস্থিতি যে পর্যায়ে যাচ্ছে, তা সারা দেশের বিচারকদের মনে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ জন্ম দিয়েছে।
জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন আরও বলেছে, ঘটনার সূত্রপাত ৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে একটি মামলার শুনানিকে কেন্দ্র করে। ঢাকা আইনজীবী সমিতির গুরুত্বপূর্ণ পদধারী কয়েকজন আইনজীবী ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে আসামিপক্ষের জামিন শুনানি করেন, যা বিচারক গুণাগুণের ভিত্তিতে শুনানি নিয়ে নামঞ্জুর করেন। আদালতের আইনানুগ আদেশকে কেন্দ্র করে আইনজীবী সমিতির কতিপয় আইনজীবীর ইন্ধন ও প্রত্যক্ষ মদদে কিছু আইনজীবী বিগত কয়েক দিনে যে আচরণ প্রদর্শন করেছেন, যা স্পষ্টত অসদাচরণ, বিচারকাজে বাধা সৃষ্টি, বিচারকের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপ—এগুলো বিচারকের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি আরও বলেছে, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন শুরু থেকে ঘটনার শান্তিপূর্ণ ও স্থানীয়ভাবে সমাধানের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। সব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। এ নিয়ে ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ, ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ঢাকা আইনজীবী সমিতির সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টির সুরাহার চেষ্টা করছেন। এত সব প্রচেষ্টাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ঢাকা আইনজীবী সমিতি বিচারকের অপসারণের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল বর্জনের ডাক দিয়েছে। আদালতে বিচারক নিয়মিত বসবেন, এটা স্বাভাবিক, আইনজীবীরা আদালত বর্জন করতেই পারেন। কিন্তু বিচারককে আদালত থেকে নেমে যাওয়ার জন্য চাপ বা ভয়ভীতি দেখানোর কোনো সুযোগ নেই।
উল্লেখ্য, ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে অটোরিকশায় নারী শিক্ষার্থীকে দেখে অশালীন কর্মকাণ্ড, আটক ১
রাজশাহীতে এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। আজ বুধবার ভোরে তাঁকে নওগাঁর মান্দা থেকে আটক করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
আটক ব্যক্তির নাম মাসুদ রানা। তাঁর বাড়ি রাজশাহী নগরের কেশবপুর এলাকায়। তিনি কাপড়ের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী ফেসবুক আইডিতে ওই ব্যক্তির একটি ছবি ও ১৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও পোস্ট করে ঘটনার বর্ণনা দেন। তখন ফেসবুকে অনেকেই তাঁকে আটক করার দাবি জানান। গতকাল রাতে স্থানীয় ছাত্র-জনতা মাসুদ রানার বাড়িতে ভাঙচুর চালান।
এ সম্পর্কে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ওই ব্যক্তিকে নওগাঁ থেকে সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সহযোগিতায় ডিবি পুলিশ আটক করেছে। ওই শিক্ষার্থী ফেসবুকে ঘটনাটি জানানোর পর থেকেই পুলিশ দায়িত্ব মনে করে অভিযানে নামে। আজ এই ব্যাপারে অভিযোগ পাওয়ার পর ওই ব্যক্তিকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আজ (গতকাল) পরীক্ষা দিয়ে ইফতারি কিনে বাসায় আসার সময় বর্ণালীর মোড়ে এই জানোয়ারের বাচ্চা আমার সামনে বসে। হাতে কাপড়ের বড় বস্তা ছিল। বারবার আমার পায়ে টাচ হচ্ছিল। ভাবলাম এত বড় ব্যাগ, তাই হয়তো সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু কিছুক্ষণ পর আরও বেশি সমস্যা হওয়ার পর পা সরাতে বলি। তারপর সে নিজের গোপনাঙ্গ নিয়ে অশোভন আচরণ করে। যখন বুঝতে পারে ভিডিও করতেছি, তখনই হাত সরায় নেয়।’
এ ব্যাপারে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে গতকাল রাতে তিনি ফেসবুকে আরেকটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘যাঁরা এই অবধি আমার খোঁজখবর নিয়েছেন, আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ। আমি সেইফলি বাসায় আসছি। যাঁরা জিজ্ঞাসা করতেছেন আমি কিছু করতে পেরেছি কি না, তাঁদের জন্য বলি “না”, আমি তেমন কিছু করতে পারিনি! যাঁরা আমাকে চিনেন, তাঁরা জানেন, আমি ভিতু অনেক। অল্পতে ভয় পাই। ওই ঘটনা ঘটার পর আমার হাত–পা কাঁপছিল। গা ঘিন ঘিন করছিল। দুটি গালি দেওয়া ছাড়া কিছু করতে পারিনি। এই যে সঠিক জায়গায় সঠিক প্রতিবাদ না করতে পারার কষ্ট আমি আজীবন ধরে পেয়ে আসছি। ওই লোকের খোঁজ পাওয়া গেছে। যত দ্রুত সম্ভব আইনি পদক্ষেপ নিব!’