অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদের অপসারণ দাবিতে আন্দোলন করছেন ব্যাংকের কর্মকর্তারা। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙার পর ক্ষোভ জানিয়ে ২৬ বিশিষ্ট নাগরিকের সঙ্গে বিবৃতি দেওয়াকে কেন্দ্র করে এমন দাবি উঠেছে।

এই বিবৃতিতে জুলাই বিপ্লবের চেতনাবিরোধী আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে তাঁকে অপসারণ চাওয়া হয়েছে। গত মঙ্গলবার থেকে দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলন হয়।

গত সেপ্টেম্বরে অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিয়োগ পান আবু নাসের বখতিয়ার। গত ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙার ঘটনায় ৭ ফেব্রুয়ারি একটি বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক বাড়িটি নির্মমভাবে ধূলিসাৎ করা হয়েছে। একটি সভ্য দেশের নাগরিক হিসেবে আমরা গভীরভাবে মর্মাহত, স্তম্ভিত ও লজ্জিত।

অগ্রণী ব্যাংকে সর্বস্তরের কর্মকর্তাদের ব্যানারে আন্দোলনকারীরা বলেন, জুলাই আন্দোলন দমনে নির্বিচারে গুলি করা হলেও তিনি কোনো বিবৃতি দেননি। বিগত সরকারের গুম-খুন, বিতর্কিত নির্বাচন, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে বাড়িতে উচ্ছেদের সময় তিনি নীরব ছিলেন। এখন হঠাৎ এ রকম বিবৃতি দিয়ে নিজেকে আওয়ামী লীগের দোসর প্রমাণ করেছেন।

জানতে চাইলে আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ সমকালকে বলেন, ব্যাংকের ভেতরে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় তাঁর উদ্যোগে কারণে অনেকে ক্ষুব্ধ। তারাই এ বিষয়টি সামনে এনে আন্দোলন করছে। তিনি বলেন, ব্যক্তিগতভাবে তিনি যে কোনো ভাঙচুরের বিপক্ষে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে আলোচনায় সম্মত ট্রাম্প-পুতিন

ইউক্রেনে যুদ্ধ নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে পুতিনের ফোনালাপের পর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ট্রাম্প নিজেই।

ট্রাম্প তার নিজের সামাজিক মাধ্যম ট্রুথে এক পোস্টে জানান, যে পুতিনের সঙ্গে তার একটি ‘দীর্ঘ ও অত্যন্ত ফলপ্রসূ ফোনালাপ’ হয়েছে। এটি ট্রাম্পের দায়িত্ব গ্রহণের পর তাদের মধ্যে প্রকাশ্যে জানা প্রথম ফোনালাপ। তিনি বলেন, ‘আলোচনায় ইউক্রেন, মধ্যপ্রাচ্য, জ্বালানি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ডলার ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ট্রাম্প লিখেছেন, আমরা দু’জনেই একমত হয়েছি যে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে যে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, তা বন্ধ করতে চাই। 

প্রেসিডেন্ট পুতিন এমনকি আমার শক্তিশালী প্রচারমূলক স্লোগান ‘কমন সেন্স’ ব্যবহার করেছেন। আমরা উভয়েই এতে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। কিন্তু প্রথমেই আমরা একসঙ্গে কাজ করতে এবং একে অপরের দেশ পরিদর্শন করতে সম্মত হয়েছি।

ট্রাম্প জানান, দুই নেতা তাদের দলকে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটানোর জন্য আলোচনা শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। এই যুদ্ধ প্রায় তিন বছর আগে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল।

তিনি বলেন, বুধবার তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গেও কথা বলবেন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, সিআইএ পরিচালক জন র‌্যাটক্লিফ, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ওয়াল্টজ এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ-কে আলোচনার নেতৃত্ব দিতে বলবেন।

ট্রাম্প বলেন, আর কোনো জীবনহানি হওয়া উচিত নয়। আমি প্রেসিডেন্ট পুতিনকে তার সময় ও প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ জানাই এবং গতকাল মুক্তি পাওয়া মার্ক ফোগেলের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। তিনি একজন অসাধারণ মানুষ, যাকে আমি গত রাতে হোয়াইট হাউসে ব্যক্তিগতভাবে স্বাগত জানিয়েছি।

এই ফোনালাপটি মার্ক ফোগেলের মুক্তির একদিন পরেই অনুষ্ঠিত হয়। ফোগেল একজন মার্কিন নাগরিক, যিনি রাশিয়ায় তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্দি ছিলেন। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র আলেকজান্ডার ভিনিক-কে মুক্তি দিতে পারে। যিনি গত বছর অর্থপাচার ষড়যন্ত্রের দায় স্বীকার করেছিলেন। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি পুতিনের সঙ্গে তার যোগাযোগের বিষয়ে খোলাসা করেননি।

ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারের সময় ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন যে, প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার আগেই তিনি এই যুদ্ধ বন্ধ করতে পারবেন। পুতিনের সঙ্গে এই ফোনালাপ ইঙ্গিত দিচ্ছে যে শান্তি আলোচনা আরও গুরুতর হতে পারে।

ট্রাম্প ও তার মিত্ররা ইউক্রেনে মার্কিন সহায়তা অব্যাহত রাখার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন এবং তিনি বলেছেন, যে ইউরোপের উচিত কিয়েভকে সমর্থনে আরও বড় ভূমিকা নেওয়া। পাশাপাশি, গত মাসে ট্রাম্প মস্কোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন। যদি তারা যুদ্ধবিরতির আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানায়।

এদিকে সহ-রাষ্ট্রপতি জেডি ভ্যান্স ইউরোপের মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দিতে যাচ্ছেন এবং সেখানে তিনি জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট ইউক্রেনে গিয়ে জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করবেন। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদে আরও বেশি প্রবেশাধিকার পেতে চায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ