অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে আন্দোলন
Published: 12th, February 2025 GMT
অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদের অপসারণ দাবিতে আন্দোলন করছেন ব্যাংকের কর্মকর্তারা। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙার পর ক্ষোভ জানিয়ে ২৬ বিশিষ্ট নাগরিকের সঙ্গে বিবৃতি দেওয়াকে কেন্দ্র করে এমন দাবি উঠেছে।
এই বিবৃতিতে জুলাই বিপ্লবের চেতনাবিরোধী আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে তাঁকে অপসারণ চাওয়া হয়েছে। গত মঙ্গলবার থেকে দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলন হয়।
গত সেপ্টেম্বরে অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিয়োগ পান আবু নাসের বখতিয়ার। গত ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙার ঘটনায় ৭ ফেব্রুয়ারি একটি বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক বাড়িটি নির্মমভাবে ধূলিসাৎ করা হয়েছে। একটি সভ্য দেশের নাগরিক হিসেবে আমরা গভীরভাবে মর্মাহত, স্তম্ভিত ও লজ্জিত।
অগ্রণী ব্যাংকে সর্বস্তরের কর্মকর্তাদের ব্যানারে আন্দোলনকারীরা বলেন, জুলাই আন্দোলন দমনে নির্বিচারে গুলি করা হলেও তিনি কোনো বিবৃতি দেননি। বিগত সরকারের গুম-খুন, বিতর্কিত নির্বাচন, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে বাড়িতে উচ্ছেদের সময় তিনি নীরব ছিলেন। এখন হঠাৎ এ রকম বিবৃতি দিয়ে নিজেকে আওয়ামী লীগের দোসর প্রমাণ করেছেন।
জানতে চাইলে আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ সমকালকে বলেন, ব্যাংকের ভেতরে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় তাঁর উদ্যোগে কারণে অনেকে ক্ষুব্ধ। তারাই এ বিষয়টি সামনে এনে আন্দোলন করছে। তিনি বলেন, ব্যক্তিগতভাবে তিনি যে কোনো ভাঙচুরের বিপক্ষে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বছরের প্রথম দিনেই সয়াবিন তেল কিনতে হবে ১৪ টাকা বেশিতে
বাংলা নববর্ষের আনন্দ শোভাযাত্রা শেষে আনন্দ নিয়ে ঘরে ফেরা হবে না সাধারণ মানুষের। বাজারে সয়াবিন তেল কিনতে গিয়েই হোঁচট খেতে হবে। প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৪ টাকা বাড়ানো হয়েছে। গতকাল রোববার (১৩ এপ্রিল) থেকেই সয়াবিন তেলের বর্ধিত দাম কার্যকর হয়েছে।
রোববার বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
এর আগে ভোজ্যতেল দাম বড়ানো নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ট্যারিফ কমিশন এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কয়েক দফা সভা হয়। তবে, সে সময় দাম বাড়ানোর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি তারা। সরকার এবং ভোজ্যতেল উৎপাদন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দফায় দফায় দর কষাকষির পর প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৪ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বর্ধিত নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল কিনতে হবে ১৮৯ টাকায়, যা আগে ছিল ১৭৫ টাকা।
নতুন ঘোষণা অনুসারে, পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের বোতলের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৯২২ টাকা, যা ছিল ৮৫২ টাকা। বোতলজাত তেলের পাশাপাশি খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি লিটার ১৬৯ টাকা, যা আগে ছিল ১৫৭ টাকা।
এর আগে গত ৯ ডিসেম্বর সর্বশেষ বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল। তখন লিটার প্রতি দাম নির্ধারণ করা হয় ১৭৫ টাকা।
ঈদুল ফিতরের আগে গত ২৭ মার্চ নতুন করে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেন মিলমালিকরা। তখন বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৮ টাকা বাড়াতে চেয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া, খোলা সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিলেন লিটারে ১৩ টাকা। ভোজ্যতেলের কর-সুবিধার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরদিন ১ এপ্রিল থেকে এ দর কার্যকরের ঘোষণা দেন ব্যবসায়ীরা। কারণ হিসেবে তারা জানান, কর সুবিধা বাতিল ও আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে তারা দাম বাড়াতে চান। ওই দিন দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তের কথা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনকে লিখিতভাবে জানিয়েছিল সংগঠনটি। এর পর থেকেই সরকার ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে কয়েক দফা সভা হয় এবং দর কষাকষি চলতে থাকে।
গত রমজানের আগে ভোজ্যতেলের দাম সহনীয় রাখতে সরকার ভোজ্যতেলের ওপর যে শুল্ক-কর ছাড় দিয়েছিল, তার মেয়াদ গত ৩১ মার্চ শেষ হওয়ায় দাম বাড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। ঈদের ছুটি শেষে গত সপ্তাহের শুরু থেকে দফায় দফায় আলোচনা হয়। তখন প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৯০ টাকার বেশি হবে নাকি কম, তা নিয়ে সরকার ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে আলোচনা চলে। গত সপ্তাহের রবি, মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার এ সভাগুলো হয়। সভায় দর কষাকষি হলেও তখন কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
এদিকে, কারখানার মালিকদের দাবির আগেই ভোজ্যতেলে আমদানি পর্যায়ে শুল্ক কর ছাড়ের মেয়াদ ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর সুপারিশ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। তবে, এনবিআর এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। ফলে নববর্ষের দিন বাজার করতে গিয়ে ক্রেতাদেও হোঁচট খেতে হবে সয়াবিন তেলের নতুন দাম শুনে।
ঢাকা/হাসনাত/রফিক