কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী এক সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। বুধবার রাত ৯টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে উপজেলার জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের ফকিরবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত জসিম উদ্দিন চৌধুরী ওরফে নিলয় (৪০) উপজেলার গুণবতী ইউনিয়নের দশবাহ গ্রামের প্রয়াত আবদুল খালেকের ছেলে। তিনি বেসরকারি এশিয়ান টেলিভিশনের নাঙ্গলকোট উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

চৌদ্দগ্রামের স্থানীয় সাংবাদিক এমদাদ উল্যাহ ও মিজানুর রহমান বলেন, উপজেলার ফকিরবাজার এলাকায় মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে জসিমকে একটি বাস ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়। তিনি বাড়িতে ফেরার পথে এ ঘটনার শিকার হন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জসিমকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত জসিমের ছোট দুটি সন্তান রয়েছে। তাঁর এমন মৃত্যুতে স্ত্রী, সন্তানসহ পরিবারের সদস্যরা দিশাহারা।

রাত ১১টার দিকে চৌদ্দগ্রামের মিয়ারবাজার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, অজ্ঞাত বাসের ধাক্কায় সাংবাদিক জসিম উদ্দিন আহত হন। লোকজন উদ্ধার করে হাসপাতালে আনার পথে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে নিহত ব্যক্তির লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যাওয়া বাসটি শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

পছন্দের ইজারাদার বেছে নিতে শিডিউল টেম্পারিং

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় খেয়াঘাট ইজারায় অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে দরপত্র গ্রহণ এবং সর্বোচ্চ দরদাতা নির্বাচনে দরপত্র শিডিউলে টেম্পারিং করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দরপত্রে অংশ নেওয়া এক ব্যক্তি। ইজারার দরপত্র নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুল হাসেম।

জানা যায়, গত ১২ জানুয়ারি সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বিভিন্ন নৌকাঘাট ইজারা সংক্রান্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়। গত বৃহস্পতিবার নৌকাঘাটগুলোর দরপত্র জমা এবং খোলার তারিখ ছিল। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি দরপত্র জমা হয়। এ কারণে শিডিউল অনুযায়ী দেওয়া সময়সীমা বেলা ৩টার পরিবর্তে বিকেল ৫টায় টেন্ডার বাক্স খোলা হয়। এতে ফাজিলপুর নৌকাঘাটের বিপরীতে চারটি শিডিউল জমা হয়। দরপত্রের খাম খুলে চারটি দরপত্রের মধ্যে মো. জবা মিয়ার দরপত্রকে সর্বোচ্চ দরদাতা ঘোষণা করা হয়। তবে জবা মিয়ার শিডিউলে টেম্পারিং করে মূল্য বাড়ানোর অভিযোগ করেছেন আরেক দরদাতা সাগর মিয়া। এই মর্মে একটি লিখিত অভিযোগও করেছেন তিনি। 

সাগর মিয়ার অভিযোগ, জবা মিয়ার দরপত্রে তিন কোটি ৯৫ হাজার টাকা দরপত্র মূল্য লেখা ছিল। সেখানে টেম্পারিং করে বাড়িয়ে তিন কোটি ৯৫ লাখ টাকা করে সর্বোচ্চ দরদাতা ঘোষণা করা হয়েছে। 

শিডিউলে টেম্পারিংয়ের বিষয়টি অবশ্য অস্বীকার করেছেন জবা মিয়া। তিনি বলেন, ‘আমি সঠিক পন্থায় সর্বোচ্চ দরদাতা নির্বাচিত হয়েছি। এখনও খেয়াঘাটের দখলনামা পাইনি।’ 

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কমকর্তা মো. আবুল হাসেম বলেন, দরপত্রে অংকে তিন কোটি ৯৫ লাখ টাকা লেখা ছিল। কিন্তু সংখ্যায় লেখার সময় ভুলবশত তিন কোটি ৯৫ হাজার লেখা হয়েছে। এটা কোনো ত্রুটি নয়। 

এদিকে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে এ নিয়ে একটি রিট পিটিশন হয়েছে। ওই পিটিশনের আদেশ অনুযায়ী ফাজিলপুর নৌকাঘাটের ইজারা কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য উচ্চ আদালতের আরেকটি নির্দেশনা রয়েছে।  

রিটকারী সুনামগঞ্জ জেলা নৌযান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ফাজিলপুর নৌকাঘাটে কখনও মাল ওঠানামা হয় না। নৌকাঘাটটি ইজারা না দেওয়ার জন্য বহুবার প্রশাসনের কাছে তারা আবেদন-নিবেদন করে ব্যর্থ হয়েছেন। শেষে উচ্চ আদালতে রিট করেছেন। শুনানি শেষে উচ্চ আদালত নৌকাঘাটের ইজারা কার্যক্রমে ছয় মাসের স্থগিতাদেশ প্রদান করেন। আদেশের অ্যাডভোকেট সার্টিফিকেট ৬ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে দাখিল করে প্রাপ্তি রসিদ সংগ্রহ করেছেন। উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে ফাজিলপুর নৌকাঘাটের শিডিউল গ্রহণ ও উন্মুক্ত করা হয় বলে দাবি করেন জাহাঙ্গীর আলম।  

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুল হাসেম এ প্রসঙ্গে বলেন, ফাজিলপুর নৌকাঘাট ইজারা কার্যক্রম বন্ধে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞার একটি অ্যাডভোকেট সার্টিফিকেট পেয়েছি। আপাতত কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। সর্বোচ্চ দরদাতা নির্ধারণ করে রাখা হয়েছে। হাইকোর্টে রিটের বিষয়টি সুরাহা হলে সর্বোচ্চ দরদাতাকে ঘাটের দখলনামা বুঝিয়ে দেওয়া হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ