রিজওয়ানের সঙ্গে সালমানেরও সেঞ্চুরি, রেকর্ড গড়ে জিতল পাকিস্তান
Published: 12th, February 2025 GMT
পাকিস্তান ইনিংসের ৪৩তম ওভারের প্রথম বল। উইয়ান মুল্ডারকে মিডউইকেট বাউন্ডারি দিয়ে ছক্কা মেরে ৯৪ থেকে ১০০ রানে পৌঁছালেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। তবে রিজওয়ানের চেয়ে বেশি উল্লসিত দেখা গেল অপর প্রান্তে থাকা সালমান আলীকে। অধিনায়কের সেঞ্চুরিতে সহ-অধিনায়কের সে কি উচ্ছ্বাস।
মুল্ডারের একই ওভারে পঞ্চম বল। ৯৯ রানে থাকা সালমান সোজাসুজি খেলেই দৌড় শুরু করলেন। কিন্তু সালমানের আগেই উদ্যাপন শুরু করে দিলেন রিজওয়ান। সহ-অধিনায়কের সেঞ্চুরিতে অধিনায়কের উচ্ছ্বাস।
আজ করাচির ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পাকিস্তানকে এমনই একের পর এক উচ্ছ্বাসে ভেসে যাওয়া উপলক্ষ এনে দিয়েছেন রিজওয়ান ও সালমান। গড়েছেন রেকর্ড জুটি। যা পাকিস্তানকে এনে দিয়েছে রেকর্ড জয়ও। দক্ষিণ আফ্রিকার তোলা ৩৫২ রান পাকিস্তান টপকে গেছে ৬ বল ৬ উইকেট হাতে রেখে দিয়ে। ওয়ানডেতে রান তাড়ায় এটি পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় জয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জওয় ন
এছাড়াও পড়ুন:
৩২ খাল দখল, ঝুঁকিতে মৎস্যনির্ভর অর্থনীতি
বিষখালী ও বলেশ্বর নদী বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কোলঘেঁষে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় মিলেছে। এ দুটি নদীর সঙ্গে যুক্ত ৩২টি খাল পাথরঘটার বিভিন্ন জনপদ দিয়ে এঁকেবেঁকে বয়ে গেছে। অসংখ্য মাছ ধরার ট্রলার এসব খাল দিয়ে নদী হয়ে সাগরে আসা-যাওয়া করে। দখলের কবলে খালগুলো দিন দিন সংকুচিত হওয়ায় ট্রলার
চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। খাল দখল অব্যাহত থাকায় হুমকির মুখে পড়েছে পাথরঘাটার মৎস্যনির্ভর অর্থনীতি। এতে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার খলিফারহাট, মুন্সীরহাট, বাদুরতলা, হরিণঘাটা পর্যটনকেন্দ্র এলাকার খালগুলো দখল ও ভরাট হয়ে যাচ্ছে। দখলের কারণে বর্ষা ও অতি জোয়ারে খাল উপচে লোকালয় প্লাবিত হয়। খাল সংকুচিত হওয়ায় বাদুরতলা বাজারে ট্রলার যাতায়াত বন্ধ হয়েছে। একই সংকট দেখা দিয়েছে খলিফারহাট খালে। এসব খালকে কেন্দ্র করে স্থানীয়ভাবে বড় বাজার গড়ে উঠেছিল। ট্রলার চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গ্রামীণ এ বাজারগুলো প্রাণ হারিয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, শহরের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত সাত কিলোমিটার দীর্ঘ ভাড়ানির খালটির এক প্রাপ্ত বিষখালী নদীতে ও অপর প্রান্ত বলেশ্বর নদীতে মিলেছে। খালটির মাঝ বরাবর মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র। এ খাল দিয়ে প্রতিদিন শত শত ট্রলার সাগরে আসা-যাওয়া করে। দখলবাজদের কবল থেকে এ খালটিও রেহাই পায়নি।
চরদোয়ানী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মাহফুল হাওলাদার জানান, এক সময় চরদোয়ানী বাজারের অনেক নামডাক ছিল। দখল ও নাব্য হারানোয় খাল দিয়ে ট্রলার চলাচল বন্ধ হওয়ায় বাজারটির আগের প্রাণচাঞ্চল্য নেই। প্রভাবশালীদের বরফকলের জেটি খালের অনেকখানি ভেতরে স্থাপন করা হয়েছে। এতে খালটি সরু হয়ে গেছে।
বরফকল মালিক পাথরঘাটার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এনামুল হোসাইন জানান, তিনি খাল দখল করেননি। এ অবস্থাতেই আগের মালিক খান বাবুলের কাছ থেকে কিনেছেন। খাল সংস্কার করলে নিজ উদ্যেগে স্থাপনা সরিয়ে নেবেন তিনি।
বরগুনা জেলা ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি দুলাল মাঝি বলেন, বলেশ্বর ও বিষখালী নদীর সঙ্গে যুক্ত ৩২ খালই হলো পাথরঘাটার প্রাণ। খালগুলোর ওপর নির্ভর করে বিভিন্ন এলাকায় মাছের আড়ত ব্যবসা গড়ে উঠেছিল। গ্রামীণ এ বাজারগুলো দিনরাত জমজমাট থাকত। দখলে ট্রলার চলাচল বন্ধ হওয়ায় এ বাজারগুলোতে আগের মতো জৌলুস নেই। তিনি জানান, উপজেলার প্রধান ভারানির খাল সংকুচিত হয়ে এমন হয়েছে যে, একটি ট্রলারের পাশ দিয়ে অপর ট্রলার অতিক্রম করতে পারে না। ট্রলার চলাচল বাধামুক্ত করা না হলে মাছ বোঝাই ট্রলার পাথরঘাটায় না এসে অন্যত্র চলে যাবে। এটা হলে পাথরঘাটার অর্থনীতি বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।
পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ফকির আলম প্রভাবশালীদের খালের জমি দখলে সহযোগিতার জন্য পাউবোর কার্যসহকারী মামুন হোসেনকে দায়ী করে বলেন, মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে খাল ও বেড়িবাঁধের ওপর স্থাপনা নির্মাণের অনুমতি দেন মামুন।
অভিযোগ অস্বীকার করে মামুন বলেন, তিনি চার বছর পাথরঘাটায় কর্মরত। আগে রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে দখলবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেননি। এখন খাল দখলে বাধা দিচ্ছেন।
পাউবোর বরগুনার নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিব হাসান বলেন, পাউবোর লোকবল কম হওয়ায় পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছেন না। কোথাও অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছেন। ইতোমধ্যে বেড়িবাঁধসংলগ্ন খালের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে।