‘নগদ’ প্রশাসকের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর
Published: 12th, February 2025 GMT
শেল কোম্পানির আড়ালে গড়ে তোলা মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস ‘নগদ’ এর প্রশাসক মুহম্মদ বদিউজ্জামান দিদারের ওপর হামলা করেছে একদল দুর্বৃত্ত।বুধবার বিকেলে বনানীর ১২ নম্বর রোডে তাঁর গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এদিন সকালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্মকর্তাদের কাছে নগদে ঘটে যাওয়া অনিয়ম-দুর্নীতির বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরেন তিনি। এতে ক্ষুব্ধ কোনো পক্ষ এ হামলা করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শেল কোম্পানির আড়ালে ২০১৮ সালে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় যাত্রা শুরু করে নগদ। এটিকে ডাক বিভাগের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান প্রচার করা হলেও পরে জানা যায় প্রতিষ্ঠানটির প্রকৃত মালিক আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ বিভিন্ন ব্যক্তি। প্রতিষ্ঠানটি অন্তত ৬৪৫ কোটি টাকার জাল ই-মানি তৈরি করে। এ ঘটনায় গত ৪ ফেব্রুয়ারি নগদের সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল ও সাবেক এমডি তানভীর এ মিশুকসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় মামলা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লাইসেন্স ছাড়াই কেবল অনাপত্তির ভিত্তিতে নগদ পরিচালিত হচ্ছিল। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর নগদের মালিকানা ও পরিচালনায় যুক্ত বেশির ভাগই পালিয়েছেন। গত ২১ আগস্ট কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালক মুহম্মদ বদিউজ্জামান দিদারকে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়। গত সেপ্টেম্বরে অর্থনীতিবিদ ড.
বদিউজ্জামান দিদার সমকালকে বলেন, নগদে অনিয়মের বিষয়ে বুধবার দুদক কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাঁর আলোচনা হয়। এতে কোনো পক্ষ ক্ষুব্ধ হয়ে এ হামলা করতে পারে। তিনি জানান, বনানী ১২ নম্বর রোডে পৌঁছাতেই চার যুবক তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে হামলা করে। কিছুদিন আগেও কয়েকজন একইভাবে হামলা করেছে। নগদের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বনানী থানাকে জানানো হবে।
নগদের বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে নাম রয়েছে– যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরে নিবন্ধিত কোম্পানি ব্লু হেভেন ভেঞ্চারস, অসিরিস ক্যাপিটাল পার্টনারস, জেন ফিনটেক, ফিনক্লুশন ভেঞ্জারস এবং ট্রুপে টেকনোলজিস। এসব বাংলাদেশিদের শেল কোম্পানি (নামমাত্র কোম্পানি) বলে জানতে পেরেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মালিকানা বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য চেয়ে গত ১৯ আগস্ট বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
তুচ্ছ ঘটনার জেরে এনসিপি–বিএনপির সংঘর্ষ, ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা
রাজধানীর রূপনগরে তুচ্ছ ঘটনার জেরে সংঘর্ষে জড়িয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। সোমবার রাতের এ ঘটনায় উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। পরে এনসিপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগে ২১ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় ৫০–৬০ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রূপনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোকাম্মেল হক সমকালকে বলেন, মিরপুরের বিইউবিটির এক ছাত্রীর সঙ্গে উত্তরার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অনিকের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। সম্প্রতি তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য তরুণী তার এক সহপাঠী আশিকের সহায়তা চান। এরপর সোমবার রাত ৮টার দিকে তরুণী রূপনগর আবাসিক এলাকার ১২ নম্বর সড়কের ঝিলপাড় এলাকায় তার প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে যান। ওই সময় আশিক সেখানে উপস্থিত হয়ে অনিককে গালমন্দ করেন। এ নিয়ে দুজন বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতিতে জড়ান।
ওসি আরও বলেন, আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে মারধরের কারণ জানতে চাইলে তাদের সঙ্গেও বিতণ্ডায় জড়ান আশিক। একপর্যায়ে রূপনগর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক টুটুল মিয়াসহ কয়েকজন সেখানে উপস্থিত হন। অন্যদিকে খবর পেয়ে আশিকের পক্ষের লোকজনও সেখানে যান। এ সময় ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে করা মামলার আসামিরা বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলসহ দলটির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী।
এদিকে এনসিপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগে শেখ মাহিন আহমেদ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।
এজাহারে তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের কুষ্টিয়ার কুমারখালীর কর্মী অনিককে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করার জন্য থানায় সংবাদ দেয়। ওই সময় টুটুল মিয়াসহ অজ্ঞাতপরিচয় ৫০–৬০ জন এসে ছাত্রলীগ কর্মীকে ছাড়ানোর চেষ্টা করেন। বিষয়টি নিয়ে ছাত্রদের সঙ্গে টুটুলসহ তার লোকজনের কথা কাটাকাটি ও মারপিটের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে আমি সেখানে উপস্থিত হই। তখন টুটুল আমাকে দেখে বলেন, এটাই সেই মাহিন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে। এরপর তারা লাঠিসোঁটা, ধারালো চাকু, রাম দা, হকিস্টিক, স্ট্যাম্প নিয়ে আমাকে চারদিক থেকে ঘিরে ধরে। মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে আমাকে এলোপাতাড়িভাবে মারধর করে। আমাকে রক্ষার জন্য অন্যরা এগিয়ে গেলে তাদেরও মারধর ও ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মারধর ও ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়ার পর দুই পক্ষই মিছিল নিয়ে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে থানার সামনে জড়ো হয়। এ নিয়ে দীর্ঘ সময় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করে।