টাঙ্গাইলে বন্ধ হলো লালন স্মরণোৎসব, আপত্তির অভিযোগ হেফাজতের বিরুদ্ধে
Published: 12th, February 2025 GMT
টাঙ্গাইলের মধুপুরে হেফাজতে ইসলামের আপত্তির মুখে বন্ধ হলো লালন স্মরণোৎসব। বুধবার রাত ৮টা থেকে মধুপুর উপজেলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় লালন স্মরণোৎসব অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। ফকির লালন সাঁইজির ১৩৪তম তিরোধান বর্ষ উদযাপন উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল মধুপুর লালন সংঘ ।
এর আগে একাধিকবার লালন স্মরণোৎসব বাধাহীনভাবে অনুষ্ঠিত হলেও এবার বাধার মুখে অনুষ্ঠান স্থগিত করে আয়োজক কমিটি। বিকেলে থেকে এলাকায় মাইকিং করে অনিবার্য কারণে অনুষ্ঠান স্থগিত করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন তারা।
অনুষ্ঠান উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধুপুরের নেতা সবুজ মিয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তিনি লেখেন, ‘২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর লালন সংঘ মধুপুর বাসস্ট্যান্ডে লালন স্মরণোৎসব নামে দুইবার বৃহৎ পরিসরে লালন সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করে। এ বছর লালন স্মরণোৎসবের নামে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রধান অতিথি করা হয়। আয়োজন পুরোদমেই চলছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই খবর আসে মধুপুর হেফাজতে ইসলাম অনুষ্ঠান নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে। হেফাজতের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের সঙ্গে ১১ ফেব্রুয়ারি বাদ আসর বসার ব্যবস্থা হয়। উপজেলা হেফাজতের সভাপতি মুফতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মাহমুদুল্লাহ, কওমি ওলামা পরিষদের সভাপতি মাওলানা সোলায়মান কাসেমীসহ তাদের ১০-১৫ জন উপস্থিত ছিলেন। লালন সংঘের সভাপতি ফরহাদ হোসেন তরফদার এবং অনুষ্ঠান উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে তিনি উপস্থিত ছিলেন। মধ্যস্থতায় ছিলেন মধুপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাকির হোসেন সরকার।’
ময়মনসিংহের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন চারুকলা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ফরহাদ তরফদার জানান, ইসলামিক দলগুলোর নেতৃবৃন্দ তাদের জানিয়েছেন, লালনের মতাদর্শ নাজায়েজ, কুফরি বা শিরক। তারা এই ভ্রান্ত মতাদর্শ মধুপুরে প্রচার করতে দেবেন না। লালনের মতাদর্শ নিয়ে কোনো আলোচনা ইতোপূর্বে হয়নি, এবারও হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিলেও তারা মানেননি। মধুপুরের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যেন অবনতি না হয়, সে জন্য অনুষ্ঠান স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। যারা অনুষ্ঠানের আয়োজনে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছেন এবং যারা এই অনুষ্ঠান উপভোগের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন, তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছে আয়োজক কমিটি।
এ বিষয়ে হেফাজতে ইসলাম মধুপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক মাহমুদউল্লাহ বাধা দেওয়ার কথা স্বীকার করে সাংবাদিকদের জানান, ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে অনুষ্ঠান করতে মানা করা হয়েছে।
কওমি ওলামা পরিষদ মধুপুর শাখার সভাপতি সোলেমান কাসেমীর বক্তব্য নিতে বুধবার তাঁর মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলে বন্ধ পাওয়া গেছে।
মধুপুর থানার ওসি এমরানুল কবির ছুটিতে ছিলেন জানিয়ে বলেন, বুধবার বিকেলে এসে শুনেছি ইসলামী দলগুলো অনুষ্ঠান করতে বাধা দিয়েছে।
মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর্জা জুবায়ের হোসেন জানান, দু’পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে অনুষ্ঠান স্থগিত হয়েছে শুনেছি। কারও বাধা দেওয়ার বিষয়ে অবগত নন বলে জানান তিনি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
চুয়াডাঙ্গায় বাসচাপায় ভ্যানচালকসহ নিহত ২
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় যাত্রীবাহী বাসচাপায় ভ্যানচালকসহ দুজন নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ মহাসড়কের নয়মাইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত দুজন হলেন সদর উপজেলার কুতুবপুর গ্রামের বাসিন্দা ভ্যানচালক আবদুর রাজ্জাক (৬৫) এবং মোহাম্মদজমা গ্রামের চাল ব্যবসায়ী সরোয়ার হোসেন (৭০)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সকালে মোহাম্মদজমা গ্রাম থেকে সরোয়ার হোসেন চালের বস্তা নিয়ে ব্যাটারিচালিত ভ্যানে সরোজগঞ্জ হাটে যাচ্ছিলেন। সিন্দুরিয়া গ্রামের একটি গ্রামীণ সড়ক দিয়ে এসে নয়মাইল এলাকায় মহাসড়কে ওঠার সময় চুয়াডাঙ্গা থেকে ছেড়ে আসা ঝিনাইদহগামী একটি যাত্রীবাহী বাস ভ্যানটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে ভ্যানচালক ও যাত্রী নিহত হন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিন্দুরিয়া পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে নিহত ব্যক্তিদের লাশ উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠান।
চুয়াডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম সরকার বলেন, বাসের চাপায় ভ্যানটি দুমড়েমুচড়ে যায় এবং নিহত ব্যক্তিদের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে। তাঁদের শনাক্ত করতে সময় লেগেছে।