জাবির ভর্তি পরীক্ষার দায়িত্বে স্কুলের শিক্ষক
Published: 12th, February 2025 GMT
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ২০২৪-২৫ সেশনের ভর্তি পরীক্ষায় কক্ষ পরিদর্শক হিসেবে কলতান বিদ্যানিকেতনের শিক্ষকদের দায়িত্ব পালন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ স্কুলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মহিলা ক্লাব দ্বারা পরিচালিত হয় বলে জানা গেছে।
গত রবিবার (৯ ফ্রেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হওয়া ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম এসব শিক্ষকদের দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছে। বিগত বছরগুলোতে ভর্তি অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় এমন কোন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের পরিদর্শক থাকার নজির নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় মহিলা ক্লাব দ্বারা পরিচালিত হয় কলতান বিদ্যানিকেতন। কলতান বিদ্যানিকেতনের সঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন সম্পর্ক নেই। এর নিয়োগ প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে বেতন-ভাতা কোনোকিছুর সঙ্গেই বিশ্ববিদ্যালয় যুক্ত নয়। এটা পুরোপুরি মহিলা ক্লাব নিয়ন্ত্রিত। পদাধিকারবলে এর প্রধান হন উপাচার্যের স্ত্রী।
অভিযোগে জানা গেছে, কলতান বিদ্যানিকেতনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা–কর্মচারীর সুপারিশে তাদের স্ত্রীরা চাকরি করে থাকেন। তাদের ভর্তি পরীক্ষাকেন্দ্রীক আয়ের বিশেষ সুবিধা দিতে এ ধরনের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ডেপুটি রেজিস্ট্রার সৈয়দ মোহাম্মদ আলি রেজা বলেন, “আমাদের উদ্দেশ্য ছিল শিফট কমানো। সেজন্য তাদের একদিনের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এ দায়িত্বের উপযোগী করা হয়।
নিকটস্থ কলেজ থেকে শিক্ষক নেওয়ার সুযোগ থাকলেও না করার বিষয়ে তিনি বলেন, “যেহেতু কলতান আমাদের নিজস্ব ও বিশ্বস্ত, সেহেতু তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”
আরো পরিদর্শক নিয়োগের প্রয়োজন হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস কর্মচারীদের পরিদর্শক করা হবে কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে উপাচার্য মহোদয় সিদ্ধান্ত নেবেন।”
ঢাকা/আহসান/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে কোটিপতি আমানতকারী বাড়ছে
দৈনন্দিন জীবনের ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে এক শ্রেণির মানুষ। অপরদিকে বাড়ছে পুঁজিপতিদের আয়। তিন মাসে ব্যাংকে বেড়েছে ৪ হাজার ৯৫৪টি কোটিপতি আমাতনকারীর সংখ্যা। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা ১ লাখ ২২ হাজার ছাড়িয়েছে। ওই বছর সেপ্টেম্বরে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১৭ হাজারের বেশি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ গত ডিসেম্বর পর্যন্ত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এমন চিত্র উঠে এসেছে।
তথ্যমতে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংক খাতে মোট আমানতকারীরা সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ কোটি ৩২ লাখ ৪৭ হাজার ৫৩২টি। ওই সময় পর্যন্ত এসব আমানতকারীদের মোট আমানতের স্থিতি ১৮ লাখ ৮৩ হাজার ৭১১ কোটি টাকা। ওই বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে মোট আমানতকারীরা সংখ্যা ছিল ১৬ কোটি ২০ লাখ ২৮ হাজার ২৫৫টি। এসব হিসাবে জমা ছিল ১৮ লাখ ২৫ হাজার ৩৩ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে ব্যাংক খাতের আমানতকারীদের হিসাবের সংখ্যা বেড়েছে ১২ লাখ ১৯ হাজার ২৭৭টি। এসব হিসাবে আমানতের পরিমাণ বেড়েছে ৪৫ হাজার ৬২৮ কোটি টাকা।
তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে কোটিপতি আমানতকারীদের হিসাব বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ২২ হাজারের বেশি। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে কোটিপতি আমানতকারীদের হিসাব ছিল এক লাখ ১৬ হাজার ৯০৮টিতে। ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কোটিপতি আমানতকারীদের হিসাব সংখ্যা ছিল এক লাখ ৯ হাজার ৯৪৬টি। ২০২১ সালে ছিল এক লাখ ১৯৭৬টিতে। ২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে কোটি টাকা আমানতকারীর হিসাবের সংখ্যা ছিল ৯৩ হাজার ৮৯০টি। এভাবে বাড়ছে কোটিপতি আমানতকারীর হিসাব।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি আমানতকারী ছিল ৫ জন, ১৯৭৫ সালে তা ৪৭ জনে উন্নীত হয়। ১৯৮০ সালে কোটিপতিদের হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ৯৮টি। এরপর ১৯৯০ সালে ৯৪৩টি, ১৯৯৬ সালে ২ হাজার ৫৯৪ জন, ২০০১ সালে ৫ হাজার ১৬২টি, ২০০৬ সালে ৮ হাজার ৮৮৭টি এবং ২০০৮ সালে ছিল ১৯ হাজার ১৬৩টি।
এক শ্রেণির মানুষের অর্থ বেড়ে যাওয়া দেশে বৈষম্য বাড়ার বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আর্থিক খাতের সংস্কার চলমান রয়েছে। সরকার বিদেশে পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ দেশে ফিরেয়ে আনতে চেষ্টা করছে। অপরদিকে ব্যাংকগুলোতে সুদের হার বেশি থাকায় আমানতকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে আমানত রাখছে। ফলে হিসাবগুলোতে টাকার অঙ্ক বাড়ছে। বাড়ছে কোটিপতি হিসাবধারী আমানতকারীর সংখ্যাও।
ঢাকা/এনএফ/এনএইচ