ঢাকায় তিনটি গোপন বন্দিশালা পরিদর্শন করলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, যা ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিতি পেয়েছে। তিনি দেখেছেন, কীভাবে সেখানে মানুষকে বন্দী করে রাখা হতো, করা হতো নির্যাতন। তাঁর সঙ্গে যাওয়া এসব বন্দিশালায় আটক কয়েকজন ভুক্তভোগীর বন্দিজীবনের কষ্টের কথাও শুনেছেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে প্রকাশিত ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, এসব বন্দিশালায় রয়েছে খুপরি ঘর, যেখানে আলো-বাতাস পৌঁছাতে পারে না বললেই চলে। রয়েছে নির্যাতনের জন্য ব্যবহৃত চেয়ার। বন্দী থাকা মানুষেরা দেয়ালে যা লিখেছিলেন, তা-ও রয়েছে।

পরিদর্শন শেষে অধ্যাপক ইউনূস গোপন বন্দিশালাকে বীভৎসতা ও নৃশংসতার উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘আইয়ামে জাহেলিয়া বলে একটা কথা আছে না, গত সরকার আইয়ামে জাহেলিয়া প্রতিষ্ঠা করে গেছে। এটা (গোপন বন্দিশালা) তার একটি নমুনা।’

ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গোপন বন্দিশালায় বিনা বিচারে মানুষকে আটকে রাখা হতো। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অনেকে বন্দিশালা থেকে মুক্তি পান। গুমের ঘটনা তদন্তে অন্তর্বর্তী সরকার গত ২৭ আগস্ট গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন গঠন করে। সেই কমিশনের অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, র‍্যাব, ডিজিএফআই, ডিবি, সিটিটিসি, সিআইডি, পুলিশসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার বিরুদ্ধে কমিশনে ১ হাজার ৬৭৬টি অভিযোগ জমা পড়ে। তার মধ্যে ৭৫৮ জনের অভিযোগ যাচাই-বাছাই করেছে কমিশন। এতে দেখা গেছে, ৭৩ শতাংশ ভুক্তভোগী ফিরে এসেছেন। বাকি ২৭ শতাংশ (অন্তত ২০৪ জন ব্যক্তি) নিখোঁজ।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আটটির বেশি গোপন বন্দিশালা শনাক্ত করেছে কমিশন। তাদের ভাষ্য, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই), র‌্যাব ও পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের মতো সংস্থাগুলো এসব গোপন বন্দিশালা পরিচালনা করত।

গোপন বন্দিশালায় থাকা নির্যাতনে ব্যবহৃত চেয়ার দেখছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসসহ অন্যরা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বন দ শ ল য় সরক র র

এছাড়াও পড়ুন:

নওগাঁয় বর্ণিল আয়োজনে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা

‘মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা, অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা’ স্লোগানে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে নওগাঁয় বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার সকালে জেলা প্রশাসন আয়োজিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল ৮টায় শহরের এটিম মাঠ থেকে বের করা হয় আনন্দ শোভাযাত্রা।

জেলা প্রশাসক আব্দুল আউয়ালের নেতৃত্বে শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে নববর্ষের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও দিনব্যাপী সেখানে আয়োজন করা হয়েছে বর্ষবরণ মেলার।

শোভাযাত্রায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি, ঘোড়া, পালকি, মাটির তৈরি বাসনসহ বিভিন্ন বর্ণের বেলুন ফেস্টুন, মাথাল শোভাযাত্রাকে বর্ণিল করে তোলে। 

এ সময় পুলিশ সুপার সাফিউল সারোয়ারসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

এদিকে জেলা বিএনপির উদ্যোগে শহরের নওজোয়ান মাঠ থেকে একটি আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় সেখানে গিয় শেষ হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ